|
|
|
|
উচ্ছেদ-প্রশ্নে ‘উত্তপ্ত’ পুরসভা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
হকার এবং ছোট ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদের প্রশ্নে সরগরম হল শিলিগুড়ি পুরসভা। শুক্রবার দুপুরে বোর্ড মিটিঙে একদিকে বিষয়টি নিয়ে সরব হলেন বাম কাউন্সিলরেরা। একই সময় পুরসভায় গিয়ে উচ্ছেদ হওয়ার আশঙ্কায় মেয়র গঙ্গোত্রী দত্তে’র চেম্বারের সামনে তুমুল বিক্ষোভ দেখালেন মহাবীরস্থান উড়ালপুল নিচের এলাকার ছোট ব্যবসায়ীরা। এই ক্ষোভ বিক্ষোভের মধ্যে পুরানো ছোট বা ফুটপাত ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ নয়, নতুন করে রাস্তা, ফুটপাত দখল করতে দেওয়া হবে বলে মেয়র পারিষদ (পূর্ত) কৃষ্ণ পাল বিষয়টি সাফ জানিয়ে দিলেন। উড়ালপুলের নিচের এলাকা-সহ শহরের বিভিন্ন রাস্তা, ড্রেনের উপর এই ধরণের দখলদারি শুরু হয়েছে বলেও কৃষ্ণবাবু উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এ দিন বোর্ড মিটিঙে প্রসঙ্গটি তোলেন সিপিএম কাউন্সিলর দিলীপ সিংহ। তিনি বলেন, “বিভিন্নভাবে প্রচার হচ্ছে শহরে উচ্ছেদ অভিযোগ শুরু হবে। এতে গরিব মানুষের শঙ্কিত। এদিন পুরসভায় বিক্ষোভও হচ্ছে। কিন্তু আইন মোতায়েক হকার উচ্ছেদ করা যায় না। উল্টে তাঁদের সুখ সুবিধা দেখার কথা সেখানে বলা হয়েছে।” এমন হলে তো আন্দোলন ছাড়া উপায় থাকবে বলেও দিলীপবাবু মন্তব্য করেন।
এর উত্তরে মেয়র পারিষদ কৃষ্ণবাবু বলেন, “পুরবোর্ড তো বটেই আমাদের রাজ্য সরকার উচ্ছেদের বিপক্ষে। আমরা চাই না পুরানো ফুটপাত বা ছোট ব্যবসায়ীরা উচ্ছেদ হোক। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ভুয়ো খবর প্রচার হচ্ছে। তাঁদের রাস্তা পথচারীদের হাঁটার রাস্তা ছেড়ে ব্যবসা করতে বলা হয়েছে। তবে একাংশ ব্যবসায়ী উড়ালপুলের নিচের রাস্তা দখল করে ফেলছেন। আবার নর্দমার কালভার্টের উপরে না বসে রাস্তা দখল হচ্ছে। এটা মানা হবে না।” তিনি জানান, গরিব থেকে উচ্চবিত্ত সকলের কথা মাথায় রেখেই পুরবোর্ড কাজ করবে। বাসিন্দাদের শহরে হাঁটাচলা করতে যাতে কোনও সমস্যা না হয় তাই দেখা আমাদের মূল লক্ষ্য।
এ দিন যাঁরা পুরসভার বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, সেই মহাবীরস্থান উড়ালপুর এলাকার ছোট ব্যবসায়ীদের সংগঠনের সম্পাদক দিলীপ সাহা বলেন, “আমরা শুনছি পুরসভা আমাদের উচ্ছেদ করবে। এতে না খেতে পেয়ে কয়েকশ পরিবার রাস্তায় চলে আসবে। তাই আমরা বিক্ষোভ দেখিয়েছি। পরিবার বাঁচাতে দরকার হলে রাস্তায় নামতে হবে।”
উচ্ছেদের প্রশ্নের পাশাপাশি পুরসভার সম্পত্তি কর আদায়ের প্রসঙ্গে নিয়ে তীব্র বিরোধিতা করেন বিরোধিতা করেন পুরসভার বিরোধী দলনেতা নুরুল ইসলাম। তিনি অভিযোগ করেন, “সম্পত্তি কর নিয়ে শহরে বিভ্রান্তি বাড়ছে। প্রথমে নতুন হারে কর দেওয়ার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হচ্ছে। তার পরে প্রচুর ভুলভান্ত্রি দেখা যাচ্ছে। ফের পুরানো হারে দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। যাদের বেশি হওয়ার কথা তাদের কমে যাচ্ছে। উল্টোও হচ্ছে। বাসিন্দাদের নোটিশ দেওয়া হচ্ছে না। পুরো প্রক্রিয়াটা বাতিল করা হোক।” মেয়র গঙ্গোত্রী দেবী এর পরে সভায় জানিয়ে দেন, ওয়েস্ট বেঙ্গল ভ্যালুয়েশন বোর্ড গতকালই চিঠি দিয়েছে। সেখানে সংশোধনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলা হয়েছে। তবে পুরোটাই ২০০৪-০৭ সালের সমীক্ষার ভিত্তিতে হয়েছে। নতুন করে কিছু হয়নি। ভ্যালুয়েশন বোর্ড বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। বিষয়টি অবশ্যই সুষ্টু সমাধান করে মানুষকে জানানো হবে। শহরবাসীকে কোনও বিভ্রান্তির মধ্যে পুরবোর্ড রাখবে না। |
|
|
|
|
|