উত্তরপত্রের বেশ কিছু অংশ হুবহু এক। এত মিল হয় কী করে? তদন্ত করতে নেমে শেষমেশ ‘গণটোকাটুকির’ অভিযোগ উঠল হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় আড়াইশো ছাত্রছাত্রীর বিরুদ্ধে।
স্নাতক স্তরের ফাইনাল পরীক্ষা। নিয়মমাফিক পরীক্ষার একটি অংশ বাড়িতে বসেই দেওয়ার কথা। হার্ভার্ড স্কুল কর্তৃপক্ষের সন্দেহ, এ সময় বেশ কিছু সংখ্যক পড়ুয়া এক সঙ্গে বসে, একে অন্যের দেখে উত্তর লিখেছিল। তাদের মিলিত ‘প্রচেষ্টাতেই’ এই অবস্থা। স্নাতক স্তরের ডিন জে হ্যারিস বলছেন, “জ্ঞানত এমন ভয়াবহ কাণ্ডের কথা এর আগে ঘটেছে বলে মনে করতে পারছি না।”
খাতা দেখতে গিয়ে এক শিক্ষক দেখেন, বেশ কিছু উত্তরপত্রে বহু জায়গায় এক ধরনের উদ্ধৃতি ব্যবহার করা হয়েছে। তখনই তাঁর মনে সন্দেহ জাগে। এ ভাবে একসঙ্গে বসে পরীক্ষা দেওয়া একেবারেই নিয়মবিরুদ্ধ।
ঠিক কী ঘটেছে, তা জানতে তদন্তে নেমেছেন হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ। খতিয়ে দেখা হচ্ছে প্রত্যেক বিষয়ের পরীক্ষার খাতা। ডেকে পাঠানো হয়েছে, অভিযুক্ত পরীক্ষার্থীদের। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানার চেষ্টা হচ্ছে কেন এমন হল। বিজ্ঞান ও কলাবিভাগের ডিন মাইকেল স্মিথ বলেন, “শিক্ষাক্ষেত্রে সততা নিয়ে হেলাফেলা করা যায় না। না হলে ভবিষ্যতে শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম হবে।” দোষ প্রমাণ হলে অন্তত এক বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হতে পারে অভিযুক্ত পড়ুয়াকে। তবে অপরাধের গুরুত্ব অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হবে। অভিযোগ কম হলে শুধুমাত্র সতর্ক করেই ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি। তবে গোটা বিষয় নিয়ে হার্ভার্ডে যতই তোলপাড় হোক না কেন, অভিযুক্তদের নাম এখনই জানাতে চান না কর্তৃপক্ষ। এমনকী কোন বিষয়ের পরীক্ষায় এমন ঘটনা ঘটেছে, তা-ও প্রকাশ করতে চাননি তাঁরা। স্মিথ বলেন, “আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, অধিকাংশ পরীক্ষার্থীই প্রতিষ্ঠানের নিয়ম-নীতি মেনে, সততার সঙ্গে পরীক্ষা দিয়েছেন। কিছু পড়ুয়ার জন্য অসংখ্য মেধাবী ছাত্রের ভবিষ্যৎ যেন নষ্ট না হয়ে যায়।” হার্ভার্ডে সবে ভর্তি হয়েছেন মাইকেল জিমেট। বললেন, “হার্ভার্ড নামটা শুনলেই এমন একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা মাথায় আসে, যেখানে পড়াশোনাকে ভালবেসেই সবাই পড়তে যায়। সেখানে এমন, ভাবা যায় না!” |