রেলগেটের দাবি, অবরোধে সিপিএম
ত তিন দশকে ‘আমরা’ পারিনি, কিন্তু একযোগে কেন্দ্র-রাজ্য, রেল, পুরসভা, এসজেডিএতে ক্ষমতায় থেকে ‘ওঁরা’ কেন পারবে না! শহরের একটি রেলগেট তৈরির দাবিকে ঘিরে এমনই প্রশ্ন তুলে ট্রেন অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাল সিপিএম। বুধবার সকালে শিলিগুড়ির বাগরাকোটে ঘটনাটি ঘটেছে। স্থানীয় দুই সিপিএম কাউন্সিলরের নেতৃত্বে শিয়ালদহ থেকে আলিপুদুয়ারগামী কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস ওই এলাকায় প্রায় আধঘন্টা অবরোধ করে রাখা হয়। পরে রেল পুলিশ এসে অবরোধকারীদের সরিয়ে দিলে ওই লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। রেলগেট তৈরি নিয়ে রেল দ্রুত সিদ্ধান্ত না নিলে ভবিষ্যতে একই ধরণের বড় মাপের আন্দোলনেরও হুমকি দিয়েছে সিপিএম।
তবে এলাকার এই পরিস্থিতির জন্য সিপিএমই দায়ী বলে অভিযোগ করেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি বলেন, “ওঁদের একজন ২০ বছর পুরমন্ত্রী ছিলেন। দল ২৮ বছর পুরসভায় ক্ষমতায় ছিল। দিল্লিতে বন্ধু সরকার ছিল। কিছুই করতে পারেননি। উল্টে, রেলের সঙ্গে কথা না লাইনের দুই পাশে রাস্তাটি গায়ের জোরে খুলেছিল সিপিএম। আমাদের এখন সিপিএমের ‘পাপ’ ধুতে হচ্ছে। তাও আমি রেলমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। ওই এলাকায় কীভাবে কী করা যায় তা রেলের ইঞ্জিনিয়ারেরা দেখছেন।”
বাগরাকোটে সিপিএমের ট্রেন অবরোধ। ছবি: কার্তিক দাস।
গরিব মানুষের যাতায়াতের জন্য রাস্তা তৈরি করাটা যদি ‘পাপ’ হয়, তবে তা তিনি হাজারবার করতে রাজি বলে জানিয়েছেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। অশোকবাবু বলেন, “এলাকার মানুষের কাছে রাস্তাটি ভীষন জরুরি। বিগত দিনে নানা কারণ, যুক্তি দেখিয়ে বাগরাকোটে রেলগেট করা যাবে না বলে রেল জানিয়েছিল। আমরা তো অনেক চেষ্টা করেও তা পারিনি। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস তো এখন সর্বত্র ক্ষমতায় রয়েছে। কেন্দ্র, রাজ্য, পুরসভা বা এসজেডিএ শুধু নয়, রেল মন্ত্রকও ওঁদের হাতে। তাহলে কেন বাগরাকোট মত এলাকায় মানুষের সমস্যার সমাধান হবে না। ১৫ মাস তো হয়ে গেল তৃণমূল নেতারা কী করছেন?” বাগরাকোটের ওই এলাকাটির একেবারেই পাশেই রয়েছে শিলিগুড়ি টাউন স্টেশন। রেল সূত্রের খবর, নিয়ম মাফিক, এলাকাটি টার্মিনাল এলাকায় বলে চিহ্নিত। টার্মিনাল এলাকায় কোনও রেলগেট তৈরি করা যায় না। সেই কারণেই ফুলেশ্বরী এবং ডাঙিপাড়ায় রেলগেট তৈরি হয়। আন্ডারপাসের ক্ষেত্রে এলাকায় একটি হাইড্রেনের সমস্যা রয়েছে। আন্ডারপাস তৈরি হলে নর্দমার জল আন্ডারপাসে ঢুকে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই ক্ষেত্রে কোনওটিই করা সম্ভব নয়। একমাত্র এলাকা থেকে কিছুটা দূরে ইন্ডোর স্টেডিয়ামের কাছে আন্ডারপাস করা যেতে পারে। কিন্তু সেখানে আন্ডারপাস, রাস্তা মিলিয়ে উচ্ছেদের প্রশ্ন রয়েছে। ওই রাস্তাটি একাধিকবার রেলের তরফে খুঁটি গেড়ে বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা হলেও এলাকার সিপিএম তাতে বাঁধা দেয় বলে অভিযোগ। সিপিএম নেতাদের দাবি, ফ্লাইওভার তৈরি হলে তার নিচে রেলগেট হয় না। সেখানে মহাবীরস্থানে দুটি রেলগেট তৃণমূলের আমলে খোলা হয়েছে। প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোকবাবু বলেন, “মনে হয় বিধানসভা ভোটের কথা ভেবেই তৃণমূলের মন্ত্রী, নেতারা আইনকে সরিয়ে রেখে ওই রেলগেট খোলার ব্যবস্থা করে। তাহলে এই ক্ষেত্রেও নয় ভোটের কথা ভেবেই তৃণমূল নেতারা রেলগেট করুক। আমাদের কোনও আপত্তি নেই।” এর উত্তরে মন্ত্রী গৌতমবাবু বলেন, “মাত্র ১৫ মাসেই অশোকবাবুরা এত অস্থির, চঞ্চল হয়ে উঠছেন কেন বুঝি না। তিন দশকে তো পারেননি। মানুষের সমস্যার আমরা সমাধান করবই।” এলাকার রেললাইনের একপাশে রয়েছে পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ড। অন্যপাশে ২৮ এবং ২৯ নম্বর ওয়ার্ড। প্রথমটি দীর্ঘদিন সিপিএমের দখলে থাকলেও বর্তমানে তৃণমূলের দখলে। পরের দুটি ওয়ার্ড এখনও সিপিএমের দখলেই রয়েছে। এলাকার বাসিন্দাদের বক্তব্য, বাগরাকোটে রাস্তাটি বন্ধ হলে মহাবীরস্থান নইলে ফুলেশ্বরী দিয়ে ঘুরপথে যাতায়াত করতে হবে। এতে বহু সময় বেশি লাগবে। সেখানে রেলগেট তৈরি হলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষ চলাচল বন্ধ হয়ে সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.