নয়াগ্রামে অভিযুক্ত তৃণমূল
স্মারকলিপি দিতে গিয়ে ‘আক্রান্ত’ ডিওয়াইএফ
বিডিও-কে উন্নয়ন-সংক্রান্ত স্মারকলিপি দিতে গিয়ে ব্লক অফিস চত্বরেই আক্রান্ত হলেন সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফ-এর কর্মী-সমর্থকেরা। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। বৃহস্পতিবার দুপুরে পশ্চিম মেদিনীপুরের নয়াগ্রামের ব্লক-সদর বালিগেড়িয়ার ঘটনা।
ডিওয়াইএফের অভিযোগ, এ দিন দুপুরে সংগঠনের নয়াগ্রাম জোনাল কমিটির উদ্যোগে বিডিকে ৬ দফা দাবিতে স্মারকলিপি পেশের কর্মসূচি নেওয়া হয়। ব্লক অফিস চত্বরে জড়ো হয়েছিলেন কয়েকশো কর্মী-সমর্থক। ডিওয়াইএফের নয়াগ্রাম জোনাল সম্পাদক বুধিয়া মাণ্ডি-র দাবি, “একশো দিনের কাজে বয়েক মজুরি দেওয়া, গরিব মানুষকে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মতো রেশনে দু’টাকা কেজি দরে চাল দেওয়া, পুনরায় এসএসসি পরীক্ষা নেওয়া-সহ নানা দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়ার জন্য সপ্তাহ খানেক আগেই লিখিত ভাবে বিডিও-র কাছে সময় চাওয়া হয়। তাঁর অনুমতি সাপেক্ষেই এ দিন বেলা ১২টায় স্মারকলিপি দিতে গিয়েছিলাম।” বুধিয়া জানান, বিডিও তখন পঞ্চায়েত সমিতির একটি বৈঠকে ‘ব্যস্ত’ ছিলেন। কিছুটা সময় পেয়ে সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অভাব-অভিযোগ নিয়ে মাইকে জনতার উদ্দেশে বক্তব্য রাখছিলেন। অভিযোগ, আচমকাই তৃণমূলের ব্লক সভাপতি উজ্জ্বল দত্তের নেতৃত্বে মোটর বাইকে চেপে আসা জনা পঞ্চাশেক তৃণমূল কর্মী লাঠিসোটা নিয়ে চড়াও হয়। ডিওয়াইএফ কর্মী-সমর্থকদের বেধড়ক মারধর করে। ডিওয়াইএফের পতাকা-ফেস্টুন ছিঁড়ে দেওয়া হয়, কয়েকটি মোটর বাইক ও সাইকেল ভাঙচুর করা হয়। কেড়ে নেওয়া হয় কয়েকজনের মোবাইল ফোন। ডিওয়াইএফ কর্মী-সমর্থকেরা ছুটে পালানোর চেষ্টা করেন। প্রায় পাঁচ কিমি দূর পর্যন্ত ধাওয়া করে তাঁদের পেটানো হয় বলে অভিযোগ। হামলায় কয়েকজন জখমও হন। বুধিয়ার দাবি, “তৃণমূলী হামলার আশঙ্কায় গুরুতর আহতদের স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানোর ঝুঁকি নেওয়া হয়নি। তাঁদের পার্শ্ববর্তী ওড়িশার হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”
নয়াগ্রামের বিডিও তাপস ভট্টাচার্যের অবশ্য দাবি, “বিনা অনুমতিতেই এ দিন আচমকা ব্লক অফিসের চৌহদ্দির মধ্যে কয়েকশো লোক জমায়েত করে মাইক বাজিয়ে বিক্ষোভ-সভা করে ডিওয়াইএফ। গোলমালের বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানিয়েছি।” বিষয়টি লিখিত ভাবে নয়াগ্রাম থানাকে জানিয়েও তদন্ত করতে বলেছেন বিডিও।
তৃণমূলের ব্লক সভাপতি উজ্জ্বল দত্তের পাল্টা অভিযোগ, “ডেপুটেশন দিতে আসার পথে ডিওয়াইএফের লোকেরা বালিগেড়িয়ার বরাকাটিতে এক তৃণমূল কর্মীকে মারধর করে। ওই ঘটনার জেরেই স্থানীয় জনতা ডিওয়াইএফের লোকজনকে তাড়া করেন। প্রকৃত ঘটনা চাপা দিতে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।” কেন স্মারকলিপি গ্রহণের দিনে ব্লক অফিসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়নি, সেই প্রশ্ন তুলেছেন নয়াগ্রামের প্রাক্তন বিধায়ক তথা সিপিএমের নয়াগ্রাম জোনাল কমিটির সদস্য ভূতনাথ সরেন। ভূতনাথবাবুর অভিযোগ, “নয়াগ্রামের বিডিও এদিন ইচ্ছাকৃতভাবে পুলিশ মোতায়েন না-করে শাসক-দলকে হামলা করার সুযোগ করে দিয়েছেন। বিডিও-র ভূমিকা দুর্ভাগ্যজনক।” ডিওয়াইএফের জেলা সম্পাদক দিলীপ সাউ বলেন, “জেলার বিভিন্ন ব্লকেই আমাদের স্মারকলিপি চলছে। সংশ্লিষ্ট বিডিও-র অনুমতি নিয়েই এদিন নয়াগ্রামে সংগঠনের কর্মী-সমর্থকেরা স্মারকলিপি দিতে গিয়েছিলেন।” ঘটনার প্রতিবাদে এদিন সন্ধ্যায় ডিওয়াইএফ-এর জেলা কমিটির উদ্যোগে মেদিনীপুর শহরে একটি ‘ধিক্কার-সভা’ করা হয়।
আগামী রবিবার বালিগেড়িয়ার উচ্চ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের পরিচালন কমিটির অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনের ধার্যদিন। লড়াইয়ের ময়দানে তৃণমূলপন্থী ও বামপন্থী প্রার্থীরা রয়েছেন। ওই নির্বাচনের প্রাক্কালে এলাকায় সিপিএম ও তৃণমূলের মধ্যে রেষারেষি বাড়ছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.