রেলপথের সুরক্ষা খতিয়ে দেখতে সহকর্মীদের সঙ্গে শুক্রবার সকালে নিজেও উঠে পড়েছিলেন ট্রলিতে। লাইনের হাল হকিকত খতিয়ে দেখার ফাঁকে খেয়ালই করেননি উল্টো দিক থেকে ছুটে আসছে ফরাক্কা এক্সপ্রেস। বেগতিক দেখে মরিয়া হয়ে ট্রলি থেকে ঝাঁপ দেন তাঁর সহকর্মীরা। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি পূর্ব রেলের ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ার (রেল-সুরক্ষা) শ্রীনারায়ণ শর্মার (৪৩)। ছোট্ট মোটরভ্যান-সহ তাঁকে হিচড়ে নিয়ে যায় নবদ্বীপ-ফরাক্কা এক্লপ্রেস। ঘটনাস্থলেই মারা যান রেল সুরক্ষা বিভাগের ওই পদস্থ কর্তা।
পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে কলকাতা থেকে ফরাক্কা এসেছিলেন ওই রেল কর্তা। এ দিন সকাল থেকেই লাইন পরীক্ষায় বেরিয়ে পড়েছিলেন তিনি। ফরাক্কার এনটিপিসি-র কাছে বাঁকের মুখে উল্টো দিক থেকে আসা ট্রেনটিকে দেখতেই পাননি ট্রলির চালকেরা। মালদহের ডিআরএম রবীন্দর গুপ্ত জানান, ওই বাঁকের মুখে অজস্র গাছপালা থাকায় ট্রেনটিকে দেখা যায়নি। তিনি বলেন, “রেলপথে পরিদর্শনে বের হলে নিকটবর্তী স্টেশন ম্যানেজারকে জানিয়ে যাওয়ার কথা। যাতে ওই লাইনে কোনও ট্রেন থাকলে তাকে সতর্ক করে দেওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে তা হয়েছিল কিনা তা খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। কোথাও একটা গাফিলতি রয়েছে। সে ব্যাপারে তদন্ত শুরু হয়েছে।”
শ্রীনারায়ণবাবুর আদি বাড়ি বিহারের গয়ার কাছে। কর্মসূত্রে কয়েক বছর ধরে তিনি সপরিবার কলকাতায় থাকতেন। ময়নাতদন্তের পরে তাঁর দেহ কলকাতায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই রেল কর্তার সঙ্গেই ছিলেন রেল-সুরক্ষা বিভাগের অন্য এক কর্তা মুজিবর রহমান। তিনি বলেন, “এনটিপিসি-র ওই বাঁকটা খুবই বিপজ্জনক। ট্রেনটি যখন আমাদের নজরে এল তখন আর করার কিছুই ছিল না। কিন্তু শ্রীনারায়ণবাবু ছিলেন ট্রলির মাঝখানে। উনি আর ঝাঁপ দিতে পারেননি।” |