দিন-দুপুরে বাড়ির মধ্যে ঢুকে ছিনতাই সল্টলেকে |
শনিবার সকালে সল্টলেকের অভিজাত পাড়ায় বাড়ির ভিতরে ঢুকে ছিনতাই।
বেলা সাড়ে ন’টায় মন্দিরে পুজো দিতে যাবেন বলে নিশ্চিন্তে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে গাড়িতে উঠবেন বলে অপেক্ষা করছিলেন এজে ব্লকের বাসিন্দা ৭৭ বছরের ইলা দে। গাড়ি ‘স্টার্ট’ নিতে সমস্যা হওয়ায় এক বার গাড়িতে উঠেও নেমে যান তিনি। ধীর পায়ে সবে বাড়ির মধ্যে ঢুকেছিলেন। এমন সময়ে এক লুঠেরা এসে তাঁর গলার হার ছিঁড়ে নিয়ে পালায়।
ফাঁকা রাস্তায় প্রাতর্ভ্রমণের সময়ে বা সন্ধ্যার অন্ধকার পথে-ঘাটে এমন ছিনতাইয়ের কথা শোনা যায়। কিন্তু দিনের বেলা সল্টলেকে বাড়ির মধ্যে ঢুকে এমন ছিনতাই প্রমাণ করে, দুষ্কৃতীরা ক্রমশই আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে। ঘটনা ঘটার কিছু ক্ষণের মধ্যেই পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হলেও রাত পর্যন্ত দুষ্কৃতীর হদিস পায়নি পুলিশ।
ইলাদেবীর পুত্র দীপঙ্কর দে-র কথায়, “আমরা ১২ বছর সল্টলেকে আছি। লুঠ-ছিনতাইয়ের ঘটনার কথা আগেও শুনেছি। কিন্তু দিনের এই সময়ে বাড়ির চৌকাঠ পেরিয়ে ভিতরে ঢুকে এ ভাবে ছিনতাই হবে, সত্যিই ভাবিনি!” দীপঙ্করবাবু জানিয়েছেন, পায়ে অস্ত্রোপচারের পরে তাঁর মা আস্তে আস্তে হাঁটেন। এ দিন শুধু ইলাদেবী একা নন, তাঁদের সপরিবার মন্দিরে পুজো দিতে যাওয়ার ছিল। গাড়ি স্টার্ট নিতে সমস্যা হচ্ছে দেখে সকলেই নেমে বাড়ির ভিতরে ঢুকে পড়েছিলেন। দীপঙ্করবাবুর কথায়, “আমি দোতলায় উঠে যাচ্ছিলাম। মা আস্তে হাঁটেন বলেই তখন সবে ঢুকেছেন। মায়ের চিৎকার শুনেই নীচে নেমে আসি।” ঘটনার আকস্মিকতা ও আতঙ্কে ইলাদেবী কেঁদে ফেলেন বলে জানিয়েছেন তাঁর পুত্র।
দীপঙ্করবাবু বলেন, “আমরা নামতে নামতে ছেলেটা পালিয়েছে। তখন মাকে সামলাব, না চোর কোন দিকে পালাল দেখব, বুঝতে পারছিলাম না।” গত ১৮ থেকে ২৫ অগস্ট পর্যন্ত এক সপ্তাহে সল্টলেকে ন’টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ছিনতাইকারী ধরতে রাস্তায় পুলিশের বিশেষ টহলের সময়েই বি জে মার্কেটের সামনে এক মহিলার হার ছিনতাই হয়। গত রবিবারেও জিসি আইল্যন্ডের সামনে এক মহিলার মোবাইল ছিনতাই হয়। ওই মহিলা অবশ্য দুষ্কৃতীকে হাতে-নাতে ধরে ফেলেন।
এই সব ক’টি ঘটনাই রাস্তায় ঘটেছে। দিনের বেলা বাড়ির ভিতরে ঢুকে এ ভাবে ছিনতাই বিরল। সল্টলেকের আইন-শৃঙ্খলার উন্নতির জন্য জেলা পুলিশ থেকে আলাদা করে বিধাননগর কমিশনারেট তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। তাতে কাজের কাজ কতটা হয়েছে, এ দিনের ঘটনা সেই প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছে। বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ কর্তারা কার্যত মুখে কুলুপ এঁটেছেন। ডিসি (সদর) সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু বলেন, “ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” |