পাকিস্তান সফরে যেতে আগ্রহী প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। কিন্তু তিনি মনে করেন, সেই সফরের জন্য দু’দেশের মধ্যে ‘প্রকৃত পরিবেশ’ গড়ে তোলার দায় রয়েছে ইসলামাবাদের।
জোট নিরপেক্ষ দেশগুলির শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে তেহরানে গিয়ে পাকিস্তানের উদ্দেশে এই বার্তা দিয়েই দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। গত কালই সে দেশের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারির সঙ্গে শীর্ষ বৈঠক করেছেন মনমোহন। ভারত বিরোধী সন্ত্রাস মোকাবিলায় পাকিস্তানকে যে হাতে কলমে কিছু করে দেখাতে হবে সে বিষয়ে বৈঠকে সরব হয়েছিলেন তিনি। আজ তেহরান থেকে ফেরার পথে বিশেষ বিমানে ইসলামাবাদ সম্পর্কে নিজের মন স্পষ্ট করে দিয়েছেন মনমোহন। তাঁর কথায়, “আমি পাকিস্তান সফরে যেতে খুবই আগ্রহী। আমায় যে আমন্ত্রণ করা হয়েছে সে জন্য কৃতজ্ঞও বটে। কিন্তু পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জারদারির কাছে আমি স্পষ্ট ভাবে জানিয়েছি যে আমাদের যথার্থ পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে।”
গতকালই নভেম্বর মাসে গুরু নানকের জন্মদিনে পাকিস্তানে যাওয়ার জন্য জারদারি আমন্ত্রণ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে। মনমোহন আজ জানান, “পাকিস্তানের মাটি থেকে ভারতের বিরুদ্ধে চলা জঙ্গি হানা বন্ধ করার জন্য তারা ঐকান্তিকএমন একটা প্রকৃত উপলব্ধি তো হওয়া চাই। মুম্বই সন্ত্রাসে অভিযুক্তদের মামলার বিষয়টির নিষ্পত্তি হওয়া এবং দোষীদের শাস্তি দেওয়ার বিষয়টি এই কারণেই পাকিস্তানের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক পরীক্ষা।”
গতকাল বৈঠকেই প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তান নেতৃত্বকে জানান, মুম্বই হামলা সংক্রান্ত মামলা নিয়ে সবরকম সহযোগিতা করতে ভারত প্রস্তুত। ইতিমধ্যেই একাধিক ডশিয়ার ইসলামাবাদকে দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও দেওয়া হতে পারে। যাতে এই মামলা দ্রুত শেষ হয় সেটাই ভারতের লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রী জারদারিকে জানিয়েছেন, পাকিস্তানের বিচারবিভাগীয় কমিশন মুম্বই এলে (আজমল কাসভ-সহ অন্যান্য প্রত্যক্ষদর্শীদের জেরা করার জন্য) ভারতের কোনও আপত্তি নেই। আজ প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, “প্রেসিডন্ট জারদারি এবং তাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রেহমান মালিক জানিয়েছেন যে আদালতের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার জন্য যা করা দরকার তাঁরা করছেন।” সন্ত্রাসের পাশাপাশি সার ক্রিকের সমাধানের কথাও জারদারিকে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মুম্বই সন্ত্রাসের প্রধান মস্তিষ্ক হাফিজ সঈদের প্রকৃত সাজা পাওয়ার বিষয়টিও যে ভারত হাল্কা ভাবে দেখছে না সে কথা স্পষ্ট করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, “ভারতের বিরুদ্ধে যে সন্ত্রাস হানবে তারই শাস্তি দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে কাউকেই ছাড়ার পক্ষপাতী নই আমরা।” |