এসএমএসের সূত্র ধরে কাটোয়ায় এক প্রৌঢ়াকে খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে কলকাতার বরাহনগরের বাসিন্দা মোহিত শীল ও তাঁর ছেলে রোহিত শীলকে গ্রেফতার করল কাটোয়ার পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেলে বিধাননগর কমিশনারেটের বরাহনগর থানার আলমবাজার থেকে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের বিরুদ্ধে খুনের চক্রান্ত ও মোবাইল সিমকার্ডের জালিয়াতির অভিযোগ এনেছে পুলিশ। বুধবার কাটোয়া মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক অঞ্জনকুমার সরকার তাদের তিন দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৭ মার্চ কাটোয়ার কাছারিপাড়ায় খুন হন বিজলি দাস (৫৩)। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, বিজলীদেবীকে গলায় কাপড়ের ফাঁস দিয়ে খাট লাগোয়া জানলার রডে বাঁধে খুনি। ময়না-তদন্তের রিপোর্টে জানা যায়, মৃতার মাথার পিছনে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ঘটনার দু’মাস পরে বিজলিদেবীর দেওর অশোক দাসকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গত ২৭ জুলাই জামিন পান অশোকবাবু। |
এর পরের দিন, ২৮ জুলাই বিজলিদেবীর ছেলে সন্দীপবাবুর মোবাইলে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে হুমকি দিয়ে এসএমএস আসে বলে পুলিশকে জানান সন্দীপবাবু। ওই এসএমএসে সন্দীপবাবুর স্ত্রীকে খুন করার হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে, যে নম্বর থেকে এসএমএস এসেছে, সেটি কলকাতার বরাহনগর থানার এক বাসিন্দা। কিন্তু সেই সিমকার্ডটি ব্যবহার করছেন বরাহনগরের আলমবাজারের বাসিন্দা তথা অশোকবাবুর জামাইবাবু মোহিত শীল ও তাঁর পরিবার।
পুলিশের দাবি, তদন্তে জানা গিয়েছে, অপরিচিত ওই নম্বর থেকে অশোকবাবুর সঙ্গে মোহিতবাবুদের অনেক বার কথা হয়েছে। মোহিতবাবু পেশায় একটি বিমা সংস্থার এজেন্ট। রোহিত একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করে। পুলিশের দাবি, অশোকবাবুর সঙ্গে মোহিতবাবুদের ভাল সম্পর্ক থাকলেও সন্দীপবাবুদের সঙ্গে তা ছিল না। বেশ কিছুদিন ধরে মোহিতবাবুদের আর্থিক অবস্থাও ভাল ছিল না বলে পুলিশের দাবি।
পুলিশের দাবি, মোহিতবাবু ও রোহিতবাবু জেরায় স্বীকার করেছেন, তাঁদের আর্থিক অবস্থা খারাপ যাচ্ছিল। তাই বারবার বিজলিদেবীকে বাড়ি বিক্রি করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি তা করতে অস্বীকার করেন। পুলিশের আরও দাবি, জেরায় অশোকবাবু ঘটনার দিন বিজলিদেবীর ঘরে যাওয়ার কথা স্বীকার করেছিলেন।
বর্ধমানের (গ্রামীণ) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরুণ হালদার বলেন, “তদন্তে জানা গিয়েছে, বরাহনগর থেকে ধৃতেরা বিজলিদেবীকে খুনের চক্রান্তে জড়িত ছিলেন। তাদের আরও জেরা করা হলে পুরো ঘটনা পরিষ্কার হবে বলে আশা করা হচ্ছে।” |