সকাল থেকেই তিনি জ্বর-টর ভুলে তৈরি ছিলেন। ই-মেলে এক বার ‘হ্যাঁ’ জবাব এলেই গাড়ি হাঁকিয়ে সোজা চলে যাবেন তাঁর পুরনো ক্লাব তাঁবুতে। সব কিছু মিটমাট করে নিতে।
দুপুর দুপুর নাগাদ জবাবটা এসেও গেল টোলগে ওজবের মেলে। যার মোদ্দা কথা, এত তাড়া কীসের? আর একটু অপেক্ষা করো না।
ইস্টবেঙ্গল সচিবের সেই ‘মেলাঘাতে’ ভেস্তে গেল অস্ট্রেলীয় ফুটবলারের যাবতীয় প্রস্তুতি। যবনিকা পড়েও পড়ল না টোলগে নাটকের।
গত তিন মাস ধরে ইস্টবেঙ্গল- মোহনবাগান-টোলগে নিয়ে যে ত্রিমুখী নাটক চলছে, তা ময়দান আগে দেখেছে কি না সন্দেহ। মঙ্গলবার এও দেখতে হল, এক জন ফুটবলার তৈরি তাঁর প্রাক্তন ক্লাবে গিয়ে ক্ষমাপ্রার্থনা করার জন্য, উল্টো দিকে সেই ক্লাব ‘সময়ই’ বার করতে পারল না! ফলে এ দিন যে নাটক শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল, তা পিছিয়ে গেল সেই শুক্রবার পর্যন্ত। ইস্টবেঙ্গল সচিব কল্যান মজুমদার জানিয়ে দিলেন, বুধ-বিষ্যুৎবার কাজে ব্যস্ত থাকবেন। টোলগেকে এলে আসতে হবে সেই শুক্রবার, বিকাল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ।
এই হল, এই হয়ে গেল, এ বার হবেই। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে টোলগে-নাটকের এটাই মোটামুটি থিম সং। মঙ্গলবারও সেই ‘শেষ হইয়াও শেষ হল না’ কাহিনি।
শোনা যাচ্ছে, সোমবার রাতে লাল-হলুদ, সবুজ মেরুন দুই কর্তার মধ্যে কথা চালাচালি হয়। মোহনবাগান অর্থ সচিব দেবাশিস দত্ত ফোন করেন ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকারকে। প্রশ্ন ছিল, টোলগেকে নিয়ে কখন যাব? জবাব, সেটা পরে জানাব। দেখা যাচ্ছে, মোহনবাগান কর্তাদের টোলগে নিয়ে তাড়া থাকলেও, ইস্টবেঙ্গলের নীতি কিছুটা ‘ধীরে চলো’।
এতো গেল সোমবার রাতের কথা। মঙ্গলবারের বারবেলার ছবিটা একটু অন্য রকম। টোলগেকে আসতে বারণ করার পাশাপাশি তাঁর চিঠিও ইস্টবেঙ্গল কর্তারা পাঠিয়ে দেন কোচ ট্রেভর মর্গ্যান এবং স্পনসর ইউবি গ্রুপের কাছে। শোনা যাচ্ছে, কোচের ছাড়পত্র এলে তবেই টোলগেকে টোকেন ফেরত দেওয়া হবে। তবে মর্গ্যানের সম্মতি পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকার কথা নয় টোলগের। এর আগেই মর্গ্যান জানিয়েছিলেন, পেশাদার ফুটবলে এক জন ফুটবলার অন্য দলে যায়ই। এমনকী মর্গ্যান তো এ মরসুমের জন্য ইস্টবেঙ্গল দল টোলগেকে বাদ দিয়েই তৈরি করে ফেলেছেন।
তা হলে কী হতে পারে টোলগে নাটকের শেষ অঙ্ক? সন্ধ্যায় ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রতবাবু বলেন, “শুক্রবার টোলগে এলে কথা হবে। আমাদের ক্লাবের কিছু প্রশাসনিক কাজ বাকি আছে। সেগুলো মিটে গেলে টোকেন ফেরত দেওয়ার ব্যাপার।”
ময়দানের আশা, শুক্রবারই শেষ হবে টোলগে নাটক। আবার আশঙ্কাওশেষ হবে তো? |