সিপিএমের এক পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতে বড়সড় অস্ত্র কারখানার হদিস মিলল বৃহস্পতিবার। কৃষ্ণনগরের নতুনপাড়া এলাকার দিলীপ মণ্ডল নামে ওই সিপিএম নেতার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ১১টি পাইপগান, দু’টি ৯ এমএম পিস্তল, তিন রাউন্ড গুলি এবং বেশ কিছু ব্যারলের খোঁজ পেয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সুপার সব্যসাচী রমন মিশ্র বলেন,“ওই পঞ্চায়েৎ সদস্যের বাড়িটা আস্ত একটা অস্ত্রাগারে পরিণত হয়েছিল। সেখানে নিয়মিত অস্ত্র তৈরি হত বলেই মনে হচ্ছে।” কিন্তু এত দিন পুলিশ তার খোঁজ পেল না কেন, তার কোনও সদুত্তোর অবশ্য পুলিশ সুপার দিতে পারেননি।
এ দিনও দিলীপের ‘অস্ত্রাগারের’ খোঁজ হয়ত পুলিশ জানতেই পারত না, যদি না স্থানীয় এক টিএমসিপি কর্মীকে আচমকা গুলি করে বসত সে। আহত ওই তৃণমূল ছাত্র পরিষদ কর্মী, শঙ্কর বিশ্বাসকে ভর্তি করা হয়েছে শক্তি নগর জেলা হাসপাতালে। চিকিৎসকেরা জানান, সে আপাতত বিপদ-মুক্ত।
|
শঙ্করের দাবি, তফশিলি সার্টিফিকেট জোগাড় করে দেওয়ার নামে তার কাছ থেকে বছরখানেক আগে পনেরো হাজার টাকা নিয়েছিল দিলীপ। কিন্তু সার্টিফিকেট না দিয়ে তাকে ক্রমাগত ঘোরাচ্ছিল সে। এ দিন সে ব্যাপারেই একটা ‘হেস্তনেস্ত’ করতে সে গিয়েছিল দিলীপের বাড়িতে। সেখানেই কথা কাটাকাটির পাঁকে তাকে গুলি করে শঙ্কর। এমনই দাবি ওই তৃণমূল কর্মীর। পুলিশ জানায়, গুলি লাগার পরে ওই যুবক নিজের মোবাইল পোন থেকেই বাড়িতে খবরটা দেন। বাড়ির লোকই রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে হাসাপাতালে ভর্তি করেন।
শঙ্কার মাজদিয়া কলেজের ছাত্র। কিন্তু নিজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সক্রিয় কর্মী হওয়া সত্ত্বেও সার্টিফিকেটের জন্য সে-ই বা ‘বিরোধী নেতা’ দিলীপকে ‘ঘুষ’ দিতে গেল কেন? পুলিশ সুপার বলেন, “ঠিক সেই প্রশ্নটার উত্তরই আমরা খুঁজছি। শঙ্কর দিলীপ মণ্ডলকে আদৌ টাকা দিয়েছিলেন কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত চলছে। তবে ঘটনার পরেই দিলীপ পালিয়ে গিয়েছে।”
সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সুমিত দে অবশ্য এ ক্ষেত্রে দিলীপের পাশে দাঁড়াচ্ছেন না। তিনি বলেন, “ঘটনাটি নিন্দাজনক। দল এই ধরনের কাজ অনুমোদন করে না। কিন্তু প্রশ্ন হল আক্রান্ত ছেলেটি কেন দিলীপের বাড়িতে গিয়েছিল? আমরা চাই প্রকৃত সত্যটা সামনে আসুক।”
কৃষ্ণনগর-১ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি শৈলেন ঘোষ এ প্রসঙ্গে বলেন, “এ থেকে ফের প্রমাণিত সিপিএম-ই রাজ্যে সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে।” কিন্তু পনেরো হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে সার্টিফিকেট বের করা কী ঠিক? এর কোনও স্পষ্ট উত্তর মেলেনি। |