|
|
|
|
|
|
রূপের কাঠিটা খুঁজে পেলেন?
ত্বকের নিয়মিত পরিচর্যা করলেই ফুলের মতো সুন্দর থাকবেন।
বলিরেখা, কালো ছোপ
থেকেও মুক্তি মিলবে।
সৌন্দর্যের সেই
সযত্ন রক্ষণাবেক্ষণের গল্প শোনালেন রূপবিশেষজ্ঞ রুবি বিশ্বাস |
|
ত্বক সংক্রান্ত তক্কাতক্কির কোনও শেষ নেই। আগে নিয়ম ছিল মেয়ে দেখতে আসার দশ-পনেরো দিন আগে থেকে একটু হলুদ, একটু সর মাখলেই ছেলের বাড়ির লোকের পছন্দ হয়ে যাবে। সারা জীবনের সৌন্দর্য নিয়ে তখন কোনও মাথাব্যথা ছিল না। কিন্তু এখন সকলের ইচ্ছে, ‘হা ঈশ্বর, যত দিন বাঁচব, তত দিন আমি যেন রেখা হয়ে বাঁচি’। সুতরাং, তার জন্য পরিশ্রম, টাকা খরচা, বিউটিশিয়ানদের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা, সবই নিয়মমাফিক করে যেতে হবে, তবেই জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আপনার ত্বক ঝলমল ঝলমল করবে।
একটি শিশু যখন জন্মায়, তখন তার ত্বক ফুলের পাপড়ির মতো থাকে। ঈশ্বর আমাদের সব থেকে ভাল উপহারটিই দিয়ে পাঠান, কিন্তু এটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব, অর্থাৎ মালির কাজটি আমাদের ভাল ভাবে পালন করতে হবে। বয়ঃসন্ধিকাল থেকে ত্বকে যে সমস্যা হয়, সেগুলিকে সচেতন ভাবে ঠিক করতে হবে, এ তো সকলেরই হয়, এই মনে করে হাল ছেড়ে দিলে হবে না। মেয়েরা এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি সচেতন। রূপচর্চার জন্য দিনে কিছুটা করে সময় দেন। দিনে দশ মিনিট সময় রূপচর্চার জন্য বরাদ্দ করলে সারা জীবন আপনি এর ফল পাবেন। ত্বক কখনও বিশ্বাসঘাতকতা করে না। আপনি যদি যত্ন করেন, সেও আপনাকে দেখবে। অর্থাৎ, তার সুফল আপনার সুন্দর চেহারায় পাবেনই।
|
|
ক্লেনজিং যদি ঠিক ভাবে এবং নিয়মিত করা যায়, সারা জীবন আপনার ত্বক চকচক করবে। ত্বকের সব থেকে ওপরের কোষটিতে ময়লা জমে এবং সেই ময়লা সব থেকে জমাট হয়। এটিকে নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে, তবেই ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বজায় থাকবে, ত্বক শ্বাস নিতে পারবে এবং রক্ত চলাচলে সুবিধা হবে। ত্বকের ধরন অনুযায়ী ক্লেনজিং, টোনিং, ময়েশ্চারাইজিং এবং সানস্ক্রিনের ব্যবহার আপনাকে করতেই হবে। অয়েলি ত্বক মানে ময়েশ্চারাইজিং দরকার নেই, এটি ভুল ধারণা। তখন ওয়াটার বেসড ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। মাসে একটি কোনও ভাল জায়গা থেকে ফেশিয়াল অত্যন্ত জরুরি। অনেকের ধারণা আছে, যে দিন ফেশিয়াল করা হয়, তার থেকে দু’দিন বাদে ত্বকে ঔজ্জ্বল্য আসে, সেটিও ভুল। ফেশিয়ালের সঙ্গে সঙ্গেই ত্বক উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।
শিক্ষার্থী বা অপেশাদারের হাতে নিজের ত্বককে ছেড়ে দেবেন না, ভাল কোনও জায়গা থেকে ফেশিয়াল করানোর চেষ্টা করবেন। |
রিংকল ট্রিটমেন্ট |
