|
|
|
|
তালিকার বাইরে দরিদ্রদের বাড়ির টাকা দু’টি প্রকল্পে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
বিপিএল তালিকায় নাম নেই, অথচ আর্থিক ও সামাজিক থেকে দুর্বল পরিবারগুলির জন্য চলতি আর্থিক বছরে প্রায় ৪৯ হাজার বাড়ি তৈরির পরিকল্পনা নিল রাজ্য সরকার।
ইন্দিরা আবাস যোজনার ধাঁচে ‘আশ্রয়’ প্রকল্পে বিপিএল তালিকার বাইরে থাকা দরিদ্র পরিবারগুলিকে বাড়ি তৈরির টাকা দেওয়া হত আগেও। তারই নাম বদলে ‘আমার ঠিকানা’ প্রকল্পে কলকাতা বাদে রাজ্যের ১৮টি জেলায় চলতি আর্থিক বছরে মোট ১৪ হাজার বাড়ি তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। আর অনগ্রসর এলাকার উন্নয়ন তহবিলের (স্পেশাল বিআরজিএফ) টাকায় এ বারই প্রথম রাজ্যের ১১টি জেলায় ৩৪ হাজার ৭৫৮টি বাড়ি তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চলতি আর্থিক বছরের মধ্যে এই কাজ শেষ করতে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিষদকে দ্রুত উপভোক্তাদের তালিকা তৈরির নির্দেশিকা পাঠিয়েছে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর।
বিপিএল তালিকায় প্রকৃত দরিদ্র পরিবারের নাম ওঠেনিএমন অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। শুধুমাত্র তালিকায় নাম না থাকার কারণে বহু দরিদ্র পরিবার সরকারি দারিদ্র্য দূরীকরণ কর্মসূচিগুলির সুবিধা পায় না। বিপিএল তালিকার এই ত্রুটি নিয়ে বাম আমলে বরাবরই সরব ছিল তৃণমূল। ক্ষমতায় আসার পরে তারা তাই বিপিএল তালিকার বাইরে থাকা দরিদ্র পরিবারগুলিকে আর্থিক সাহায্যে জোর দিচ্ছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের ইন্দিরা আবাস যোজনায় সুবিধা পাওয়ার প্রথম শর্তই হল বিপিএল তালিকায় নাম থাকা। রাজ্য সরকারের এই দুই প্রকল্পে আবার বিপিএল তালিকার বাইরে থাকা দরিদ্র পরিবারগুলিকে সাহায্য করা হবে শুধুমাত্র। এ ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে নেই এমন বিধবা, শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী, তফসিলি সম্প্রদায় ও গ্রাম সড়ক যোজনা-সহ পঞ্চায়েতের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প রূপায়ন করতে গিয়ে উদ্বাস্তু হওয়া পরিবার। এই সব গরীব ও অসহায় পরিবারগুলিকে চিহ্নিত করে উপভোক্তাদের তালিকা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পঞ্চায়েত ও জেলা পরিষদকে। গ্রাম সংসদে প্রাথমিক বাছাইয়ের পর পঞ্চায়েত থেকে প্রাপক তালিকা অনুমোদন করাতে হবে। এরপর অনুমোদন দেবে জেলা পরিষদ। প্রাপক তালিকা যাচাইয়ের জন্য প্রশাসনিক স্তরে কমিটি গঠন করতে হবে। ওই কমিটি প্রাপকদের তালিকা যাচাই করে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করবে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’টি প্রকল্পেই সমতল এলাকায় বাড়ি তৈরির জন্য ৪৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। আর পার্বত্য ও সমস্যাসঙ্কুল এলাকায় প্রতিটি বাড়ি তৈরির জন্য ৪৮ হাজার ৫০০ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ‘স্পেশাল বিআরজিএফ’ প্রকল্পে যে ১১টি জেলায় ৩৪ হাজার ৭৫৮টি বাড়ি তৈরির জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়েছে, সেগুলি হল জলপাইগুড়ি, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, বীরভূম, পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা। এর মধ্যে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় সবচেয়ে বেশি ৬৬৬২টি, বাঁকুড়ায় ৪১৭৮টি, মুর্শিদাবাদে ৩৯৯৮টি, পশ্চিম মেদিনীপুরে ৩৬২০টি ও পূর্ব মেদিনীপুরের জন্য ২৪২০টি বাড়ি তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। অন্য দিকে ‘আমার ঠিকানা’ প্রকল্পে কলকাতা বাদে বাকি ১৮টি জেলার জন্য মোট ১৪ হাজার বাড়ি তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে জঙ্গলমহলের তিন জেলাপশ্চিম মেদিনীপুরে ১৮৩০টি, বাঁকুড়ায় ৭৩০টি ও পুরুলিয়ায় ৩৫৬টি এবং পার্বত্য দার্জিলিং জেলায় ৮২টি বাড়ি তৈরির লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি গান্ধী হাজরা বলেন, “প্রকৃত দরিদ্রেরা যাতে এর সুবিধা পায় তাঁর চেষ্টা চলছে।” |
|
|
|
|
|