ফিউশন
স্বাদেও সাজ
যোধপুরের মার্বেল, ফিরোজাবাদের কাচ, কলকাতার আয়না, মোরাদাবাদের শ্যান্ডেলিয়র। তার সঙ্গে ডিজাইনারের অভিনব বলিউডি ছোঁয়া। সব মিলে আবহে মধ্যযুগ আর এ সময়ের ফিউশন।
ব্যস্ত, কর্পোরেট পার্ক স্ট্রিটকে এ ভাবেই নতুন আঙ্গিক দিয়েছেন ফ্যাশন ডিজাইনার রোহিত বাল। সৌজন্য ভারতীয় খাবারের নতুন রেস্তোরাঁ ‘বেদ’।
এই প্রথম কোনও নাম করা ফ্যাশন ডিজাইনারের হাতে সাজানো রেস্তোরাঁ পেল শহর। নিজের কাজেই মুগ্ধ রোহিত জানালেন, কলকাতার এই রেস্তোরাঁয় ঢুকেই তাঁর মনে পড়ে যায় ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে পুরনো দিল্লির কোনও এক রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার কথা। পেতলের ব্যবহারে সেখানকার জমকালো কারুকাজ যত বার মনে পড়েছে, ততই বেশি ঝলমলে সাজ দিতে চেয়েছেন তিনি ‘বেদ’-কে।
ছোটবেলার অনেকটা দিল্লিতে কাটার ফলে মোগল আমলের বিভিন্ন ধরনের হাতের কাজের নানা নিদর্শন বারবার দেখার সুযোগ পেয়েছেন রোহিত। আর তার থেকেই বিশেষ টান তৈরি হয়েছে সে সবের প্রতি। এত দিন ফ্যাশন ডিজাইনিং করে যে সব দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয়নি, ঠিক সে কাজটাই করেছেন রেস্তোরাঁ সাজাতে গিয়ে।
তাঁর সাধের ‘বেদ’-এর সব দেওয়াল এখন সে ভাল লাগার নিদর্শন। রঙিন কাচের ব্যবহারে মোগল আমলের লুপ্তপ্রায় ‘ঠেকরি’ কাজে সেজেছে রেস্তোরাঁর চার দেওয়াল। তাতেই ফিরেছে প্রাচীন ভারতীয় আবহ।
রোহিত জানালেন, শুধু ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ে আটকে না থেকে নিজের ভাবনাকে নানা ভাবে ব্যবহার করতে চান তিনি। কাশ্মীরি ও পঞ্জাবি বাবা-মায়ের কাছে বড় হওয়ার কারণে খাওয়া-দাওয়া, আতিথেয়তার দিকেও বিশেষ নজর দিতে শিখেছেন তিনি। সে কারণেই ‘অন্য কিছু’ করার উদ্যোগে প্রথম স্থান পেল রেস্তোরাঁর ইন্টিরিয়র ডিজাইনিং। এখানে যে ধাঁচের খাবার পাওয়া যায়, তার সঙ্গে মানানসই করে ভিতরটা সাজিয়ে তোলার কথা বিশেষ ভাবেই মাথায় রেখেছেন। আর সে কারণেই রেস্তোরাঁর সাজ হয়েছে খাঁটি ভারতীয়।
এক ছাতের তলায় নানা ধরনের কারুকাজের ব্যবহারে তুলে ধরা হয়েছে ইতিহাসের নানা সময়কে। যেমন রয়েছে মধ্যযুগের কারুকাজ, তেমনই দেখা যাবে ইংরেজ আমলের ‘ক্যালকাটা মিরর’। তারই সঙ্গে অত্যাধুনিক গ্লাস-টপ টেবিল এবং চামড়ায় মোড়া ইংলিশ সোফা। ঠিক যেমন এখানে অতিথিরা পাবেন চিরাচরিত রান্নার পাশাপাশি নানা ধরনের ফিউশন রেসিপিও। অতি পরিচিত কাকোরি কাবাব, চিকেন টিক্কা মসালা, ডাব চিংড়ি, সরষে-ইলিশের পাশাপাশি একই সঙ্গে চেখে দেখা যায় স্টিম্ড ভেটকি গন্ধরাজ, মাটন পেপার ফ্রাই, মালাই ব্রকোলির মতো কিছু আধুনিক রেসিপিও।

ছবি: বিশ্বনাথ বণিক




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.