নিজস্ব সংবাদদাতা • দুবরাজপুর |
ব্যবসায়ী খুন এবং টাকা ছিনতাইয়ের প্রতিবাদে দুবরাজপুর পুরসভা এলাকায় ব্যবসা বনধ পালিত হল শুক্রবার। দুবরাজপুর ব্যবসায়ী সমিতির ডাকে ব্যবসা বনধের পাশাপাশি নিহত ব্যবসায়ী স্মরণে মৌনী মিছিলও করেন সমিতির সদস্যরা। তাঁদের দাবি, উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ-সহ প্রকৃত অপরাধীদের ধরতে হবে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার ভোরে ট্রেন ধরতে যাওয়ার পথে দুবরাজপুর ব্লক অফিসের কাছাকাছি দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তথা হার্ডওয়্যারের ব্যবসায়ী মৃণালকান্তি ওঝা (৪৫) ওরফে রামু। দুষ্কৃতীদের ছোড়া গুলিতে মারাত্মক জখম ওই ব্যবসায়ীর ভাইও। তিনি দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পালাবার আগে মৃণালবাবুর সঙ্গে থাকা টাকা ভর্তি অ্যাটাচি কেড়ে নেয় দুষ্কৃতীরা।
বৃহস্পতিবার ঘটে যাওয়া ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার প্রশ্ন উঠে। বৃহস্পতিবারই ঘটনার তদন্তে একে একে দুবরাজপুরে অসেন জেলা পুলিশ সুপার হৃষিকেশ মিনা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেবস্মিতা এবং পরে ডিআইজি (বর্ধমান রেঞ্জ) বাসব তালুকদার। ডিআইজি বলেছিলেন, “ওই ঘটনায় যুক্ত সন্দেহে রাজনগর থেকে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ তিন যুবককে আটক করেছে পুলিশ। তাঁদের জেরা করা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে ঘটনার কিনারা হবে।” তবে ওই ঘটনার সঙ্গে আদৌ আটক তিনজনের কোনও যোগ আছে কি না শুক্রবার পর্যন্ত স্পষ্ট করেনি পুলিশ।
ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি তথা দুবরাজপুর পুরসভার বিজেপি কাউন্সিলর সত্যপ্রকাশ তিওয়ারি বলেন, “পুলিশ সাত দিন সময় নিয়েছে। এই সময়ের মধ্যে ঘটনার কিনারা না হলে প্রতিবাদ আরও জোরালো করা হবে।” একই সুর এলাকার বিধায়ক ফরওয়ার্ড ব্লকের বিজয় বাগদির গলায়ও। তিনি বলেন, “সম্প্রতি দুবরাজপুরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে। অপরাধের পরিমান বেড়েছে। সাত দিনের মধ্যে পুলিশ ব্যবসায়ী খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের ধরতে না পারলে বিষয়টি বিধানসভায় তুলব।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আটক তিনজনকে পরে গ্রেফতার দেখানো হয়। শুক্রবার সিউড়ি আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক ধৃতদের ৫ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। ধৃতেরা হলেন শেখ জুহির (শ্বশুরবাড়ি দুবরাজপুরের মামুদপুরে) বাড়ি দুর্গাপুরে, দুবরাজপুরের সাজিনার বাসিন্দা শেখ সাদ্দাম ওরফে আক্কেল আলি এবং মামুদপুরের শেখ হাসিবুল।
পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছেন, রাজনগর এলাকায় কোনও অপরাধমূলক কাজের জন্য তাঁরা জড়ো হয়েছিলেন। জেলা পুলিশ সুপার হৃষিকেশ মিনা বলেন, “রাজনগর এলাকায় অপরাধমূল কাজের জন্য তাঁরা জড়ো হয়েছিল। তাঁদের সঙ্গে আরও কয়েকজন ছিল। তবে দুবরাজপুরের ঘটনার সঙ্গে তাঁদের যোগ রয়েছে কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” |