|
|
|
|
মুখ্যমন্ত্রীর সভায় ‘বিচার’ চাইতে এলেন মহিলা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বহরমপুর |
ব্যারাক স্কোয়ার ময়দানে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় ‘দিদিমণি বিচার চাই’ লেখা পোস্টার নিয়ে বুধবার গিয়েছিলেন এক মহিলা। তাঁর দাবি, তাঁকে ধর্ষণ করেছে স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার ছেলে ও এলাকার এক তৃণমূল কর্মী। কিন্তু পুলিশের কাছে সে বিষয়ে অভিযোগ করার পরে প্রায় দু’মাস কেটে গিয়েছে, এখনও অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়নি। তিনি বলেন, “তাই সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর কাছেই বিচার চাইতে গিয়েছিলাম।”
তবে মুখ্যমন্ত্রী তখনও বহরমপুরে আসেননি। তার আগেই ওই পোস্টার নজরে পড়ে প্রশাসনের। পুলিশ-প্রশাসন ওই মহিলার হাত থেকে পোস্টার কেড়ে নেয় ও তাঁকে সভাস্থল থেকে সরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী বলেন, “ওই মহিলাকে সভাস্থল থেকে সরিয়ে দেওয়া থেকেই প্রমাণিত মুখ্যমন্ত্রী মহিলা হওয়া সত্ত্বেও তিনি এবং তাঁর পুলিশ বাহিনী ধর্ষিতা মহিলার পাশে দাঁড়ান না। তার প্রমাণ মিলেছিল পার্কস্ট্রিট কাণ্ডে। বহরমপুর কাণ্ড ফের তা প্রমাণ করল।” অধীরের কথায়, “এই মুখ্যমন্ত্রী কয়েক দিন আগে ‘বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে’ বলে বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বিচারব্যবস্থার বিরুদ্ধে কটাক্ষ করেছিলেন। কিন্তু বিচারের বাণী যে নিভৃতেই কাঁদে তা মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।” তবে মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “এই দিন মুখ্যমন্ত্রীর সভায় এমন কোনও ঘটনা ঘটেছে বলে আমার জানা নেই।” তৃণমূলের বহরমপুর ব্লক (পূর্ব) সভাপতি সন্তোষ দাস অবশ্য বলেন, “সবটাই সাজানো ঘটনা। রাজনৈতিক কারণেই বিরোধীদের উস্কানিতেই ওই পরিবার মিথ্যা অভিযোগ তুলছে। এলাকায় তৃণমূলের প্রভাব বাড়ছে, তা সহ্য করতে না পেরেই দলের নেতা-কর্মীদের নামে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে।” তিনি বলেন, “ওই মহিলা চেয়েছিলেন সভাস্থলে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করতে।”
মুখ্যমন্ত্রী এদিন কৃষ্ণনগর থেকে ব্যারাক স্কোয়ার ময়দানে এসে পৌঁছান বিকেল ৪টে ১০ মিনিটে। তার আধ ঘন্টা আগেই অবশ্য ওই মহিলাকে মঞ্চের কাছ থেকে অনেক দূরে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। বহরমপুর হরিদাসমাটি এলাকার ওই মহিলা বলেন, “মাস খানেক আগে এলাকার তৃণমূল নেতার ছেলে আমায় ধর্ষণ করে। ওই ঘটনা জানিয়ে বহরমপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা সত্ত্বেও পুলিশ তাদের ধরছে না। তাই দিদির কাছে বিচার চাইতে এদিন মাঠে যাই। সেখানে মঞ্চের কাছে দর্শকদের বসার জায়গায় প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়েছিলাম, যাতে দিদির চোখে পড়ে। কিন্তু মাঠে দিদি আসার আগেই পুলিশের লোকজন আমার কাছ থেকে জোর করে প্ল্যাকার্ড কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলে। গোটা বিষয়টি জানিয়ে লিখিত অভিযোগও নিয়ে এসেছিলাম দিদিকে দেব বলে। পুলিশ তাও কেড়ে নেয়।” হরিদাসমাটি অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি বৃন্দাবন মণ্ডল বলেন, “ধর্ষণের কোনও ঘটনাই ঘটেনি। ওই পরিবার কংগ্রেস করে। তাই ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগ করে আমার ছেলেকে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে।” পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “ওই মহিলা অভিযোগ করার পরে যা যা করণীয়, পুলিশ তার সবই করেছে। তাঁর ডাক্তারি পরীক্ষা হয়েছে। তাঁর গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। কিন্তু অভিযুক্তেরা পলাতক। বেশ কয়েকবার অভিযানের পরেও তাদের ধরা যায়নি।” |
|
|
|
|
|