মিঠে-কড়া এনবিএসটিসি
ভাল কাজে পুরস্কৃত ৪, শাস্তির মুখে ২৯
ভাল কাজের জন্য ‘পুরস্কার’। কাজে ফাঁকির জন্য ‘শাস্তি’। ওই দুই পদক্ষেপকে হাতিয়ার করে কর্মসংস্কৃতি ফেরাতে তৎপর হয়ে উঠেছেন উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম কর্তৃপক্ষ। ওই ঘটনায় নিগমের কর্মী ও আধিকারিক মহলে রীতিমতো আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। পুরস্কার ঘোষণা নিয়ে কোনও আন্দোলন-বিক্ষোভ না হলেও শাস্তিমূলক পদক্ষেপ ঘিরে অবশ্য তুমুল হইচই চলছে। এমনকী, বৃহস্পতিবার রাতে ওই শাস্তির সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে নিগমের কোচবিহার ডিভিশনের ম্যানেজার সহ তিন আধিকারিককে প্রায় ১০ ঘন্টা ঘেরাও করে রাখার অভিযোগও উঠেছে। তার পরেও নিগম কর্তারা অবশ্য সাফ জানিয়েছেন, ফাঁকিবাজদের দাবি মেনে নেওয়ার ব্যাপারই নেই। এনবিএসটিসির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর সি মুরুগণ বলেন, “ভাল কাজের জন্য ৪ জনকে আমরা নগদ টাকা ও শংসাপত্র দিয়ে উৎসাহিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অন্যদিকে কাজে ফাঁকির জন্য ও বিধি ভেঙে গরহাজির থাকায় চিহ্নিত ২৯ জনের তালিকা তৈরি হয়েছে। তাঁদের চুক্তি নবিকরণ না-করার কথাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সংস্থার স্বার্থেই ওই পদক্ষেপ করতে হয়েছে। পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের মধ্যে রয়েছেন রায়গঞ্জের দেবাশিস সিংহ, বালুরঘাটের বাবন সরকার ও ভাস্কর ঘোষাল, শিলিগুড়ির চিন্ময় চন্দ।” পাশাপাশি, এমডি জানান, ভাস্কর ঘোষাল ওই তিন মাসে মাত্র একদিন ‘ক্যাজুয়াল লিভ’ নেন। অন্যরা সকলেই কিলোমিটার প্রতি ভাল আয় করেছেন। তাঁদের নগদ ৫০০ টাকা ও শংসাপত্র দেওয়া হবে। বলে এমডি জানান। এনবিএসটিসি সূত্রেই জানা গিয়েছে, মৃত কর্মীর পরিবারের পোষ্যদের মধ্যে অন্তত ৩০০ জনকে ২০০৯ সালে নিগমের চুক্তি ভিত্তিক বাস কন্ডাক্টর হিসাবে নিয়োগ করা হয়। প্রথমে তাঁদের এক বছরের জন্য চুক্তির ভিত্তিতে নেওয়া হয়। পরে তা ফের নবীকরণ হয়। নতুন সরকার ক্ষমতায় আসবার পর নথিপত্র ঘেঁটে সংস্থার এক আধিকারিকের দাবি, ওই নিয়োগের ক্ষেত্রে অর্থ দফতরের অনুমতি নেওয়া হয়নি। ফলে তাঁদের তিন মাস করে নবিকরণ করানো হচ্ছিল। তার পরেই ওই কর্মীদের একাংশের কাজের মান নিয়ে বিভিন্ন মহলে অভিযোগ ওঠে। সম্প্রতি ওই অভিযোগ খতিয়ে দেখা হয়। পাশাপাশি, সকলের কাজের গতিক যাচাই করার সিদ্ধান্ত নেন নিগম কর্তৃপক্ষ। চলতি বছরের এপ্রিল, মে ও জুন মাসে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের মধ্যে কে কতদিন নিয়ম মেনে ছুটি নিয়েছেন, কত দিন বিধি ভেঙে কর্তৃপক্ষ কে না-জানিয়ে গরহাজির ছিলেন তার খুঁটিনাটি তথ্য চেয়ে পাঠান নিগম কর্তারা। সেই সঙ্গে দেখা হয় সংশ্লিষ্ট কন্ডাক্টরদের দায়িত্বে থাকা রুটগুলিতে বাস চালিয়ে প্রতি কিলোমিটারে কত টাকা আয় হয়েছে তার হিসেবও। তার পরেই ২৯ জনের চুক্তি নবিকরণ না করানোর সিদ্ধান্ত হয়। সেই সঙ্গে ৪ জনকে পুরস্কার ও শংসাপত্র দেওয়ার ব্যাপারে তালিকাও করা হয়। নিগমের কয়েকজন আধিকারিক জানান, মৃত কর্মীর পোষ্য হিসাবে যাঁদের চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ করা হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে কয়েক জন এপ্রিল-জুন মাসে কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে একদিনও কাজে আসেননি। আবার একমাস, দেড়মাস গরহাজির বা ছুটি নিয়েছিলেন এমন কিছু কর্মীও রয়েছেন। বাকিরা কিলোমিটার প্রতি আয় এতই কম করেছেন, যে নবিকরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রতি কিলোমিটারে সংস্থার বাস চালাতে গড়ে ৩৭ টাকা খরচ হয়। শাস্তি তালিকায় থাকা কন্ডাক্টরদের সকলের ওই আয় যথেষ্ট কম। অনেকের ক্ষেত্রেই তা ৬-১০ টাকার মধ্যে। ওই সব কোনও যুক্তিই মানতে চাননি নবিকরণ না হওয়া কর্মীরা। ওই কর্মীদের তরফে মলয় বর্মন বলেন, “কিছু লোক নিগমের কর্তাদের ভুল তথ্য দিয়েছেন। আমার মতো অনেকের রুটে কাউন্টার বুকিংয়ের আয় যোগ করা হয়নি। সে জন্য কিলোমিটার প্রতি আয় কম মনে হচ্ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.