প্রকৃতির অমোঘ নিয়ম, দূষণ, অতিরিক্ত সূর্যতাপে ঘোরাফেরা, রাত্রি জাগরণ, পার্টি এবং অনিয়মিত জীবনযাপন এই সব কারণ ত্বকে বলিরেখার পথকে সুগম করে। যে কোনও ঘরোয়া পদ্ধতির তুলনায় ক্লিনিকালি বলিরেখার চিকিৎসা অনেক বেশি ফলপ্রসূ। মেশিনের সাহায্যে ওষুধ বা কোনও খনিজ আমরা সেই জায়গাটিতে পৌঁছে দিই, সুতরাং এই পদ্ধতি অনেক বেশি কার্যকর। ট্রিটমেন্টটির নাম ‘হোয়াইপার ভেনাম’। প্রথম ধাপে সমস্ত পেশিগুলোকে শিথিল করে এবং পরের ধাপে যে টিস্যুগুলিতে ভাঁজ আছে, সেগুলিকে ভরাট করে যন্ত্রের মাধ্যমে ওষুধটি উদ্দীষ্ট জায়গায় পৌঁছয়। ফলে কাজটি অনেক দ্রুত এবং ভাল হয়। অর্থাৎ, আপনার চাহিদা অনুযায়ী ত্বক থেকে বয়সের ছাপ উধাও হয়ে যাবে। চিকিৎসাটি চলে তিন মাস পর্যন্ত। তবে, যার যে ধরনের বলিরেখা আছে, সেটির ওপর নির্ভর করে ট্রিটমেন্টের সময়কাল। অর্থাৎ, কারও ক্ষেত্রে পনেরো দিনে একটি, মাসে তিনটি (যাদের বেশি আছে), এই ভাবে চলতে থাকে। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মুখের ত্বকে যে রক্তপ্রবাহ শিরা থাকে, সেগুলিতে রক্তপ্রবাহ একটু কমে আসে, ফলে মুখ ফ্যাকাশে লাগে। এই ট্রিটমেন্টের ফলে রক্ত সঞ্চালন ভাল হয় এবং মুখের মধ্যে সজীবতা ফিরে আসে। এগুলি ব্যয়সাপেক্ষ, কিন্তু খুবই ফলপ্রদ। শুরু হয় ২০০০ টাকা থেকে। ৩৫০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে এই ধরনের প্রতিটি সিটিং-এ। |
ডার্ক সার্কল |
বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চোখের চারপাশে একটি কালো ছোপ নিয়ে সবাই দুশ্চিন্তা করেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এটি বংশানুক্রমিক। এ ছাড়া রক্তাল্পতা, কম্পিউটারের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘক্ষণ কাজ, ঘুম কম হওয়ার জন্য ডার্ক সার্কল হতে পারে। আমাদের চোখের চার পাশটি এতটাই পাতলা, নরম এবং সংবেদনশীল যে এই অঞ্চলের বেশি যত্নের প্রয়োজন। ডার্ক সার্কল-এর সব থেকে ভাল চিকিৎসা আল্ট্রাসনিক ম্যাসাজ। চোখের চার পাশে প্রথমে ভিটামিন ‘এ’ বা ভিটামিন ‘সি’ যুক্ত কোনও জেল বা ক্রিম লাগিয়ে নেওয়া হয়। এই ক্রিম লাগাবেন হালকা হাতে, কোনও চাপ দেবেন না। এর পর আল্ট্রাসনিক যন্ত্রটি চালু করলে, যন্ত্রের সাহায্যে ত্বকের ভেতরে ভিটামিনগুলি পৌঁছয়, ফলে উপকার পাবেন শতকরা একশো ভাগ। কিন্তু এ সবের আগে রক্ত পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা আছে। আপনি যদি রক্তাল্পতায় ভোগেন, তবে ডাক্তারি পরামর্শ আবশ্যক। |
কী কী করবেন |
১) ত্বকের সাধারণ সমস্যা দেখা দিলে বিউটিশিয়ানদের পরামর্শ নিতে পারেন। কিন্তু ত্বকের কোনও অসুখ হলে ডাক্তারের কাছে অবশ্যই যান, দুটির মধ্যে কোনও গণ্ডগোল করবেন না।
২) সব সময় নামী কোম্পানির ভাল জিনিসটি ব্যবহার করুন, অনামী কিছু ব্যবহার করবেন না।
৩) সব সময় সুপ্রশিক্ষিত ব্যক্তির কাছ থেকে ফেশিয়াল করাবেন।
৪) পঁচিশের পর থেকে নাইট ক্রিম ব্যবহার করুন আপনার ত্বক অনুযায়ী। নাইট ক্রিম এবং ডে ক্রিমের মধ্যে গুলিয়ে ফেলবেন না। দু’টির উপকরণ এবং কাজ আলাদা। এ বিষয়টি প্রডাক্টের লেবেলে স্পষ্ট লেখা থাকে। পড়ে, বুঝে ব্যবহার করুন।
|
সাক্ষাৎকার: কস্তুরী মুখোপাধ্যায় ভারভাদা |
|
|
|
|
|