ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে জঙ্গলমহল। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাতের বেলাতেও জঙ্গলমহলে স্বাভাবিক গতিতে ট্রেন চালাতে উদ্যোগী হল রেল। মঙ্গলবার এই নিয়ে এক বৈঠকের পরে খড়্গপুরের ডিআরএম রাজীব কুমার কুলশ্রেষ্ঠ বলেন, “পুজোর আগেই স্বাভাবিক গতি ফিরবে জঙ্গলমহলের ট্রেনেও। তার জন্য যাবতীয় পদক্ষেপ করা হবে।”
জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনার রাতে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়েছিল জঙ্গলমহলে। দেড় বছরেরও বেশি সময় তা বন্ধই ছিল। চলতি বছর জানুয়ারি মাসে ট্রেন চলাচল শুরু হলেও গতিবেগের উপর রাশ টানা হয়েছিল। পুজোর আগে ট্রেনের স্বাভাবিক গতি ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছে রেল। এই নিয়েই মঙ্গলবার এক বৈঠক হয় খড়্গপুরে। বৈঠক শেষে ডিজি (রেল) দিলীপ মিত্র বলেন, “আমাদের দিক থেকে ট্রেন চালানোর সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়েছে। এ বার বাকিটা রেলের সিদ্ধান্ত।” বৈঠকে ডিজি রেল ছাড়াও আইজি (পশ্চিমাঞ্চল) গঙ্গেশ্বর সিংহ, খড়্গপুরের রেলওয়ে পুলিশ সুপার দেবাশিস বড়াল, মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার ছাড়াও খড়্গপুর ও আদ্রার ডিভিসনের ডিআরএম, এইচ কে হালদার উপস্থিত ছিলেন। |
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের ২৮ মে সর্ডিহার কাছে জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল ১৪৮ জনের। তারপর থেকেই জঙ্গলমহল এলাকায় রাতে ট্রেন চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় রেল। দক্ষিণপূর্ব রেলের খড়্গপুর-টাটা ও খড়্গপুর আদ্রা ডিভিসনে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল দীর্ঘদিন। ফলে চুড়ান্ত দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছিল মানুষকে। ইতিমধ্যে রাজ্যে সরকার পরিবর্তন হয়। মাওবাদী দমনে পুলিশও একের পর এক সাফল্য পায়। কিষেণজির মতো শীর্ষ মাওবাদী নেতারও মৃত্যু হয় গুলির লড়াইয়ে। অনেক নেতা পুলিশের জালে ধরা পড়ে আবার অনেকেই আত্মসমর্পণ করে।
ধীরে ধীরে জঙ্গলমহলে শান্তি ফিরছে দেখেই চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি রাতে ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রেল। কিন্তু গতি কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। যেখানে ওই পথে ঘন্টায় ১১০-১২০ কিলোমিটার স্বাভাবিক গতি সেখানে ঘন্টায় ৭৫ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চালানো হত। ফলে ট্রেন চলাচল শুরু হলেও যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছতে অনেকটাই দেরি হত। এখনও জঙ্গলমহলে রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। নিয়মিত তল্লাশি চালানো হচ্ছে জঙ্গলে ও জঙ্গল লাগোয়া গ্রামে। তাহলে স্বাভাবিক গতিতে ট্রেন চালাতে অসুবিধে কোথায়? সম্প্রতি নিরাপত্তার বিষয়টি রাজ্য সরকারের কাছে জানতে চায় রেল।রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে স্বাভাবিক গতিতে ট্রেন চালানোর সবুজ সঙ্কেতও মিলেছে। তারপরই রেল ও পুলিশের পদস্থ কর্তারা বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পুজোর আগেই স্বাভাবিক গতিতে ট্রেন চলাচল শুরু করা হবে বলেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে কবে থেকে স্বাভাবিক গতিতে ট্রেন চলাচল শুরু হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে রেল-ই। |