এক প্রৌঢ়কে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাঁর বাড়িতে লুঠপাট চালিয়ে পালানোর সময়ে গণপ্রহারে মৃত্যু হল দুই দুষ্কৃতীর। বুধবার রাতে মন্দিরবাজারের চৌঘরি গ্রামের ঘটনা। নিহতদের নাম নুর আলম সর্দার (২৮) এবং গোলাম ফারুখ পুরকাইত (৩০)। দু’জনেরই বাড়ি স্থানীয় মল্লিকপুর গ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত দেড়টা নাগাদ ৪-৫ জন সশস্ত্র দুষ্কৃতী হানা দেয় ওই গ্রামের দেবেন্দ্র সর্দারের বাড়িতে। বছর পঞ্চাশের দেবেন্দ্রবাবু রিকশা চালাতেন। দিন কয়েক আগে রিকশাটি বিক্রি করে দেন। তাঁ ছোট ছেলে বাপি মণ্ডপ তৈরির কাজ করেন। তিনি ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন। ছিলেন তাঁর স্ত্রী ঊর্মিলাদেবী এবং দুই মেয়েও। দেবেন্দ্রবাবু ঘুমোচ্ছিলেন বারান্দায়। দুষ্কৃতীরা দরজা ঠেলে ঢোকে। আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে তাঁরা বাপিবাবুর ঘর থেকে নগদ কয়েক হাজার টাকা এবং ঊর্মিলাদেবীর সোনা-রুপোর অলঙ্কার হাতিয়ে নেয়। বাধা দেওয়ার চেষ্টা করায় দেবেন্দ্রবাবুকে দুষ্কৃতীরা ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপায়। তাঁর ডান হাত এবং মাথায় চোট লাগে। দেবেন্দ্রবাবুর চিৎকারে পাশের বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন তাঁর বড় ছেলের স্ত্রী নিত্যরানি সর্দার। ডাকাতি হচ্ছে বুঝতে পেরে তিনি চিৎকার করতে থাকেন। জড়ো হয়ে যান গ্রামবাসীরা। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে দুষ্কৃতীরা পালাতে থাকে। |
নুর আলম সর্দারকে বাড়ির ভিতর থেকে এবং ফারুখ পুরকাইতকে ওই বাড়ির অদূরের খেতজমি থেকে ধরে ফেলেন গ্রামবাসীরা। শুরু হয় গণপ্রহার। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দুই দুষ্কৃতীর। বাকি দুষ্কৃতীরা অবশ্য পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেহ দু’টি উদ্ধার করে। আহত দেবেন্দ্রবাবুকে নিয়ে যাওয়া হয় মন্দিরবাজারের নাইয়ারহাট ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। বাপিবাবুর বছর তেরোর মেয়ে পূজা বলে, “দরজা ঠেলে ঢোকার শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। চোখের সামনে দেখি, মায়ের কানের সোনার দুল দুষ্কৃতীরা খুলে নিচ্ছে।” পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে দেবেন্দ্রবাবু জানিয়েছেন, তাদের নগদ পাঁচ হাজার টাকা, এক জোড়া সোনার দুল এবং একটি রুপোর হার হাতিয়ে নিয়েছে দুষ্কৃতীরা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পশ্চিম) অলোক রাজুরিয়া বলেন, “গণপ্রহারে দুই দুষ্কৃতীর মৃত্যু হয়েছে। বাকি দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। একটি ডাকাতির মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।” |