|
|
|
|
|
|
পূর্ব কলকাতা |
নজরের আড়ালে |
বেনিয়মের মোড় |
কাজল গুপ্ত |
যানশাসনের বালাই ছিল না। মাথাব্যথাও ছিল না তেমন। কোনও দিনই কার্যত কোনও পরিকল্পনাতেও বিবেচনায় রাখা হয়নি। অবশেষে বড়সড় এক দুর্ঘটনায় টনক নড়েছে। এত দিনে বিধাননগর ফাল্গুনী মোড়ে ট্রাফিক ব্যবস্থার পরিকল্পনা করতে বসেছে পুলিশ প্রশাসন। শুধু এই মোড়টিই নয়, বিধাননগর-সহ কমিশনারেটের মোট ন’টি থানা এলাকার ট্রাফিক ব্যবস্থাহীন মোড়গুলি নিয়ে সামগ্রিক ভাবে ওই পরিকল্পনা করা হবে।
সম্প্রতি ফাল্গুনী মোড়ে একটি অটোর সঙ্গে ইনোভা গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন বেশ কয়েক জন অটোযাত্রী। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই রাস্তার মোড়ে দীর্ঘদিন ধরে মাঝে মধ্যেই দুর্ঘটনা অথবা গাড়ি ঠোকাঠুকির ঘটনা ঘটেই চলেছে। অথচ এখানে না আছে ট্রাফিক পুলিশ, কিংবা স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল ব্যবস্থা অথবা গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য স্পিডব্রেকার। আরও অভিযোগ, বারবার দাবি জানানো সত্ত্বেও এই রাস্তার মোড় নিয়ে কোনও পরিকল্পনাই করেনি প্রশাসন।
|
|
বিধাননগরে নির্দিষ্ট দূরত্ব অন্তর রাস্তার মোড়ে আইল্যান্ড থাকে। ফাল্গুনী মোড়ে তা নেই। এই মোড় থেকে একটি রাস্তা চলে গিয়েছে জিসি আইল্যন্ডের দিকে, অন্যটি পূর্বাচল আবাসনের দিকে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সামান্য সতর্কতার অভাবে যে কোনও সময়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। স্থানীয় বাসিন্দা শান্তনু মল্লিকের অভিযোগ, “বিধাননগরে এমন বেশ কয়েকটি রাস্তার মোড় আছে, যেখানে আইল্যান্ড নেই, ট্রাফিক ব্যবস্থাও নেই। অথচ এখন গাড়ির চাপ বেড়ে গিয়েছে অনেক বেশি।’’ বাসিন্দাদের ফের দাবি তুলেছেন, অবিলম্বে প্রশাসন ব্যবস্থা নিক।
বিধাননগরে এই ধরনের একাধিক মোড় রয়েছে, যেখানে ট্রাফিক ব্যবস্থা নেই। পাশাপাশি এমন কয়েকটি বাসস্টপ রয়েছে যেখানে গাড়ি কিংবা রাস্তা পারাপার করেন অসংখ্য মানুষ। সেখানেও এই সমস্যা রয়েছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। যেমন, করুণাময়ী মোড় থেকে পাঁচ নম্বর সেক্টরমুখী রাস্তায় দশ নম্বর ট্যাঙ্কের মোড়, বিদ্যাসাগর মোড়, ইস্টার্ন ড্রেনেজ চ্যানেল সংলগ্ন বক্সব্রিজের মোড়, কেষ্টপুর খালপাড় সংলগ্ন রাস্তায় একাধিক মোড়, বিজে বাসস্টপ, ফাঁড়ি স্টপ, ইন্দিরা ভবন সংলগ্ন মোড় ইত্যাদি।
বাসিন্দাদের সংগঠন ‘বিধাননগর (সল্টলেক) ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক কুমারশঙ্কর সাধু বলেন, ‘‘বিধাননগরে বহিরাগতের সংখ্যা বেড়েছে, ফলে যে সব রাস্তায় গাড়ি চলাচল কম ছিল, সেখানেও সমস্যা বেড়েছে। অবিলম্বে ব্যবস্থা নিক প্রশাসন।’’
|
|
তবে এই সমস্যা শুধু বিধাননগরেরই নয়। কমিশনারেট এলাকায় লেকটাউন, গোলাঘাটা, দমদম পার্ক, কৈখালি, কেষ্টপুর, সাতগাছি, নারায়ণপুর, নিউটাউন এলাকা এবং ভিআইপি রোড ও রাজারহাট এক্সপ্রেসওয়ের একাধিক মোড়ে এই সমস্যা রয়েছে। যেমন রাজারহাটমুখী রাস্তা ও ভিআইপি রোডের সংযোগস্থল, কিংবা হলদিরাম বাসস্টপ নিয়ে বাসিন্দাদের তুমুল ক্ষোভ। তাঁদের অভিযোগ, বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনার পরে কেবলমাত্র কয়েক জন ট্রাফিক কর্মী নিয়োগ করা হলেও বেপরোয়া গাড়ি চলাচল কিংবা গতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চোখে পড়ছে না।
অভিযোগ কার্যত স্বীকার করে নিলেও পুলিশকর্তাদের একাংশের মতে, প্রতিটি রাস্তার মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করার মতো পরিকাঠামো তাঁদের নেই। বিধাননগরের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) প্রণব কুমার বলেন, ‘‘কমিশনারেট হওয়ার পরে পরিকাঠামোর উন্নয়নে বিভিন্ন পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। ট্রাফিক সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে, এমন একাধিক রাস্তার মোড় নিয়ে সমীক্ষা করে সার্বিক একটি পরিকল্পনা করা হবে।’’
|
ছবি: শৌভিক দে |
|
|
|
|
|