|
|
|
|
এমডি-পদে রদবদল |
নয়া মেট্রোয় আবার জট বৌবাজারেই |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
প্রস্তাবিত পূর্ব-পশ্চিম মেট্রো রেলের যাত্রাপথে দত্তাবাদ ও সুভাষ সরোবরের সমস্যা মিটেছে। কিন্তু জট খুলল না বৌবাজারের। সেখানে ওই মেট্রোর জন্য যাঁদের সরে যাওয়ার কথা, প্রথমে রাজি হয়েও এখন তাঁরা বেঁকে বসেছেন। এরই মধ্যে নতুন মেট্রোর ভার কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রক থেকে রেল মন্ত্রকের হাতে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই মেট্রোর নতুন ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) সুব্রত গুপ্তকে সরিয়ে রাজ্যের পরিবহণসচিব বিপি গোপালিকাকে সেই দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে ফেলেছে কেন্দ্র। সুব্রতবাবুকে পরবর্তী জুট কমিশনার করার জন্য দিল্লির কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছে রাজ্য সরকার।
সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টর থেকে হাওড়া স্টেশন পর্যন্ত নতুন মেট্রোর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ২০১৬ সালে। এই কাজের জন্য বেঙ্গল কেমিক্যালের কাছে দত্তাবাদ, কাদাপাড়ার কাছে সুভাষ সরোবর এবং মধ্য কলকাতার বৌবাজার এলাকায় বেশ কিছু পরিবার ও দোকানকে উচ্ছেদ করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। কয়েক বছর ধরে এই নিয়ে টানাপোড়েন চলছিল। এর ফলে কাজও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
শেষ পর্যন্ত রাজ্যের নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের হস্তক্ষেপে দত্তাবাদ ও সুভাষ সরোবর এলাকার সমস্যা মিটতে চলেছে। সরকারি সূত্রের খবর, মে মাসে নগরোন্নয়নমন্ত্রী দত্তাবাদের উচ্ছেদ হওয়া ১৫০টি পরিবারকে পুনর্বাসন দেওয়ার জন্য বৈঠক করেন। সেই অনুসারে দত্তাবাদের কাছে বিদ্যাধরী বিদ্যালয়ের পাশে একটি জায়গা বরাদ্দ করে তাঁর দফতর। মেট্রো-কর্তৃপক্ষ সেখানে ৬০টি ফ্ল্যাট তৈরি করে দেবেন। পুনর্বাসন সংক্রান্ত জটিলতা কমাতে সেখানে মেট্রোর যাত্রাপথেরও কিছু হেরফের করা হয়েছে। সুভাষ সরোবরের সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দাদের পুনর্বাসন দেওয়ার জন্য কলকাতা পুরসভার সহযোগিতায় স্বভূমির কাছে একটি জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানে ৪০টি ফ্ল্যাট তৈরি করে দেবেন মেট্রো-কর্তৃপক্ষ।
দত্তাবাদ-সুভাষ সরোবরের সমস্যা মিটলেও বৌবাজারের জটিলতা কিন্তু অব্যাহত। মেট্রো সূত্রের খবর, বৌবাজারে লাইন পাতার জন্য ১.০৬ একর জমির মধ্যে প্রায় ৮৫% অধিগ্রহণ করে তাদের হাতে তুলে দিয়েছে রাজ্য। ওই অংশে থাকা বসতবাড়ি ও দোকান মিলিয়ে ১৫৩ জনকে পুনর্বাসন দিতে দু’টি জায়গা চিহ্নিত করা হয়। তার মধ্যে একটি জায়গায় বাড়ি তৈরি হয়ে গিয়েছে। অন্য জায়গায় অবশ্য নির্মাণকাজ শুরু হয়নি। কিন্তু যে-সব বাসিন্দার উঠে যাওয়ার কথা, তাঁরা প্রথম দিকে সরে যেতে রাজি হলেও এখন বেঁকে বসেছেন। ফলে সমস্যা মেটার কোনও লক্ষণ আপাতত নেই।
ওই বাসিন্দারা হঠাৎ বেঁকে বসলেন কেন?
এক সরকারি মুখপাত্র জানান, সম্প্রতি মেট্রোর যাত্রাপথ পরিবর্তনের প্রস্তাব আসায় বৌবাজারের ওই বাসিন্দারা এখন সরতে রাজি হচ্ছেন না। বর্তমান রুট অনুযায়ী বৌবাজারের উপর দিয়ে মেট্রোর লাইন যাওয়ার কথা। কিন্তু পরিবর্তিত প্রস্তাবে বৌবাজারকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এই ‘বিকল্প’ প্রস্তাব কতটা বাস্তবসম্মত, তা খতিয়ে দেখতে ‘রাইটস’-কে দিয়ে সমীক্ষা করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। এই অবস্থায় বৌবাজারের বাসিন্দারা এখন আর সরতে রাজি হচ্ছেন না বলে ওই মুখপাত্র জানান।
আবার যাত্রাপথ পরিবর্তন নিয়ে সরকারের অভ্যন্তরে বিরোধের জেরেই পূর্ব-পশ্চিম মেট্রো রেলের নতুন এমডি সুব্রতবাবুকে সরে যেতে হল বলে প্রশাসনের একাংশের অভিমত। রেল মন্ত্রক সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইচ্ছাতেই রদবদল করা হয়েছে। এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ভবিষ্যতে রেল মন্ত্রকের সঙ্গে সমন্বয় রেখে যাতে এগোনো যায়, সেই জন্যই ওই পদের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে রাজ্যের পরিবহণসচিব গোপালিকাকে। |
|
|
|
|
|