হলদিয়া পেট্রোকেমের ভবিষ্যৎ ঠিক করতে চার মন্ত্রীর কমিটি
র্থিক অনটন ও আইনি বিবাদে জর্জরিত হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস-এর ভবিষ্যৎ দিশা ঠিক করতে বিশেষ কমিটি গড়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চার মন্ত্রীকে নিয়ে গঠিত এই কমিটির শীর্ষে রয়েছেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। অন্য তিন সদস্য শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও বিদ্যুৎমন্ত্রী মণীশ গুপ্ত। এক মাসের মধ্যে এই কমিটির একটি রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এক সময় যা ছিল রাজ্যের ‘শো-কেস’ প্রকল্প, এখন তা আর্থিক অনটনে ধুঁকছে। সেই আর্থিক দায়ভার থেকে মুক্ত হওয়ার পথ খুঁজতেই এই কমিটি গড়া হয়েছে। বুধবার 5-CAB-SECTT/GOM শিরোনামে একটি সরকারি নির্দেশ জারি করা হয়। রাজ্য সরকার আগেই জানিয়েছে, সংস্থা চালানোর ক্ষেত্রে সরকারি ভূমিকা হ্রাস করার পক্ষপাতী তারা। রাজ্য সরকারের বর্তমান ঘোষিত অবস্থান হল, হলদিয়ায় রাজ্যের অংশ নিলামে তোলা হবে। যদিও সংস্থার অন্যতম প্রধান শরিক চ্যাটার্জি গোষ্ঠী বরাবরই নিলামের বিরোধী।
এখন প্রশ্ন, সরকার কি নিজের পথে এগোতেই এই কমিটি গঠন করল? সুব্রতবাবু বলেন, “আমরা আপাতত সংস্থার ভালমন্দ নিয়ে পরামর্শ দেব। তার পর মুখ্যমন্ত্রী সব দিক বিবেচনা করে যা ভাল বুঝবেন করবেন।” একই সঙ্গে তিনি জানান, এই কমিটি গড়ে তাকে সংস্থার মাথায় বসিয়ে দেওয়া হল, এমন মনে করার কোনও কারণ নেই।
বিতর্ক সত্ত্বেও সরকার কেন নিলামে যেতে চাইছে? টুজি কেলেঙ্কারির পরে রাজ্য সরকার মনে করছে, সরকারি সম্পত্তি হস্তান্তর করার সবচেয়ে ভাল পদ্ধতি হচ্ছে নিলাম। সম্প্রতি কয়লা ব্লক নিয়ে বিতর্কের জেরেও এই যুক্তিটাই জোরালো হয়েছে। তাই পশ্চিমবঙ্গ সরকারও নিলাম করার পক্ষে সওয়াল করতে এই যুক্তি ব্যবহার করতে পারে। তবে গোটা বিষয়টি নিয়ে চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনা করেই এগোতে হবে। নচেৎ নতুন আইনি বিতর্ক শুরু হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে।
এই কমিটি নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে চায়নি চ্যাটার্জি গোষ্ঠী। তবে তাদের মুখপাত্র জানান, বাম সরকারের আমলেও উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব ছিল। প্রস্তাবিত কমিটিতে তিন জন সদস্য থাকার কথা ছিল। রাজ্য সরকার ও চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে এক জন সদস্য এবং সরকার মনোনীত এক জন ‘আর্বিট্রেটর’। তবে তৎকালীন সরকার পিছিয়ে যাওয়ায় এই প্রস্তাব কার্যকর করা যায়নি।
ঘটনাচক্রে, এ বারের কমিটিতে সব ক’জনই সরকারের প্রতিনিধি। সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের প্রশ্ন, তাঁরা কি সরকারের অংশ নিলামের পরিবর্তে চ্যাটার্জি গোষ্ঠীকে বিক্রি করার পরামর্শ দেবেন রাজ্য সরকারকে? বস্তুত, এই নিয়ে চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় আগেই নিজের মনোভাব জানিয়েছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন, সরকারের অংশ যদি তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয়, তা হলে সেই ‘শেয়ারের’ মূল্যায়ন করা হোক। আর সেই মূল্যায়ন করুক কোনও পেশাদার সংস্থা। তৃণমূল সরকার প্রথমে এ ব্যাপারে সহমত হলেও পরে সেই অবস্থান থেকে সরে আসে।
চ্যাটার্জি গোষ্ঠী এখন মনে করছে, স্বচ্ছতা এবং সঠিক দামের কথা মাথায় রাখলে নিলামের থেকে সরাসরি শেয়ার বাজারে গেলে তা অনেক বেশি যুক্তিযুক্ত হবে। তাদের যুক্তি, শেয়ার বাজারে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার শেয়ারের দাম নিয়ে এখনও কোনও অভিযোগ ওঠেনি। বরং নিলামের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা তুলনামূলক ভাবে কম হওয়ার সম্ভানা। শেয়ার বাজারে ক্রেতার সংখ্যাও অনেক বেশি। তা ছাড়া, নতুন শেয়ার যখন বাজারে আসে, তখন ক্রেতাদের আগ্রহ যাচাই করে নিলামের পদ্ধতিতেই সেই শেয়ারের দাম ঠিক হয়। সরাসরি নিলামে কিন্তু আমজনতা যোগ দিতে পারে না। এবং সেখানে যে হেতু ক্রেতার সংখ্যা কম থাকে, তাই দামকে প্রভাবিত করার আশঙ্কাও থেকেই যায়। এই যুক্তিতেই সরকারি সংস্থার অংশ শেয়ার বাজারের মাধ্যমেই এত দিন বিক্রি করা হয়েছে।
তবে নিলাম না শেয়ার বাজার, কোন রাস্তায় হাঁটা হবে, তা এখনও আলোচনার টেবিলে আসেনি।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.