রাজ্য ফুটবল সংস্থার অপদার্থতায় টোলগে-জট নিয়ে আবার অনিশ্চয়তার কালো মেঘ ঘুরপাক খেতে শুরু করে দিল ময়দানে। বিতর্কের রেশ এতটাই লম্বা যে এ বার সংকটের মুখে খোদ কলকাতা ফুটবলের ভবিষ্যৎ।
মঙ্গলবার যখন টোলগে-জট খোলা নিয়ে কিছুটা আলো দেখা যাচ্ছিল, তখনই ম্যাচ পিছনো নিয়ে নতুন বিতর্কে জড়িয়ে পড়ল আইএফএ। আর এখানেই বেজায় চটেছে ইস্টবেঙ্গল। প্রশ্ন উঠছে, পুলিশের আপত্তি না থাকা সত্ত্বেও কেন লিগের চারটে ম্যাচ পিছিয়ে দেওয়া হল? ইস্টবেঙ্গলের প্রধান কর্তা দেবব্রত সরকার তো হুমকিও দিয়ে রাখলেন, “ম্যাচ পিছনোর সঠিক কারণ ব্যাখা না করা পর্যন্ত আমরা আইএফএ-র কোনও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করব না।” বুধবার আইএফএ-কে মেল করে ইস্টবেঙ্গল এই কথা জানিয়েও দিয়েছে। |
টোলগে ইস্যু নিয়ে অবিচারের দাবি তুলে এত দিন আইএফএ-র বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেছিল মোহনবাগান। চিঠির খেলা, বয়কট সবই অবাধে চলেছে। কিন্তু এ বার আইএফএ-র ম্যাচ পিছনোকে কেন্দ্র করে দৃশ্যপট পুরো একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে গেল। মোহনবাগানের জায়গায় উল্টে এ বার ইস্টবেঙ্গলের ক্ষোভের মুখে রাজ্য ফুটবল সংস্থা। কেননা, ম্যাচ পিছনোর মধ্যে ষড়যন্ত্রের গন্ধ লেপ্টে আছে বলে মনে করা হচ্ছে। ময়দানের কোনও কোনও মহল থেকে কথা উঠছে, কলকাতা লিগে মোহনবাগানের প্রথম ম্যাচে টোলগেকে খেলানোর জন্যই নাকি ম্যাচ পিছনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইএফএ। যদিও আইএফএ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায় এখনও তাঁর বক্তব্যে অনড়। মুম্বই থেকে বুধবার উৎপলবাবু বললেন, “কোনও ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।”
ভুল বোঝাবুঝি হোক কিংবা ইচ্ছাকৃত, আইএফএ-র হঠকারী সিদ্ধান্তের প্রভাব যে পড়তে চলেছে টোলগে-জটের ওপর, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। আর টোলগে ইস্যু পিছোলে, কমে যাবে লিগে দুই প্রধানের খেলার সম্ভাবনাও। কেননা, এ বার মোহনবাগানের মতো ইস্টবেঙ্গলও তাদের দাবিতে অনড়। অর্থাৎ পরিস্থিতি এখন যে দিকে এগোচ্ছে, তাতে আইএফএ দ্রুত কোনও সিদ্ধান্ত না নিলে, বড় সমস্যায় পড়বে কলকাতার ফুটবলই। প্রায় তিন মাস ধরে চলা টোলগে মহা-এপিসোড কোন দিকে মোড় নেয়, সেটা শুক্রবারই পরিষ্কার হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। ইস্টবেঙ্গলের কার্যকরী কমিটি-র সভায়। যেখানে আসার কথা ছিল টোলগেরও। কিন্তু আইএফএ-র নতুন সিদ্ধান্তের পর এ বার ইস্টবেঙ্গল ‘ধীরে চলো নীতি’ নিলে অবাক হওয়ার কোনও কারণ থাকবে না! মোহনবাগানের অবশ্য দাবি, ‘ম্যাচ পিছনো বিতর্কে’ তাদের কোনও ভূমিকা নেই। বরং ক্লাবের অর্থ সচিব দেবাশিস দত্ত বললেন, “আমাদের যদি এতই ক্ষমতা থাকত, তা হলে লিগের প্রথম দু’টো ম্যাচে ছ’পয়েন্ট নষ্ট করতাম না।” |