|
|
|
|
নজরদারি নিয়ে ক্ষোভ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বানারহাট |
ভুটান সীমান্তের মতো স্পর্শকাতর এলাকাতেও পুলিশের নজরদারির কী হাল তা এক দম্পতির অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় স্পষ্ট হল। কারণ, সোমবার রাতে ওই দম্পতির মৃত্যু হয়। বিধি অনুযায়ী, ময়না তদন্ত করানো দরকার। অথচ পুলিশের নজরদারি এড়িয়ে ওই দম্পতির পরিবারের লোকেরা দেহ দুটি ময়নাতদন্ত ছাড়াই কবর দিয়ে দেন বলে অভিযোগ। মৃত্যুর ৭২ ঘণ্টা পরে মৃতার বাপের বাড়ির লোকজনের কাছ থেকে ঘটনাটি জানতে পারে পুলিশ। ঘটনাটি শোনার পরে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন ধূপগুড়ির সিপিএম বিধায়ক মমতা রায়ও। মমতা দেবীর কথায়, “সীমান্তে পুলিশের নজরদারির হাল বোঝাই যাচ্ছে।” জেলার পুলিশ সুপার সুগত সেন বলেন, “একজন ডিএসপিকে ঘটনার তদন্ত করতে বলেছি। পুলিশকে না-জানিয়ে দেহ কবর দেওয়ার ঘটনায় যাঁরা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পুলিশ সুপার এটাকে নজরদারির গাফিলতি বলে মানতে রাজি হন। তাঁর দাবি, “জেলার এক প্রত্যন্ত এলাকায় এমন একটি ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পেতে দেরি হয়েছে। খবর পেয়েই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে আমাদের কর্মীদের গাফিলতির প্রমাণ পেলেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” প্রতিবেশী দেশ ভুটানের সামচি শহর লাগোয়া ভারতের চামুর্চি চা বাগানের ডিপো লাইনে সোমবার রাতে ওই দম্পতির অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। পুলিশ জানায়, মৃত দম্পতির নাম সারবন ওঁরাও (১৯) এবং তার স্ত্রী পুষ্পা (১৮)। পরদিন ভোরে সারবনের পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা মিলে দেহ দুটি গোপনে চা বাগান সংলগ্ন একটি ঝোরায় কবর দেন বলে অভিযোগ। ছ’মাস আগে পুষ্পার সঙ্গে সারবনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে দু’জনের মধ্যে অশান্তি লেগেই থাকত। সারবনের পরিবারের লোকেদের দাবি, ওই দিন রাতে অশান্তির জেরে নিজের ঘরে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেন সারবন। ওই ঘটনার কিছুক্ষণ পরে পুষ্পা গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। দু’দিন পরে ভাইঝির মৃত্যুর ঘটনা জানতে পেয়ে আংরাভাসা গ্রামের বাসিন্দা পুষ্পার কাকা পত্রশ মিনজ বুধবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ ওই দেহ উদ্ধার করতে পারেনি। পত্রশবাবুর অভিযোগ, “ভাইঝি মারা গেলেও তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমাদের কিছু জানায়নি। দুজন মারা গেল অথচ পুলিশ কেন কিছু জানতে পারল না তা বুঝতে পারছি না।” এর আগেও পুলিশি ঝামেলা এড়াতে ওই বাগানে কয়েকজনকে গোপনে কবর দেওয়ার ঘটেছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ। সোমবারের ঘটনার নিয়ে এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। দেহ দুটি গোপনে কবর দেওয়ার ঘটনা এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য জানতেন বলে অভিযোগ গৃহবধূ পরিবারের লোকেদের। চামুর্চি গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য তথা সিপিএম নেতা মহম্মদ নাজিমুদ্দিন বলেন, “ওই এলাকার পঞ্চায়েত ঘটনাটি বলতে পারবেন। সীমান্তে পুলিশের নেটওয়ার্ক তেমন ভাল নয় বলে মনে হচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা আগেও ঘটেছে বলে শোনা যাচ্ছে।” সারবনের বাবা ফাগুবাবু বলেন, “ঝামেলা এড়াতে দেহ কবর দেওয়া হয়। এর বেশি কিছু জানি না।” বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি বলে পুলিশ জানায়। |
|
|
|
|
|