দিল্লিতে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ছিল চার পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে। কিন্তু দীর্ঘ কাল মামলা চলার ফাঁকে এক অভিযুক্ত ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত ২৪ বছর পরে সাজা হল বাকি তিন পুলিশকর্মীর। তাঁরাও অবসর নিয়েছেন। সাজা হয়েছে সেন্ট্রাল ফরেন্সিক বিভাগের এক কর্তারও।
ঘটনার সূত্রপাত ১৯৮৮ সালে। দিল্লির পটেলনগর থানার ওই চার পুলিশকর্মী মে মাসের এক রাতে সুদেশ কুমার নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে হানা দেন। রাত তখন পৌনে ১১টা। সুদেশ বাড়ির বাইরে খাটিয়ায় শুয়ে ছিলেন। অভিযোগ, চার পুলিশকর্মী তাঁকে তুলে পেটাতে শুরু করেন। বাধা দেন সুদেশের মামা গোপী রাম। পুলিশের অত্যাচারের হাত থেকে তিনিও বাঁচেননি।
অভিযোগ, মামা-ভাগ্নেকে থানায় নিয়ে গিয়েও বেধড়ক মারধর করা হয়। আহত অবস্থায় দু’জনকেই ভর্তি করানো হয় হাসপাতালে। সেখানেই মারা যান গোপী রাম। পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন সুদেশ। স্থানীয় পুলিশের তদন্তে সন্তুষ্ট হতে পারেননি তিনি। তাই দ্বারস্থ হন সুপ্রিম কোর্টের।
সেই ঘটনার দু’বছর পরে শীর্ষ আদালতের নির্দেশে ঘটনার তদন্তে নামে সিবিআই। পটেলনগর থানার দুই সাব-ইনস্পেক্টর সতীশ কুমার কাদাইন ও ইন্দর সিংহ রানা এবং দুই কনস্টেবল রমেশ চাঁদ ও দগমাল সিংহের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করে ওই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। অভিযোগ ওঠে, গোপী রামের ময়না-তদন্তের রিপোর্টে কারচুপি করেন সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির সিনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসার কেবলকৃষ্ণ অরোরা। তাঁর নামও ছিল সিবিআইয়ের চার্জশিটে।
সিবিআই সূত্রের খবর, মামলা চলাকালীন দগমাল সিংহ মারা যান। পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় সতীশ, ইন্দর ও রমেশকে দোষী সাব্যস্ত করেন দিল্লির তিসহাজারি আদালতের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক। কেবলকৃষ্ণের বিরুদ্ধে ময়না-তদন্তের রিপোর্টে কারচুপির অভিযোগও প্রমাণিত হয়। ঘটনার ২৪ বছর পরে, গত বৃহস্পতিবার তিন পুলিশকর্মীকে ১০ বছর এবং কেবলকৃষ্ণকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এ ছাড়াও তিন পুলিশকর্মীর ১০ হাজার করে এবং কেবলকৃষ্ণের পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন বিচারক। আদালত নির্দেশ দিয়েছে, জরিমানার টাকা পাঠিয়ে দিতে হবে গোপী রামের বিধবা স্ত্রী কাশ্মীরি দেবীর কাছে। |