কেউ ছাত্র, কেউ হোটেল কর্মী, কেউ নিরাপত্তারক্ষী, কেউ বা কারখানায় কাজ করেন। সরকারি আশ্বাসে ভরসা রেখে ওঁরা চেপে বসলেন বেঙ্গালুরুগামী বিশেষ ট্রেনে। আজ বেলা আড়াইটে নাগাদ গুয়াহাটি থেকে বেঙ্গালুরুর দিকে যাত্রা শুরু করল বিশেষ ট্রেন। তবে সরকারি প্রচার সত্ত্বেও মাত্র শ’খানেক ‘পালিয়ে আসা’ যাত্রী এই ট্রেনে কর্মস্থলে ফিরছেন। প্রশাসনের মতে, ধীরে ধীরে সংখ্যাটা বাড়বে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন কোনও সংঘর্ষ হয়নি বড়োভূমি বা নামনি অসমে।
এ দিন বেঙ্গালুরুগামী বিশেষ ট্রেনটি সওয়া এক ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ে। ট্রেনে বসা ধ্রুব কোঁয়র আর তাঁর বন্ধুরা বেঙ্গালুরুর কারখানায় কাজ করে মাসে ৮ হাজার টাকা বেতন পেতেন। বলছিলেন, “কলেজ অবধি পৌঁছইনি। রাজ্যে কাজের আকাল। বছর দুয়েক আগে বন্ধুদের কাছে শুনে বেঙ্গালুরু চলে যাই। কাজও পেয়ে গেলাম। মাস মাইনের পাশাপাশি ওভার টাইম করলে মাইনে ১০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। কিন্তু অসমীয়দের মেরে ফেলার গুজবটা এমনভাবে ছড়ায় যে প্রাণভয়ে এত ভাল কাজ ফেলে পালিয়ে এসেছিলাম। কর্নাটকের মন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, ফিরে গেলে ফের কাজ পাব। মাইনে কাটবে না। সেই ভরসায় ফিরে যাচ্ছি।” |
ধ্রুবর মতোই অনেকে রাজ্য ছেড়ে কাজের আশায় দক্ষিণে পাড়ি জমিয়েছিলেন। অনেকেরই গ্রামে চাষের জমি রয়েছে। কিন্তু চাষবাস করে দিন চলে না। তাই মাস মাইনের চাকরিই তাঁদের বেশি টানে। প্রভাত বসুমাতারি কেবল নিজেই ফিরছেন না, এ বার সঙ্গে দাদাকেও নিয়ে যাচ্ছেন। ভরসা কোথাও কাজ মিলে যাবেই। স্টেশনে ট্রেনের যাত্রীদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন মন্ত্রী রকিবুল হুসেন ও নীলমণিসেন ডেকা। রকিবুল বলেন, “৫ সেপ্টেম্বর আরও একটি বিশেষ ট্রেন বেঙ্গালুরু যাচ্ছে। সেই ট্রেনে দরিদ্রদের জন্য বিনামূল্যে বা কম দামে ফেরার ব্যবস্থা করা যায় কিনা সরকার তা খতিয়ে দেখবে।” উত্তর-পূর্ব রেল সূত্রে খবর, বিশেষ ট্রেনের ১৭টি স্লিপার কোচে মোট ১২৯৮টি টিকিট বিক্রি হয়েছে। অসংরক্ষিত কামরায় ওঠেন ১২০ জন। তবে সকলে অবশ্য বেঙ্গালুরু যাচ্ছেন না। পালিয়ে এসেছেন যাঁরা তেমন বেঙ্গালুরুমুখী যাত্রীর সংখ্যা মেরেকেটে শ’খানেক। বাকিরা হয় মাঝপথে নামবেন। না হলে বিশেষ ট্রেনের সুযোগ ছাড়েননি। ডিএসপি নৌশাদ আলির নেতৃত্বে ২০ জন আরপিএফ এবং ৯ জন জিআরপি বিশেষ ট্রেনের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন। |