মালদহের রতুয়ায় ফুলহার নদীর উপর সেতু তৈরির জন্য কেন্দ্রীয় বরাদ্দ মেলার খবর পৌঁছতেই অকাল হোলি শুরু হয়েছে এলাকায়। উৎসবে মেতে উঠেছেন বাসিন্দারা। শুধু ফুলহারের ওপারে মহানন্দটোলা বা বিলাইমারি পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারাই নন, সকাল থেকেই খুশিতে রাস্তায় মাতলেন লাগোয়া বিহারের আমদাবাদ, রসনা, পরানপুর, মনিহারি এলাকার এলাকার বাসিন্দারাও। সেতু সহ সংযোগকারী রাস্তার খবর এদিন সংবাদ মাধ্যমের মারফত এলাকায় পৌঁছতে সকাল থেকেই আবির খেলা শুরু হয়। মিছিল করে এলাকায় ঘুরে ঘুরে সেতু ও রাস্তার কথা প্রচারের পাশাপাশি একে অন্যের মিষ্টিমুখও করানো হয়। একসময় সেতু নিয়ে বাসিন্দাদের টিপ্পনি হজম করতে হলেও কার্যত ‘অসাধ্য সাধন’ হওয়ায় এ দিন অবশ্য রতুয়ার বিধায়কের নামে জয়ধ্বনি করতে ভোলেননি বাসিন্দারা। বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় কলকাতায় রয়েছেন। তার স্বপ্নের প্রকল্পের কথা বুধবার সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের কাছেই প্রথম জানতে পারেন তিনি। পরে তাকে টেলিফোন করে ওই সংবাদ দেন পূর্তসচিব অজিতরঞ্জন বর্ধন। তার পরেই ফোন করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কে পি যোশী। পাশাপাশি বিহারের একাধিক আমলাও তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। শুক্রবার মালদহে ফিরে নিজের গ্রাম মহানন্দটোলা এলাকায় যাওয়ার কথা বিধায়কের। সংবাদ মাধ্যমে প্রকল্পের কথা জেনে উচ্ছ্বসিত রতুয়ার বিধায়ক পার্থ দেও। তিনি বলেন, “সর্বোচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ ছাড়া এত বরাদ্দ মেলা সম্ভব হত না। ওই সেতুসহ রাস্তা হলে ফুলহারের পারের বাসিন্দাদের জীবন ধারা পাল্টে যাবে। দুই রাজ্যের মধ্যে যোগাযোগকারী একটা বিকল্প রাস্তাও বাড়তি পাওনা।” বৃহস্পতিবারও যেন ঘোর কাটেনি বিধায়কের। এ দিন তিনি বলেন, “২০০৯ সালে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়কে প্রথম আবেদন জানাই। আমি ওই এলাকার মানুষ। রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে মানুষের কথা ভেবে ওই স্বপ্নের সেতু তৈরির জন্য দরবার চালিয়ে গিয়েছি। ওই স্বপ্ন যে জীবদ্দশায় সফল হতে পারে তা নিজেও ভাবিনি। সব দিক থেকেই পিছিয়ে পড়া ওই এলাকায় বলা যায় এদিন নতুন সূর্য উঠল।” বিধায়ক জানিয়েছেন, নদীর ওপারের দুটি পঞ্চায়েত সহ বিহারের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ ওপারের উপর নির্ভরশীল। রতুয়া-১ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সহ সভাপতি দশরথ যাদবের বাড়িও ফুলহারের ও পারে। এ দিন তিনি বলেন, “সংবাদ মাধ্যমেই জেনেছি সেতুর জন্য বরাদ্দ মিলেছে। তা জেনে দলমত নির্বিশেষে প্রত্যেকেই আনন্দে মেতে উঠেছেন। এটাই স্বাভাবিক। কারণ, ফুলহারের উপর সেতু গোটা এলাকার মানুষের কাছেই স্বপ্ন ছিল। কাজ শুরু হয়ে কবে তা শেষ হবে এখন শুধু তার অপেক্ষা।” |