চোখ বন্ধ করে তাঁকে কল্পনা করে তাঁর আবেদনের কাছে নতজানু হয়েছেন, এমন মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়!
উইলিয়াম শেক্সপিয়রের ১২৭ থেকে ১৫২ নম্বর সনেটের মধ্যে বেশ কয়েকটিতে ‘ডার্ক লেডি’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে সেই লাস্যময়ীকে। তার আসল পরিচয় নিয়ে কল্পনাবিলাসও চলেছে বিস্তর।
মত-পাল্টা মতের ভিড়ে অন্যতম হল, ‘ডার্ক লেডি’ আসলে লন্ডনের এক কুখ্যাত বারবনিতা, যার নাম ‘লুসি নেগ্রো’ বা ‘ব্ল্যাক লুস’! ১৯৩০ সালেই এই তত্ত্ব উঠে এসেছিল। এ বার এক শেক্সপিয়র গবেষক দাবি করলেন, এই তত্ত্বের সমর্থনে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ রয়েছে তাঁর কাছে। ডানকান সালকেল্ড নামে ওই গবেষকের বক্তব্য, ওই মহিলা লন্ডনের ক্লার্কেনওয়েলের একটি কুখ্যাত যৌনপল্লির মালকিন ছিলেন।
কী ভাবে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছলেন ডানকান? তাঁর ব্যাখ্যা, ফিলিপ হেন্সলো নামে এক থিয়েটার মালিকের ডায়েরিতে ব্ল্যাক লুস এবং গিলবার্ট ইস্ট নামে তার এক সহযোগীর উল্লেখ রয়েছে। এই ফিলিপ হেন্সলো আবার ছিলেন ‘রোজ থিয়েটার’-এর মালিক। আদতে শেক্সপিয়রের প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও রোজ থিয়েটারে শেক্সপিয়রের নাটকও অভিনীত হত। ডানকানের দাবি, তথ্যপ্রমাণ ঘেঁটে তিনি দেখেছেন হেন্সলোর সঙ্গে গিলবার্টের সম্পর্ক রীতিমতো ভাল ছিল। অর্থাৎ কোনও না কোনও ভাবে থিয়েটার জগতের সঙ্গেও যোগ ছিল লুস এবং ইস্টের। সেই সুবাদে শেক্সপিয়রের সঙ্গেও অবশ্যই পরিচিত ছিলেন লুস। ডানকানের বক্তব্য, লুসের মতো লাস্যময়ী মহিলা যে শেক্সপিয়রের কাছে বিশেষ আগ্রহের বিষয় হবে, তা অনুমান করা বাড়াবাড়ি হবে না। তা ছাড়াও, ক্লার্কেনওয়েন জায়গাটার সঙ্গেও শেক্সপিয়রের বেশ জোরদার সম্পর্ক ছিল। তাঁর বেশ কিছু আত্মীয় সেখানে থাকতেন বলে দাবি ডানকানের। সে দিক থেকেও লুসের সঙ্গে শেক্সপিয়রের পরিচিতি থাকা সম্ভব।
এই বিশ্লেষণ একেবারেই নতুন বলে ডানকানের দাবি। তাঁর কথায়, “যতদূর জানি, এই দিক থেকে ব্যাপারটা কেউ ভেবে দেখেনি। ডার্ক লেডি যে-ই হোন, লুসকে কল্পনা করেই শেক্সপিয়র তাঁর বর্ণনা দিয়েছিলেন। এটা নতুন তথ্য।” |