অভিযান শুরু হতেই কিছু রুটে বন্ধ অটো |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল |
অটো চলাচলে বেনিয়ম রুখতে অভিযান শুরু হল আসানসোল মহকুমার বিভিন্ন প্রান্তে। পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে এই অভিযান চালাচ্ছে পরিবহণ দফতর।
পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে কিছু দিন নিয়ম লঙ্ঘন করলে অটো চালকদের সতর্ক করা হবে। কিন্তু তার পরেও পরিস্থিতি না বদলালে চালকদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে। এ দিকে, প্রশাসনিক অভিযানের বিরদ্ধে মঙ্গলবার আচমকা আসানসোলের কয়েকটি রুটে অটো বন্ধ করে দেন চালকেরা। বিপাকে পড়েন সাধারণ যাত্রী ও পড়ুয়ারা।
অটো চলাচলের উপরে বিধি-নিষেধ অরোপ করার পরে আসানসোলের মহকুমা প্রশাসন ও পরিবহণ শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী। প্রশাসনিক কর্তারা নিয়ম মেনে অটো চালানোর নির্দেশ দেন। কর্মী সংগঠনগুলির নেতারাও সরকারি নির্দেশাবলী মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দেন। নিয়ম না মানলে অটো চালকদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক পদক্ষেপকেও তাঁরা সমর্থন করবেন বলে জানান। সেই মতো মহকুমা পরিবহণ দফতর মঙ্গলবার থেকে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে অটো অভিযানে নামে। |
|
চলছে না অটো। স্কুলে যেতে ভরসা বাস। মঙ্গলবার আসানসোলের জুবিলি মোড়ে শৈলেন সরকারের তোলা ছবি। |
এ দিন আসানসোল শহর ও কুলটির নিয়ামতপুর এলাকায় অভিযান শুরু হয়। কাগজপত্রহীন ও বেশি যাত্রী চাপিয়ে অটো চালানোর অভিযোগে বেশ কয়েকটি অটো পাকড়াও করা হয়। তাঁদের নাম, ঠিকানা, অটোর নম্বর লিখে নিয়ে চালকদের সতর্ক করে অটো ছেড়ে দেওয়া হয়। মহকুমা পরিবহণ সংস্থার আধিকারিক সৌমেন দাস বলেন, “সরকার ও মহকুমা প্রশাসনের নির্দেশে আমরা এই অভিযান শুরু করেছি। বেআইনি ভাবে অটো চলাচল করলে তা কোনও ভাবেই প্রশয় দেওয়া হবে না।”
অটো অভিযানের প্রতিবাদে এ দিন হঠাৎই বিভিন্ন রুটের অটো চলাচল বন্ধ করে দেন চালকেরা। তাঁদের অভিযোগ, প্রশাসন যে পরিমাণ যাত্রী নিয়ে অটো চালাতে বলছে তা তাঁদের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। এর ফলে তাঁরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন।
এ দিন সকালে আসানসোল সেনর্যালে রুটের অটো চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। জনৈক অটোচালক প্রকাশ যাদবের দাবি, “ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে অটো কিনেছি। কম যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করলে কিস্তি মেটাতে পারব না। ভাতও জুটবে না।” অপর এক অটোচালক বাদল কুণ্ডুর ক্ষোভ, “যাত্রীবাহী বাসগুলি আসন সংখ্যার চেয়ে বেশি যাত্রী বহন করে। এমনকী, বাসের ছাদে পণ্য চাপিয়েও যাতায়াত করে। তাঁদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম মানা হয় না কেন?”
অটো চালকদের দাবি, প্রশাসন সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করুক। এ দিকে, বেশ কয়েকটি রুটের অটো চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েন সাধারণ যাত্রী ও স্কুল-কলেজ পড়ুয়ারা। |
কিছু রুটে হল ধরপাকড়। |
অনেক জায়গায় বাড়তি যাত্রী নিয়েই চলল অটো। |
|
—নিজস্ব চিত্র |
মহকুমা পরিবহণ সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈধ কাগজপত্র নিয়ে অটো চালানোর পাশাপাশি ছোট অটোগুলিতে সর্বোচ্চ তিন জন যাত্রী ও বড় অটোগুলিতে সর্বোচ্চ ৬ জন যাত্রীর বেশি বহন করা যাবে না। পরিবহণ দফতরের এই নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছে আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত পরিবহণ কর্মী সংগঠন। তবে মঙ্গলবার বিভিন্ন রুটের অটো চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়াকেও এই সংগঠন সমর্থন করেনি। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাজু অহলুওয়ালিয়ার দাবি, “ছোট অটোগুলিতে সর্বোচ্চ চার জন ও বড় অটোগুলিতে সর্বোচ্চ সাত জন যাত্রী বহন করার অনুমতি দিক প্রশাসন। তবে যারা আচমকা অটো চলাচল বন্ধ করছেন তাঁদের সমর্থন করছি না।” পাশাপাশি তিনি আরও দাবি করেন, ভিন্ জেলা ও রাজ্য থেকে আসানসোলে অটো ঢোকা বন্ধ করুক প্রশাসন। |
|