ডিমা হাসাও ও কার্বি আলং জেলায় আঞ্চলিক পরিষদ (টেরিটোরিয়াল কাউন্সিল) গঠনের বিষয়টি যখন প্রায় পাকা, তখন স্বশাসিত পার্বত্য পরিষদের দুই মুখ্য কার্যবাহী সদস্য রাজ্যের মধ্যে রাজ্যের দাবি তোলায় নতুন করে বিভ্রান্তি শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় উপজাতি ও পঞ্চায়েত বিষয়ক মন্ত্রী কিশোরচন্দ্র দেওয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দুই পার্বত্য জেলাকে সংবিধানের ২৪৪ (ক) ধারা মেনে ‘রাজ্যের অধীনে রাজ্য’ ঘোষণার জন্য তাঁরা অনুরোধ করেছেন।
ডিমাসা এবং কার্বিদের বেশ ক’টি জঙ্গি সংগঠন এ সময়ে সংঘর্ষবিরতি মেনে চলছে। সবাইকে এক ছাতার তলায় এনে একই শান্তিচুক্তিতে স্বাক্ষরের প্রয়াস নিয়েছে কংগ্রেসশাসিত কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার। বেশ কয়েক দফা বৈঠকের পর বর্তমান স্বশাসিত পার্বত্য পরিষদের বদলে আঞ্চলিক পরিষদ গঠনের শর্তে সবাই সহমত হয়। ঠিক এই সময়ে দুই পার্বত্য পরিষদের মুখ্য কার্যবাহী সদস্যদের এই নতুন দাবি উত্থাপনকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ ডিমা হাসাও স্বশাসিত পার্বত্য পরিষদের দেবজিৎ থাউসেন এবং কার্বি আলংয়ের জয়রাম ইংলেং দুজনেই কংগ্রেসের প্রভাবশালী নেতা। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, শান্তিচুক্তি ও টেরিটোরিয়াল কাউন্সিল গঠন কি তবে অনিশ্চয়তার গর্ভে?
দেবজিৎবাবু অবশ্য শান্তিচুক্তির ব্যাপারে আশাবাদী। তবে টেরিটোরিয়াল কাউন্সিল নিয়ে কোনও মন্তব্যে তিনি রাজি হননি। তাঁর কথায়, “আমরা এর পক্ষে কি বিরুদ্ধে, তা বলা যায় না। শুধু এটুকু বলতে পারি, রাজ্যের অধীনে রাজ্য হলে টেরিটোরিয়াল কাউন্সিলের চেয়ে এলাকা উন্নয়নে অনেক বেশি সুবিধা মিলবে। আর এই দাবি অন্যায়ও নয়। সংবিধানের ২৪৪ (ক) ধারাতেই অসমের পার্বত্য এলাকায়, প্রয়োজনে রাজ্যের অধীনে রাজ্য ঘোষণার কথা বলা আছে।” স্থানীয় কংগ্রেস সাংসদ বীরেন সিংহ ইংতিও দেবজিৎ থাউসেনদের সঙ্গে কিশোর দেওয়ের কাছে যান। দেবজিৎবাবু জানান, বিষয়টি কংগ্রেস হাইকমান্ড এবং সংসদীয় দলের কাছে উপস্থাপনের জন্য ইংতিকেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
বড়োল্যান্ড টেরিটোরিয়াল কাউন্সিলে অ-বড়োদের বসবাস নিয়ে যখন এক মাসেরও বেশি সময় ধরে হিংসাত্মক কার্যকলাপ চলেছে, সে সময় স্বশাসিত পরিষদের দুই মুখ্য কাযর্বাহী সদস্যের টেরিটোরিয়াল কাউন্সিলের বদলে ‘রাজ্যের অধীনে রাজ্য’-এর দাবির কি কোনও ভিন্ন তাৎপর্য রয়েছে?
এ বিষয়ে বিশদ ব্যাখ্যায় যেতে নারাজ দেবজিৎবাবুরা। |