|
|
|
|
পশ্চিম মেদিনীপুর |
কিসান ক্রেডিট কার্ড বিলিতে তৎপরতা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
সম্প্রতি জঙ্গলমহল সফরে এসে দু’মাসে ন্যূনতম এক লক্ষ কিসান ক্রেডিট কার্ড বিলির নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই নির্দেশ কার্যকর করতে উদ্যোগী হল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রে খবর, দ্রুত জেলার বিভিন্ন প্রান্তে শিবির করে কিষাণ ক্রেডিট কার্ড বিলি করা হবে। এই কার্ড সম্পর্কে সাধারণ কৃষকদের বোঝাতে, তাঁদের উৎসাহী করতে ছাপানো হয়েছে পোস্টারও। অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) অরিন্দম দত্ত বলেন, “চেষ্টা করছি যাতে দু’মাসের মধ্যে অন্তত এক লক্ষ পরিবারকে কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের আওতায় আনা যায়। পরিবার পিছু একটি করে কার্ড দেওয়ার উদ্যোগ করা হচ্ছে। কৃষি দফতর, ব্যাঙ্ক ও ব্লক প্রশাসনকে এ বিষয়ে লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে দেওয়া হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতেও বলা হয়েছে।”
একদিকে ব্যাঙ্ক ও অন্যদিকে জেলা প্রশাসন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে দু’পক্ষই তৎপর হয়েছেন। প্রতিটি ব্লককে লক্ষ্যমাত্রাও স্থির করে দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে শিবির করে কার্ড বিতরণ করারও পরিকল্পনাও হয়েছে। রাজ্য সরকার চাইছে প্রতিটি কৃষক পরিবার পিছু অন্তত একটি হলেও যেন কিসান ক্রেডিট কার্ড থাকে। সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
কৃষকদের মহাজনী ব্যবস্থা থেকে মুক্তি দিতে এবং কম সুদে কৃষকদের প্রয়োজনীয় ঋণের বন্দোবস্তো করতেই কিষাণ ক্রেডিট কার্ড দেওয়ার পরিকল্পনা করে সরকার। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী বর্তমানে পশ্চিম মেদিনীপুরে ২ লক্ষ ৯৯ হাজার ৬৩৮ জনকে কিষাণ ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হয়েছে। আর জেলায় কৃষিকাজে যুক্ত মানুষের সংখ্যা ৮ লক্ষের কাছাকাছি। তাহলে এখনও কেন বাকিদের কিষাণ ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হয়নি? প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছু চাষি আর্থিক সঙ্গতি সম্পন্ন হতেই পারেন। যাঁদের ঋণ নিয়ে চাষ করার প্রয়োজন নেই। কিন্তু বেশিরভাগ চাষিকেই ঋণ নিতে হয়। তাঁদের অনেকেই এখনও মহাজনী প্রথার কবলে পড়েন। কিন্তু কেন এটা হচ্ছে? সম্প্রতি ঝাড়গ্রাম সফলে এসে এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীই। তারপরই তিনি নির্দেশ দেন, দু’মাসের মধ্যে কমপক্ষে ১ লক্ষ পরিবারকে এই কার্ড দিতে হবে। এবং তারপর ধীরে ধীরে প্রতিটি কৃষক পরিবারের হাতেই এই কার্ড তুলে দিতে হবে। প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, নির্দিষ্ট সময়ে ঋণ পরিশোধ করলে মাত্র ৪ শতাংশ হারে সুদ দিতে হয়।
পশ্চিম মেদিনীপুরে আলু চাষ হয় বেশি। এই চাষে খরচও বেশি। তাই ঋণের পরিমাণও বেশি। কিসান ক্রেডিট কার্ড থাকলে একর প্রতি একজন চাষি ৪৫ হাজার টাকা ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পেতে পারেন। আমন ধানের ক্ষেত্রে একর প্রতি ১৬ হাজার ২০০ টাকা, বোরো ধানে ২১ হাজার ৪০০ টাকা, বাদাম চাষে ১৭ হাজার টাকা এ ভাবে ফসল পিছু কত ঋণ দেওয়া হয় তার তালিকাও রয়েছে। এ ছাড়া কার্ড থাকলে সহজে শস্য বিমাও পাওয়া যায়। লিড ব্যাঙ্ক ম্যানেজার অরবিন্দ মহাপাত্র বলেন, “কোনও কৃষক যদি একাধিকবার ঋণ নিয়ে ঠিক সময়ে পরিশোধ করেন তাহলে সরকার নির্ধারিত ঋণের দ্বিগুণ অর্থও ঋণ দিয়ে সাহায্য করা হয়। সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক ম্যানেজার নিজের ক্ষমতাতেই তা করতে পারেন। চাষিরা যাতে এই সুবিধে পান, চেষ্টা চালাচ্ছি।” |
|
|
|
|
|