|
|
|
|
ডেঙ্গি ছড়াচ্ছে শহরে |
মশার তেল আসার অপেক্ষায় পুরসভা, স্বাস্থ্য দফতর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
কোচবিহার থেকে তেল এসে পৌঁছানোর পরেই মশা মারার কাজ শুরু হবে জলপাইগুড়িতে। আপাতত সেই অপেক্ষায় বসে রয়েছে স্বাস্থ্য দফতর এবং জলপাইগুড়ি পুরসভা। যদিও প্রতিদিনই ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে জলপাইগুড়ি শহরে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার জলপাইগুড়ির থানা মোড়ের একটি বেসরকারি প্যাথোলজিক্যাল সেন্টারে ৪ জনের রক্তের নমুনায় ডেঙ্গির জীবাণুর সন্ধান মিলেছে। এই তথ্য পাঠানো হয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরে এদিন ৪জন-সহ গত এক সপ্তাহে জলপাইগুড়ি শহরে ১৯ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু পাওয়া গিয়েছে। জলপাইগুড়ি শহরে গত পাঁচ বছরের নিরিখে যা একটি রেকড। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালে জলপাইগুড়ি শহর এলাকায় ২ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তার আগের বছর ২০১০ সাল ৩ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে সদর হাসপাতাল এবং শহরের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি হলেও তাঁরা কেউই জলপাইগুড়ি শহরের বাসিন্দা ছিলেন না বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। তার আগের বছর গুলির মধ্যে ২০০৭ সালে ৪ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু পাওয়া গিয়েছিল জলপাইগুড়ি শহরে। চলতি বছরে এক সপ্তাহের মধ্যে শহর এলাকায় ১৯ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু পাওয়ার মতো ঘটনা সাম্প্রতিক কালে স্বাস্থ্য দফতরের রেকর্ডে নেই। চলতি বছরে ডেঙ্গি সংক্রমণের মাত্রা একলাফে অনেকটা বেড়ে যাওয়ার পেছনে শহরে মশার বংশবৃদ্ধিকেই দায়ী করেছে স্বাস্থ্য দফতর। অথচ, ডেঙ্গির একমাত্র বাহক মশা মারার কোনও অভিযানই শুরু হয়নি তেলের অভাবে। ডিডিটি নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়ার পরে ম্যালাথিন নামে এক ধরনের তেল দিয়ে মশা মারার কাজ করে স্বাস্থ্য দফতর। শহর বা গ্রাম এলাকায় মশা মারতে এই তেল জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে সরবারহ করা হয়। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে প্রয়োজন মত জেলাগুলিকে এই তেল সরবারহ করা হয়। জলপাইগুড়ি পুরসভা সুত্রের খবর, গত মার্চ মাসে জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে ১০ লিটার তেল দেওয়ার পরে আর কোনও তেল দেওয়া হয়নি। অভিযোগ, স্বাস্থ্য দফতরের ভাড়ারে মশা মারার তেল ফুরিয়ে গেলেও রাজ্যকে সময়মত না জানানোর ফলেই সঙ্কট দেখা দিয়েছে। জলপাইগুড়ি শহর এলাকায় ডেঙ্গির প্রকোপ শুরু হওয়ার পর পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য গত বুধবারে পাশের কোচবিহার জেলা থেকে মশা মারার তেল চেয়ে পাঠানো হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপন সরকার বলেন, “কোচবিহারের কাছে মশা মারার তেল চেয়ে পাঠানো হয়েছে। সেই তেল এলে পুরসভাকে দেওয়া হবে। কেন জেলায় এই তেলের সঙ্কট তৈরি হল তা তদন্ত করে দেখতে বলেছি। সময়মত কেন তেল চেয়ে পাঠানো হয়নি তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকলেও স্বাস্থ্য দফতর থেকে মশা মারার তেল না পেয়ে পুরসভা খোলা বাজার থেকে ওষুধ তেল কিনে ছড়ানোর কাজ শুরু করেছে। তবে সেই তেলে কতটা কাজ হবে বা তেলের গুনমাণ কেমন তা নিয়ে সন্দিহান পুর কর্তারাই। স্বাস্থ্য দফতর থেকে যে মশা মারার তেল সরবারহ করা হয় তা অত্যন্ত কড়া ধাঁচের। পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান পিনাকী সেনগুপ্ত বলেন, “স্বাস্থ্য দফতরে তেল না পেয়ে খোলা বাজার থেকে তেল কেনা হয়েছে। সেই তেলের কার্যকরিতা নিয়েই প্রশ্ন রয়েছে। দ্রুত তেল সরবারহ্যে স্বাস্থ্য দফতরে বলা হয়েছে।” |
|
|
|
|
|