‘ত্রিফলা’ কেনার তদন্ত
ডিজি-কে ‘শো-কজ’ করে কেলেঙ্কারি মানল পুরসভা
‘প্রশাসনিক নিয়ম না মেনে’ ত্রিফলা আলোর বরাত দেওয়ায় কলকাতা পুরসভার ডিরেক্টর জেনারেল (আলো) গৌতম পট্টনায়ককে ‘শো কজ’ নোটিস ধরাচ্ছে কলকাতা পুরসভা। পাশাপাশি ত্রিফলা আলো সংক্রান্ত সব আর্থিক লেনদেনও স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। বিরোধীরা অবশ্য বলছেন, এক জন আমলার ঘাড়ে গোটা কেলেঙ্কারির দায় চাপিয়ে বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে তৃণমূলের বোর্ড।
শুক্রবার মেয়র পারিষদের বৈঠকে ত্রিফলা আলো নিয়ে ওঠা ভূরিভূরি অভিযোগের তদন্ত করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই আলোর বরাত দেওয়ায় কী ভাবে ‘অনিয়ম’ হল তা তদন্ত করে দেখতে বলা হয়েছে পুর কমিশনার খলিল আহমেদকে। কমিশনারের তদন্ত রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত ত্রিফলা আলো নিয়ে কোনও আর্থিক লেনদেন করা যাবে না। ওই আলো লাগানোয় কোনও অনিয়ম হয়নি বলে গত পুর অধিবেশনে মন্তব্য করেছিলেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। শুক্রবার তাঁর মুখে শোনা গেল উল্টো কথা। মেয়র এ দিন বলেন, “ক্রিফলা আলো বরাত দেওয়ার আগে প্রশাসনিক অনুমোদন নেওয়া হয়নি। যা অবশ্যই উচিত ছিল।”
কোনও টেন্ডার ছাড়াই কলকাতা পুরসভা এলাকায় ত্রিফলা আলো লাগানো নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে বলে সরব হয়েছিলেন বিরোধী সদস্যেরা। মেয়র পারিষদের অনুমোদন ছাড়া কী ভাবে পুরসভা ওই কাজ করল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল তৃণমূলের অন্দরেই। এক মেয়র পারিষদ এ ব্যাপারে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন কলকাতা পুরসভার আলো বিভাগকে। মেয়রও বিষয়টি এড়িয়ে চলছিলেন। মেয়র পারিষদের বৈঠকে বিষয়টি তোলাই হয়নি। শুক্রবার ছিল কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদের বৈঠক। এ দিনও আলোচ্যসূচিতে ত্রিফলা আলো সংক্রান্ত বিষয়টি ছিল না। কিন্তু মেয়র পারিষদের একাংশের চাপে মেয়র এ দিনের বৈঠকে বিষয়টি তোলেন। ঠিক হয়, পুর কমিশনারের হাতেই বিষয়টি ছেড়ে দেওয়া হোক।
এ দিনের বৈঠকে ত্রিফলার দর নির্ধারণ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন একাধিক কাউন্সিলর। কী ভাবে ওই দর নেওয়া হয়েছে, তা-ও জানতে চান মেয়র পারিষদেরা। আলেচনায় সিদ্ধান্ত হয়, কোন কোন কোম্পানির কাছ থেকে ওই দর নেওয়া হয়েছে, তা-ও জানাতে হবে ডিজি (আলো)-কে। এ দিন মেয়র পারিষদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিরোধী দলনেত্রী সিপিএমের রূপা বাগচি বলেন, “ডিজি (আলো)-র একার সিদ্ধান্তে এত বড় কাজ হতে পারে না। তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়ে আসলে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।”
ত্রিফলা আলোর বরাতে অনিয়ম নিয়ে ইতিমধ্যেই পুর কমিশনার ও পুরসভার অর্থ দফতর কড়া মনোভাব নিয়েছে। বিষয়টি নগরোন্নয়ন দফতর পর্যন্ত গিয়েছে। নিজের দলের মধ্যেও মেয়র চাপে ছিলেন। এ দিন তাঁর ওই অনিয়মের কথা স্বীকার করে নেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। মেয়র এ দিন অনিয়মের কথা স্বীকারকরলেও, মেয়র পারিষদ (আলো) মনজার ইকবাল কিন্তু তাঁর দফতরের ডিজি-র কাজকর্মকেই সমর্থন করেছেন। মনজার বলেন, “প্রশাসনিক অনুমোদনের কোনও দরকার ছিল না। তাই অনুমোদন নেওয়া হয়নি।”
এ দিন মেয়র পারিষদের বৈঠকের শুরুতেই ত্রিফলা আলোর ‘অনিয়ম’ নিয়ে বাদানুবাদ শুরু হয়। পুর সচিবালয় সূত্রের খবর, প্রশাসনিক অনুমোদন ছাড়া কী ভাবে ২৭ কোটি টাকার কাজ পাঁচ লক্ষের কমে ভাঙা হল, তা নিয়ে ডিজি (আলো)র কাছে জানতে চান মেয়র। তড়িঘড়ি কাজ শুরুর জন্যই এমনটা হয়েছে বলে সাফাই দেন গৌতমবাবু। পুরসভার নিয়ম ভাঙার নির্দেশ তাঁকে কে দিয়েছেন জানতে চান একাধিক মেয়র পারিষদ। গৌতমবাবু ওই প্রশ্নের জবাব দেননি বলে পুরসভা সূত্রের খবর। তার পরেই তাঁকে কারণ-দর্শানোর নোটিস ধরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মেয়র জানিয়ে দেন, পুরো বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনিক তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছে কমিশনারকে।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.