|
|
|
|
তৃণমূলের দ্বন্দ্ব নারায়ণগড়েও |
ব্লক সভাপতি বদলাতেই বিক্ষোভ-সংঘর্ষ কেশপুরে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
বুধবার রাতে ব্লক সভাপতি বদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জেলা তৃণমূল। বৃহস্পতিবারই তা নিয়ে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের একাংশের মধ্যেই শুরু হয়েছিল গুঞ্জন ও মৃদু প্রতিবাদ। শুক্রবার তা বিক্ষোভের রূপ নিল। সংঘর্ষ ও পথ অবরোধে উত্তেজনা ছড়াল কেশপুর ও নারায়ণগড়ে।
রাজ্যে পালাবদলের পর থেকেই পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুর ও নারায়ণগড়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার রাজ্যের নতুন শাসক দল। দলীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে নানাবিধ অভিযোগ জমা পড়েছিল জেলা নেতৃত্বের কাছে। কেশপুরে প্রাক্তন ব্লক সভাপতি চিত্ত গড়াই এবং সদ্য প্রাক্তন ব্লক সভাপতি আশিস প্রামাণিকের অনুগামীদের মধ্যে বোমা-গুলি নিয়ে সংঘর্ষ পর্যন্ত হয়েছে। দলীয় সূত্রে খবর, এই পরিস্থিতিতে ‘রাশ’ টানতেই ব্লক সভাপতি বদলের সিদ্ধান্ত নেন তৃণমূল নেতৃত্ব। কেশপুরে আশিস প্রামাণিকের জায়গায় সভাপতি করা হয় মহিউদ্দিন আহমেদকে। নারায়ণগড়ে সূর্য অট্টকে সরিয়ে ব্লক সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয় মিহির চন্দকে। এরই প্রতিবাদে শুক্রবার সকালে গাড়িতে চেপে কেশপুরের কয়েকশো তৃণমূল সমর্থক হাজির হয়ে যান মেদিনীপুর শহরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে। এখানেই বসেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়, জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ ও বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতি। যদিও এ দিন সকাল থেকেই কেউই সেখানে ছিলেন না। বন্ধ কার্যালয়ের সামনেই স্লোগান ওঠে, ‘সভাপতি বদল মানছি না, মানব না।’ বিক্ষুব্ধদের দাবি, কেশপুরের ব্লক সভাপতি করতে হবে দীর্ঘদিনের ঘরছাড়া ও পুরনো তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী নেপাল ঘোষকে। কিছুক্ষণ বিক্ষোভের পরে অবশ্য সকলেই কেশপুরে ফিরে যান। ফেরার পরেই শুরু হয় সংঘর্ষ। অন্তত ৮ জন আহত হন। আহতেরা নেপাল-অনুগামী বলে পরিচিত। নতুন ব্লক সভাপতি মহিউদ্দিনের লোকজন তাঁদের মারধর করে বলে অভিযোগ। পঞ্চমী, গরগজপোতা, কাবলিবাজার-সহ একাধিক জায়গায় সংঘর্ষ বাধে। জেলা সভাপতি দীনেনবাবুর কথায়, “দলীয় কর্মী-সমর্থকদের এই ধরনের আচরণ কাম্য নয়। কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় তা দলে আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করা হবে।” কেশপুরের নতুন ব্লক সভাপতি মহিউদ্দিনের অভিযোগ, “যাঁকে সভাপতি পদ থেকে সরতে হয়েছে, সেই আশিস প্রামাণিকই এ সব করাচ্ছেন।” অন্য দিকে, আশিসবাবু বলছেন, “আমাকে সরাতে পরিকল্পনা করছিলেন চিত্ত গড়াই ও মহিউদ্দিন। তাঁরাই অশান্তি ছড়াচ্ছেন।” এর বাইরে রয়েছে নেপাল-গোষ্ঠী। নেপালবাবুর কথায়, “কেশপুরের মানুষ চান প্রকৃত তৃণমূল কর্মীর হাতে দলের রাশ থাকুক। ১২ বছর ঘরছাড়া থেকেছি। পণ করেছিলাম দল ক্ষমতায় না এলে কেশপুরে ফিরব না। এখন দেখছি দলের ক্ষমতা চলে যাচ্ছে স্বার্থান্বেষীদের কাছে। তা তো মেনে নিতে পারি না।” সভাপতি বদল ঘিরে গোলমাল বেধেছে নারায়ণগড়েও। প্রাক্তন ব্লক সভাপতি সূর্য অট্ট এবং নতুন সভাপতি মিহির চন্দের অনুগামীদের মধ্যে গোলমাল বাধে শুক্রবার। সকাল ১১টা নাগাদ ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক আধ ঘণ্টা অবরোধ করেন সূর্য অনুগামীরা। সূর্যবাবু বলেন, “না জানিয়েই একজনকে সরিয়ে অন্যকে বসানো হল। দল যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেনে চলতে হবে। তাই অশান্তি হচ্ছে দেখেও চুপ করেই রয়েছি।” মিহিরবাবু বলেন, “পুরনো ক্ষোভ থেকে অবরোধের ঘটনা ঘটেছিল। কিন্তু আমার অনুরোধে তা উঠে গিয়েছে। সবাইকে নিয়েই চলতে চাই।” |
|
|
|
|
|