দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া, সোনারপুর
গড়িয়া স্টেশন রোড
দখলদারির সড়ক
ক পাশে সার দিয়ে বাস, অটো এবং রিকশা দাঁড়িয়ে থাকে। অন্য পাশে দোকান প্রায় রাস্তায় উঠে এসেছে। অভিযোগ উঠেছে, এতে সঙ্কীর্ণ হয়ে গিয়েছে গড়িয়া স্টেশন রোডে। যাতায়াত করতে অসুবিধায় পড়ছেন পথচারীরা। সমস্যা হচ্ছে যান চলাচলেও।
ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘ দিন ধরে গড়িয়া স্টেশন রোডের এই অবস্থা। ব্যস্ত সময়ে প্রাণ হাতে যাতায়াত করতে হয়। প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটে। অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট মহলে একাধিক বার জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি।
এলাকার বাসিন্দা বাবু বসুর কথায়: “পথচারীদের সুবিধার জন্য বেশ কয়েক বছর আগে এক বার টলি নালার পাড় থেকে দখলদার হটিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আবার দখলদারেরা বসে গিয়েছেন। কেউ কোনও ব্যবস্থা নেননি।” গড়িয়া এবং ইএম বাইপাস সংলগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকার সঙ্গে শহিদ ক্ষুদিরাম মেট্রো স্টেশন এবং পাঁচ ও ছয় নম্বর সরকারি বাসডিপোর যোগাযোগ রক্ষা করছে গড়িয়া স্টেশন রোড। তা ছাড়া এই রাস্তার উপরেই একাধিক বাসস্ট্যান্ড রয়েছে। ফলে সারা দিনই এ পথে গাড়ি এবং পথচারীর চাপ থাকে।
গড়িয়া স্টেশন রোডের দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে রাজ্য পূর্ত ও সড়ক দফতরের যাদবপুর রেলওয়ে উড়ালপুল সাব ডিভিশন।
সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহকারী বাস্তুকার চন্দন সামন্ত বলেন, “এই দখলদারির জন্য রাস্তা অনেক নিচু হয়ে গিয়েছে। ফলে জল জমে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রাস্তা। অনেক দিন ধরে আমরা এই সমস্যার সুরাহার জন্য চেষ্টা করছি।”
স্থানীয় সূত্রে খবর, টলি নালার পাড় থেকে বছর কয়েক আগে এক বার দখলদারদের উচ্ছেদও করা হয়েছিল। সেই দখলদারদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। দখলদার সরিয়ে জায়গাটিকে কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। তার পরে অবশ্য আবার জায়গাটি দখল হয়ে যায়। বাসিন্দা ও পথচারীদের অভিযোগ, এর পিছনে রাজনৈতিক মদত রয়েছে।
অভিযোগে এড়িয়ে গিয়ে রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার বর্তমান কাউন্সিলর এবং প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধান সিপিআইয়ের তড়িৎ চক্রবর্তী বলেন, “গড়িয়া স্টেশন রোড সংলগ্ন এলাকায় এই সমস্যা দীর্ঘ দিনের। টলি নালাকে মাঝে রেখে ওই এলাকা দিয়ে দু’টি রাস্তা গিয়েছে। একটি গড়িয়া স্টেশন রোড। এটি দিয়ে যান চলাচল করে। অন্য রাস্তাটি দিয়েও যান চলাচলের ব্যবস্থা করলে সমস্যার অনেকটাই সুরাহা হতে পারে।”
এই অঞ্চলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হকার বলেন, “এখানে চার-পাঁচ বছর ধরে রয়েছি। সরকারের তরফে যথাযথ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হলে আমরা এখান থেকে সরে যেতে রাজি আছি।” পথচারী ও যান চলাচলের অসুবিধার পাশাপাশি দখলদারদের জন্য টলি নালার সংস্কারের কাজও ব্যাহত হয়েছে বলে অভিযোগ করেন সোনারপুর উত্তরের বিধায়ক এবং পুরসভার বর্তমান উপ-পুরপ্রধান তৃণমূলের ফিরদৌসি বেগম। তাঁর কথায়: “টলি নালার সংস্কারের সময় আমরা ওই এলাকার দখলদারদের কাছে সাময়িক ভাবে সরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। তাঁরা কোনও সহযোগিতা করেনি।’’
কিন্তু প্রশাসন উচ্ছেদের ব্যবস্থা করেনি কেন? ফিরদৌসি বেগম বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে উচ্ছেদের বিষয়টিকে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে বিচার করতে হবে।”

ছবি: পিন্টু মণ্ডল




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.