নজরে পঞ্চায়েত নির্বাচন
পশ্চিমে ‘ঘুরে দাঁড়াতে’ লিফলেট সিপিএমের
‘পাখির চোখ’ পঞ্চায়েত নির্বাচন। এখন থেকেই পশ্চিম মেদিনীপুরে তার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে সিপিএম। জোর দেওয়া হচ্ছে বাড়ি বাড়ি প্রচারে। এ জন্য বিশেষ লিফলেটও ছাপিয়েছে দল। ছাপানো লিফলেটের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। ৭ লক্ষ ৬০ হাজার।
এর আগে ১৯৯৬ সালে এ ভাবেই বাড়ি বাড়ি লিফলেট বিলি হয়েছিল। আবার নতুন করে পুরনো পথে হাঁটা কেন? সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার বলেন, “নতুন পরিস্থতি তৈরি হয়েছে। তা ছাড়া, কমিউনিস্টদের কাজই হল মানুষের কাছে সঠিক বার্তা পৌঁছে দেওয়া। মানুষ তাঁর জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেবেন।” সিপিএম নেতৃত্বের মতে, জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় এখনও পরিস্থিতি ‘প্রতিকূল’। তাই ছোট ছোট কর্মসূচির উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। লিফলেট বিলিও তেমনই একটি কর্মসূচি।
এ ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথকে সঙ্গী করেই এগোতে চাইছে দল। জেলা সিপিএমের পক্ষ থেকে প্রচারিত লিফলেটের শেষ দিকে লেখা হয়েছে, ‘আসুন আমরা বিপদের হাত থেকে নিজেদের ও রাজ্যবাসীকে বাঁচাতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাণী স্মরণ করে প্রতিবাদ-প্রতিরোধের আরও বড় আন্দোলন গড়ে তুলি।’ তারপরই বিশ্বকবির পংক্তি ‘মুহূর্ত তুলিয়া শির একত্র দাঁড়াও দেখি সবে, যার ভয়ে তুমি ভীত সে অন্যায় ভীরু তোমা চেয়ে, যখনি জাগিবে তুমি তখনি সে পলাইবে ধেয়ে।’ চলতি মাসের মধ্যেই বাড়ি বাড়ি এই লিফলেট পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা নেতৃত্ব। এ জন্য একেবারে শাখা কমিটি স্তর পর্যন্ত দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।
ঠিক কী লেখা হয়েছে লিফলেটে? গোড়াতেই গত বিধানসভা নির্বাচনে বামফ্রন্টের বিপর্যয়ের কারণ সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তারপর গত দেড় বছরে কেন্দ্র ও রাজ্যে কী চলছে, তার বিবরণ। সব শেষে জনস্বার্থ বিরোধী কাজকে প্রতিহত করতে জনগণকেই এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে। লিফলেটের শুরুতে লেখা হয়েছে, ‘বামপন্থীদের বিরুদ্ধে নানা বিভ্রান্তিকর প্রচার, বামফ্রন্ট সরকারের কাজের কিছু দুর্বলতা ও আমাদের পার্টির কিছু ত্রুটিতে ক্ষুব্ধ হয়ে দীর্ঘদিন বামপন্থীদের সঙ্গে থাকা একাংশ মানুষ সরকারের পরিবর্তন চেয়েছিলেন। তাঁরা একদিকে আমাদের ত্রুটি ধরিয়ে দিতে, অন্য দিকে বিরোধীদের একবার সুযোগ দিতে চেয়েছিলেন।’ কিন্তু এই আশা পূর্ণ হয়নি বলেই সিপিএমের অভিমত। তাই লিফলেটে লেখা হয়েছে, ‘রাজ্যে কী দেখছি আমরা? গ্রামের সরকার পঞ্চায়েতের প্রায় সব ক্ষমতাই কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ওদের তুমুল গোষ্ঠী দ্বন্দ্বে মানুষের জীবন নাজেহাল হয়ে উঠেছে।’ সেই সঙ্গে রয়েছে আত্মশুদ্ধির কথা। লিফলেটে লেখা হয়েছে, ‘পার্টিকে ত্রুটিমুক্ত রাখার ধারাবাহিক প্রক্রিয়া কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে। মানুষ আমাদের যে ভাবে দেখতে চান, তার যোগ্য হয়ে ওঠার জন্য আমরা সব দিকে প্রয়াস নিয়েছি।’
রয়েছে মাওবাদী-প্রসঙ্গও। তৃণমূলকে দুষে লিফলেটে লেখা হয়েছে, ‘মাওবাদী সমস্যা সমাধানে বামফ্রন্ট সরকারের সর্বাত্মক উদ্যোগকে বানচাল করতে যৌথ বাহিনী প্রত্যাহারের দাবিতে সোচ্চার হয়েছিল তৃণমূল। সরকারে এসে কী করছে ওরা? যৌথ বাহিনী কি সরানো হয়েছে? জনসাধারণের কমিটির নেতা-কর্মীরা এখন কোন দলে যোগ দিয়েছে?’ মানুষ এ সব বিচার-বিশ্লেষণ করবেন বলেই আশা সিপিএম নেতৃত্বের।
শুধু বাড়ি বাড়ি প্রচার নয়, জোনাল কমিটি স্তরে দলীয় নেতাদের কাজের পর্যালোচনাও শুরু হয়েছে। এ জন্য বৈঠক হচ্ছে। সোমবার রাতে মেদিনীপুর শহর জোনাল স্তরে এক বৈঠক হয়েছে। ছিলেন দলের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার, জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বিজয় পাল প্রমুখ।
এই ভাবে কি এক সময়ের ‘লালদুর্গ’ পশ্চিম মেদিনীপুরে ‘ঘুরে দাঁড়াতে’ পারবে সিপিএম? সময়েই মিলবে জবাব।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.