|
|
|
|
জিটিএ আদল |
রাজ্যে আদিবাসী পরিষদ চায় জেএমএম |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রাঁচি ও পুরুলিয়া |
গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ)-এর আদলে এবার দক্ষিণবঙ্গের পাঁচটি জেলার আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলের জন্য ‘স্বশাসিত আদিবাসী এলাকা উন্নয়ন পর্ষদ’ চাইছে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম)। আলোচনার পথে দাবি আদায় না-হলে দক্ষিণবঙ্গের আদিবাসী অধ্যুষিত পাঁচটি জেলায় ধারাবাহিক আন্দোলন চালানোর প্রস্তুতিও নিচ্ছে জেএমএম। মূলত এই দাবিকে সামনে রেখে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে নিজেদের জায়গা করে নেওয়াই জেএমএমের লক্ষ্য।
এই বিষয়ে দলীয় কর্মসূচি ঠিক করতে আগামী ২১ সেপ্টেম্বর পুরুলিয়ায় ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার কেন্দ্রীয় কার্যকরি সমিতির বৈঠক বসছে। জেএমএমের কেন্দ্রীয় কমিটির মুখপাত্র সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, “উত্তরবঙ্গের গোর্খাদের জন্য জিটিএ গঠন করা গেলে দক্ষিণবঙ্গে ‘আদিবাসী এলাকা উন্নয়ন পর্ষদ’ গঠনে আপত্তি কোথায়!” প্রসঙ্গত জেএমএম নেতৃত্ব জানিয়েছেন, ‘বৃহত্তর ঝাড়খণ্ড’ গঠনের দাবিতে তাদের আন্দোলন চলছে দলের জন্মলগ্ন থেকেই। জেএমএমের মুখপাত্র সুপ্রিয়বাবু বলেন, “আমাদের মূল দাবি ‘বৃহত্তর ঝাড়খণ্ড’ গড়া। ওই দাবির সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই এখন পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণবঙ্গের পাঁচটি জেলার আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল নিয়ে ‘স্বশাসিত উন্নয়ন পর্ষদ’ গঠনের দাবি তোলা হচ্ছে।” জেএমএম সূত্রের খবর, বোকারোয় দলের সদ্য সমাপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির দু’দিনের বৈঠকেও এ নিয়ে বিশদে আলোচনা হয়েছে। উন্নয়ন পর্ষদ গঠনের দাবিকে সামনে রেখে পশ্চিমবঙ্গের আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলে জেএমএমের সংগঠন মজবুত করার কর্মসূচিও হাতে নেওয়া হয়েছে।
জেএমএম নেতৃত্ব জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গের পাহাড় থেকে সাগর--সব জেলাতেই কম বেশি আদিবাসী জনগোষ্ঠী ছড়িয়ে আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আদিবাসী বসতি রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়া জেলায়। এ ছাড়াও বর্ধমান এবং বীরভূম জেলাতেও জনজাতি অধ্যুষিত কয়েকটি অঞ্চল রয়েছে। ওই পাঁচটি জেলার আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল নিয়ে ‘আদিবাসী এলাকা উন্নয়ন পর্ষদ’ গঠনের দাবি তোলা হচ্ছে বৃহত্তর ঝাড়খণ্ড গঠনের লক্ষ্য নিয়ে।
জেএমএমের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি নিমাই মাহাতো জানিয়েছেন, ২১-২২ সেপ্টেম্বরের ওই বৈঠকে মূলত পশ্চিমবঙ্গে দলের সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যেই বিশদ কৌশল ঠিক করা হবে। উল্লেখ্য, একটা সময় রাজ্যের আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় জেএমএম তাদের সংগঠন তৈরি শুরুও করেছিল। তাতে নিজেদের যাত্রাপথ খুব মসৃণ করতে না পারলেও, অন্যের যাত্রা ভঙ্গের ক্ষমতা তাদের ছিল। ২০০৯ সালে পুরুলিয়া লোকসভা আসনে জেএমএম প্রার্থী প্রায় ২৮ হাজার ভোট টেনে ভোটের পাটিগণিত এলোমেলো করে দেয়।
কিন্তু গত কয়েক বছরে আদিবাসী এলাকায় মাওবাদী সংগঠনের রমরমায় অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে জেএমএম। রাজ্যে তাদের দলও বহুধা বিভক্ত। দলের একদা সভাপতি, অজিত মাহাতো দল ছেড়ে গিয়ে রাজ্যে বাবুলাল মরান্ডির জেভিএমে যোগ দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে আন্দোলনের বাতাবরণ তৈরি করে দলকে চাঙ্গা করাই আপাতত তাদের প্রাথমিক লক্ষ্য। |
|
|
|
|
|