১০০ দিনের প্রকল্পে অগ্রিম মজুরি পেয়ে আর পুবে খাটতে গেলেন না পুরুলিয়ার ঝালদা ২ ব্লকের একটি গ্রামের বাসিন্দারা। কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে পরীক্ষামূলক ভাবে শ্রমিকদের অগ্রিম মজুরি দিয়ে এই সাফল্য পাওয়ার পরে এ বার জেলা প্রশাসন জেলার অন্যত্রও শ্রমিক স্থানান্তর রুখতে এই মডেলকেই অনুসরণ করতে চাইছে। জেলাশাসক অবনীন্দ্র সিংহ বলেন, “এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের কাছে আমরা সুপারিশ করব।”
ঝালদা ২ ব্লকের নোয়াহাতু পঞ্চায়েতের অধিকাংশ বাসিন্দাই শুখা মরসুমে এলাকায় কাজ না থাকায় ঝাড়খণ্ড, বর্ধমান ও পশ্চিম মেদিনীপুরে কাজ করতে যেতেন। এ বার পঞ্চায়েত থেকে তাঁদের অগ্রিম মজুরি দিয়ে ১০০ দিনের কাজে এলাকার চারটি পুকুর সংস্কারের কাজ করানো হয়। প্রকল্পের পুরুলিয়া জেলার ভারপ্রাপ্ত নোডাল অফিসার শঙ্কর নস্কর বলেন, “কাজের সন্ধানে শ্রমিকদের অন্যত্র স্থানান্তর রুখতে কেন্দ্রীয় সরকার পরীক্ষামূলক ভাবে তাঁদের অগ্রিম মজুরি দিয়ে কাজ করানোর নির্দেশ দিয়েছিল। মজুরি নেওয়ার পরে তাঁরা কাজে আসছেন কিনা, বাইরে যাওয়ার প্রবণতা কমছে কী না ইত্যাদি দেখতে বলা হয়েছিল।” তিনি জানান, ওই এলাকার বেশিরভাগ বাসিন্দাই আগে কাজের জন্য বাইরে চলে যেতেন। তাই ওই এলাকা বেছে নেওয়া হয়। দেখা যায়, আগাম মজুরি দেওয়ায় শ্রমিকদের মধ্যে ভাল সাড়া পাওয়া গিয়েছে। ঝালদা ২ ব্লকের তৎকালীন বিডিও অনুপ দত্ত বলেন, “আগে মজুরি পেয়ে যাওয়ার পরে তাঁরা কাজে আসবেন কিনা তা নিয়ে আশঙ্কা ছিল। দেখেছি একজন শ্রমিকও কাজে অনুপস্থিত হননি।”.
পঞ্চায়েতের প্রধান সুভাষ কুমার জানান, ফেব্রুয়ারি-মার্চ শুখা মরসুমেই তাঁরা এই কাজ করেন। প্রচার পত্র বিলি করে বিডিও-কে সঙ্গে নিয়ে মাইকে প্রচার করা হয়। তিনি বলেন, “প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টে ছ’দিনের মজুরির অর্ধেক টাকা আগাম দেওয়া হয়। সপ্তাহ শেষে হিসেব করে বাকি টাকা দেওয়া হয়। ফের একই ভাবে অর্ধেক টাকা আগাম দেওয়া হয়।” পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, চারটি পুকুরে প্রায় ১৪ লক্ষ টাকার কাজ হয়েছে। কোচাহাতু গ্রামে পুকুর সংস্কারে ২৩৫ জন কাজ করেন। বানাহাটাতে কাজ করেন ৩৩৫ জন, শ্যামপুরে ২০০ জন।
শ্রমিক শিশুপাল কুমার, সন্ধ্যা কুমার, চম্পা কুমার, রাজেশ কুমার, দেবদাস কুমাররা বলেন, “এত দিন রোজগারের জন্য অন্য জেলায় কাজে যেতাম। ১০০ দিনের কাজে মজুরি পেতে অনেক দিন লেগে যেত। এ বার কাজের আগেই মজুরি দেওয়ায় তাই আর বাইরে যাইনি। বাড়িতে থেকে রোজগার করার সুযোগ কে ছাড়তে চায়!” |