তেহরানে পাক প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের বৈঠক বৃহস্পতিবার। তার ঠিক আগে আজ সন্ত্রাস এবং ভারত-বিরোধী ভূমিকায় মদত দেওয়ার প্রশ্নে পাকিস্তানকে তীব্র ভাবে আক্রমণ করল দিল্লি।
তিন বছর আগে শরম-অল-শেখ-এ জোট নিরপেক্ষ দেশগুলির শীর্ষ সম্মেলনে (ন্যাম) ভারত-পাক সম্পর্ক যে গতিমুখ পেয়েছিল তা অবশ্য লঘু করা হচ্ছে না। বন্ধ করা হচ্ছে না দু’দেশের মধ্যে আলোচনার প্রক্রিয়াও। কিন্তু আসিফ আলি জারদারির সঙ্গে আসন্ন ‘তেহরান বৈঠকে’ ইসলামাবাদ সম্পর্কে কড়া অবস্থান নেওয়ারই কৌশল নিয়েছে সাউথ ব্লক। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বৈঠকের টেবিলে বসার আগেই মনস্তাত্ত্বিক কূটনীতিতে ইসলামাবাদকে যথেষ্ট চাপে রাখাই আপাতত লক্ষ্য নয়াদিল্লির। পাশাপাশি অসমে সাম্প্রতিক হাঙ্গামা ও দেশ জুড়ে আতঙ্ক ছড়ানোর পিছনে পাকিস্তানের ভূমিকায় নয়াদিল্লি যে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ, সে কথাও তুলে ধরা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে ইসলামাবাদের ভূমিকাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়ার জন্য ইন্টারনেটের মাধ্যমে পাক-বিরোধী প্রচার কথাও ভাবা হচ্ছে।
মুম্বই হামলা নিয়ে অভিযোগের পাল্টা হিসেবে পাকিস্তান বারবারই সমঝোতা এক্সপ্রেসে বিস্ফোরণের প্রসঙ্গ তুলে এসেছে। তাদের অভিযোগ, সমঝোতার ঘটনাটির পিছনে হিন্দু সন্ত্রাসবাদীদের হাত ছিল। আজ বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে দ্ব্যর্থহীনভাষায় বলা হয়েছে, ওই দু’টি ঘটনার মধ্যে কোনও তুলনাই চলে না। এক কর্তার কথায়, “আমরা বরাবরই সমঝোতা এক্সপ্রেসের ঘটনা সম্পর্কে ব্যবস্থা নেওয়ার মানসিকতা দেখিয়েছি। নিজেদের সুবিধামত বিবৃতি দিয়ে কাজ সারিনি।” একই সঙ্গে এ কথাও সাউথ ব্লকের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে মুম্বই হামলা সংক্রান্ত যাবতীয় নথি পাকিস্তানের হাতে তুলে দিয়ে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। সে দেশে বিচারক বদলে যাচ্ছে বারবার, বিচার হচ্ছে না ঠিকমতো। নয়াদিল্লির তরফে অভিযোগও করা হচ্ছে যে পাকিস্তানে কারাগারে বসেই অপরাধীরা মোবাইলে তাদের কাজ চালাচ্ছে।
পাকিস্তান যে ভারতের বিরুদ্ধে সরাসরি সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটানো ছাড়াও ছায়াযুদ্ধ এখনও অব্যাহত রেখেছে তাও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব আর কে সিংহ অভিযোগ করেছেন, অসমে হাঙ্গামার গুজব ছড়িয়ে গোটা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মানুষকে আতঙ্কিত করেছে পাকিস্তান। ভারতের অভিযোগ, পাকিস্তানের ৭৬টি ওয়েবসাইট থেকে সাজানো ছবি ও বার্তা ‘আপলোড’ করা হয়েছে। বিষয়টি যাতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ জানতে পারেন, তার জন্য সাইবার-মাধ্যমেই পাক-বিরোধী প্রচার শুরুর কথাও ভাবছে দিল্লি। |