প্রাক্তন প্রেমিককে খুনের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল এক তরুণীর। এ কাজে সাহায্য করার দায়ে তার এক বান্ধবী এবং বন্ধুরও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে বর্ধমান আদালত। বুধবার বর্ধমানের ফাস্ট ট্র্যাক থার্ড কোর্টের বিচারক দেবাশিস ঘোষ এই সাজা ঘোষণা করেন। আগের দিনই এই তিন জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল।
সরকারি আইনজীবী সদন তা জানান, সাজাপ্রাপ্তদের নাম সাবিনা শবনম, সেলিমা খাতুন ও ওহিদ আলি। পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে, সাবিনার সঙ্গে মহম্মদ সিদ্দিকি নামে এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু পরে সাবিনার সঙ্গে ওহিদের সম্পর্ক তৈরি হয়। সাবিনা ও সেলিমার বাড়ি মেমারির তাতারপুর ও ইলামডাঙায়। ওহিদের বাড়ি জামালপুরের রওড়া গোপালপুরে। |
পুলিশ জেনেছে, ২০১১-এর ফেব্রুয়ারিতে সিদ্দিকিকে খুনের ছক কষে ওই তিন জন একটি বড় গাড়িতে চড়ে বোলপুরে বেড়াতে যায়। সেখানে গিয়ে তারা মুর্শিদাবাদের সালারের বাসিন্দা সিদ্দিকিকে ডেকে পাঠায়। বোলপুরে দিন দুয়েক সিদ্দিকির সঙ্গে ছিল সাবিনা। তার পরে তাঁকে নিয়ে বর্ধমানের দিকে ফিরছিল। সঙ্গে ওই গাড়িতেই ছিল সেলিমা ও ওহিদ। তালিত গেটের কাছে ওহিদ ‘ঘুম পেয়েছে’ বলে গাড়ির পিছনে চলে যান। মাঝের সিটে সেলিমা ও সাবিনার মধ্যে বসে ছিলেন সিদ্দিকি।
ওই গাড়ির চালক উপানন্দ কোলে পুলিশকে জানান, দুর্গাপুর বাইপাসে রথতলার কাছে লুকিং গ্লাস দিয়ে তিনি দেখতে পেয়েছিলেন, ওই দুই তরুণী যুবকটির দু’হাত চেপে ধরেছে। আর পিছনের সিটে বসে থাকা ওহিদ আলি গামছার ফাঁস দিয়ে সিদ্দিকির গলা চেপে ধরেছে। এর পরে তাঁকে ওই তিন জন হুগলির দিকে যেতে নির্দেশ দেন। কিন্তু উপানন্দবাবু জি টি রোডের রসুলপুর রেল গেটে গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ার সুযোগে নেমে পড়ে মালিককে ফোন করেন। মালিক মেমারি থানায় গিয়ে ঘটনার কথা জানান। তার পরে পুলিশ গিয়ে গাড়ির মধ্যে সিদ্দিকির দেহ পড়ে থাকতে দেখে। তত ক্ষণে অবশ্য ওই তিন জন গাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন। চালককে জেরা করে সেই রাতেই পুলিশ অভিযুক্ত তিন জনকে তাদের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। পরে ওই গাড়িচালক সাক্ষ্য দিয়েছিলেন।
অভিযুক্তদের আইনজীবী স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমার মক্কেলরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবেন।” |