গ্রেফতার চার জন
তুলে নিয়ে গিয়ে বিয়ে
প্রাইভেট টিউশনি পড়তে যাওয়ার পথে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করার অভিযোগে পুলিশ অভিযুক্ত যুবক ও কাজীসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করছে। ঘটনাটি ঘটেছে কালিয়াচকের মোথাবাড়ি ফাঁড়ির জালিমটোলা গ্রামে। বৃহস্পতিবার ধৃত চারজনকে আদালতে তুললে মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে দশম শ্রেণির ছাত্রীকে জোর করে বিয়ে করার অভিযোগে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে অপহরণ ও জোর করে নাবালিকাকে বিয়ে করার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, লক্ষীপুর হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী অন্যান্য দিনের ১৪ অগষ্ট সকাল ৮ টা নাগাদ বাড়ি থেকে মোথাবাড়িতে এক শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট টিউশনি পড়তে যাচ্ছিল। অভিযোগ, শিক্ষকের বাড়িতে ঢোকার কিছুটা আগে কয়েকজন যুবক ওই ছাত্রীর পথ আটকে দেয়। এর পরে ওই যুবকরা ওই ছাত্রীর মুখে রুমাল চেপে ধরে একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় এক কাজীর বাড়িতে। সেই কাজীর উপস্থিতিতে ওই যুবকরা সাদ্দাম শেখ নামে এক মুদি দোকানদারের সঙ্গে ওই ছাত্রীর বিয়ে দেয়। পুলিশ জানিয়েছে, কাজীর সামনে বিয়ে দেওয়ার পরে সাদ্দাম শেখের বন্ধুরা ওই ছাত্রীকে ফের তাঁর বাড়ির কাছে ফেলে পালিয়ে যায়। সাদ্দাম ও তাঁর বন্ধু বান্ধবরা হুমকি দিয়েছিল বিয়ের কথা বাড়ি কিংবা থানায় জানালে বাড়ির সবাইকে খুন করে ফেলব। ঘটনার পর দিন থেকে ওই ছাত্রী স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। সকলে কৌতুহলী হলে বুধবার ওই ছাত্রীটি বাড়ির লোকজনের জেরার মুখে কান্নায় ভেঙে পড়ে। সে জানায়, ১৪ অগষ্টে তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। বোনের মুখে সমস্ত ঘটনা শোনার পরে বুধবার রাতে বোনকে নিয়ে মহম্মদ মোরসেলিন সোজা হাজির হন মোথাবাড়ি ফাঁড়িতে। যারা তাঁর বোনকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে জোর করে বিয়ে দিয়েছে সেই কাজী ও কাজীর সহযোগী, অভিযুক্ত যুবক সাদ্দাম সেখসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। ছাত্রীর বাবার কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পরই বুধবার গভীর রাতে হানা দিয়ে অভিযুক্ত যুবক সাদ্দাম শেখ, ওই যুবকের বন্ধু শাজাহান শেখ, কাজী আজাউল হোসেন, সহকারী কাজী সোহরাব আলিকে গ্রেফতার করেছে। এদিকে ধৃত যুবক সাদ্দাম আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে দাবি করেন, “আমার বাবার মুদি দোকান আছে। দোকানের সামনে দিয়ে ওই মেয়েটিকে যাতায়াত করতে দেখে ভালবেসে ফেলি। রাস্তা থেকে ওকে তুলে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছি। কোনও শারীরিক অত্যাচার তো করিনি।” তবে ধৃত কাজী আজাউল হোসেন বলেন, “জোর করে মেয়েটিকে তুলে আনা হয়েছে জানলে বিয়ে দিতাম না।” দশম শ্রেণির ছাত্রী জানিয়েছে , স্কুলে য়াওয়ার পথে ওই যুবককে সে দেখেছে। কিন্তু কোনদিন ওই যুবকের সঙ্গে কথা বলেনি মেয়েটি। ছাত্রীর অভিযোগ, “ওই ছেলেটি বন্ধুদের নিয়ে আমাকে এভাবে তুলে নেবে তা ভাবিনি। তোলার পরে শাসিয়ে বলে, কাজীর সামনে মুখ খুললে বাবা-মা-দাদাকে খুন করা হবে। কাজীর ওখান থেকে ফিরে ভয়ে মুখ বন্ধ করেছিলাম। শেষ পর্যন্ত মুখ খুলতে বাধ্য হই।” ছাত্রীর বাবা বলেন, “যাঁরা মেয়ের ক্ষতি করেছে তাদের শাস্তি চাই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.