বিজেপি’র অবস্থান-বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে শুক্রবার দুপুরে আহিরণের সুতি-১ ব্লক অফিসে চলল ব্যাপক ভাঙচুর। অফিস চত্বর জুড়ে ব্যাপক বোমাবাজি। উত্তেজিত জনতা আগুন ধরিয়ে দেয় পুলিশের একটি গাড়িতে। মুড়ি-মরকির মতো পড়তে থাকে বোমা। ঘন্টা দেড়েক ধরে চলা ওই তাণ্ডব থামাতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। লাঠিও চালাতে হয়।
বিজেপি’র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের অভিযোগ, তিন রাউন্ড গুলিও চালিয়েছে পুলিশ। জেলা পুলিশ অবশ্য তা মানতে চায়নি। ওই ঘটনায় পুলিশ ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে। জেলা পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে। উত্তেজনা সামাল দিতে পুলিশকে লাঠি চালাতে হয়েছে। কয়েক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাসও ছোড়া হয়।” |
এ দিন সুতি-১ ব্লক অফিসে স্মারকলিপি জমা দেওয়ার কর্মসূচি ছিল বিজেপির। ব্লক অফিসের মাঠে দুপুর ২টো নাগাদ প্রায় শ-পাঁচেক বিজেপি সমর্থক জমায়েত হয়। তাদের দাবি ছিল, সরকার অধিগৃহীত জমিতে যেখানে গ্রামবাসীরা দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন, তাঁদের তা ফিরিয়ে দিতে হবে। এ দিনের সভায় রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ হাজির ছিলেন। বিজেপি নেতা বলেন, “সিঙ্গুরে, নন্দীগ্রামে জমি অধিগ্রহণের পর সেই জমি চাষিরা ফিরে পেলে আহিরণের গ্রামবাসীরা তা পাবেন না কেন?” ভাষণ শেষ করে পরিস্থিতি যখন ক্রমেই তপ্ত হচ্ছে, রাহুলবাবু ফরাক্কার দিকে রওনা দেন।
সুতি-১ ব্লকের বিডিও সুবীর দাস বলেন, “এ দিন দুপুরে আমার সঙ্গে আলোচনার জন্য সময় নেন বিজেপি নেতারা। আমিও সেই মত প্রস্তুতও ছিলাম। আচমকা বাইরে দেখি উত্তেজনা। উত্তেজনা ছড়ানোর কারণ বুঝে ওঠার আগেই বোমা ও ইট-পাটকেল পড়তে শুরু করে। আমার অফিসে ঢুকে শুরু হয় ভাঙচুর।” |
রাহুল সিংহ বলেন, “বোমা তো পড়ল বিডিও অফিস থেকে। জমায়েতের উপরে পরিকল্পিত ভাবে আক্রমণ ছুটে এল ব্লক অফিসের উপর থেকে। ১০ জন বিজেপি কর্মী জখম হন। শান্ত ভাবে চলা সভায় পুলিশের একাংশের প্ররোচনায় ওই ঘটনা ঘটেছে।”
ওই ঘটনায় প্রশাসনিক ব্যর্থতার দিকে আঙুল তুলেছেন ব্লক কংগ্রেস সভাপতি রজত দাসও। তাঁর কথায়, “এলাকায় জমি নিয়ে যখন একটা উত্তেজনা রয়েছে, তখন কেন অফিসের মধ্যে সভা করার অনুমতি দেওয়া হল তাদের। কেনই বা যথাযথ সংখ্যায় পুলিশি ব্যবস্থা ছিল না।” বিডিও অবশ্য বলেন, “সভার কোনও অনুমতিই নেননি তারা।” |