রাহুল দ্রাবিড়ের মতো কিংবদন্তির সঙ্গে তুলনা হোক, এটা তাঁর মোটেই পছন্দ নয়। কোনও দিন দ্রাবিড়ের জুতোয় পা গলাতে পারবেন, সেই আশাও করেন না। বরং চেতেশ্বর পূজারা তৈরি হচ্ছেন নতুন লক্ষ্য সামনে রেখে। জানিয়ে দিচ্ছেন, শুক্রবার নামবেন ডাবল সেঞ্চুরির খোঁজে।
সাড়ে ছ’ঘণ্টার ইনিংস খেলে এ দিন যখন সাংবাদিকদের সামনে এলেন, তখন প্রায় দাঁড়ানোর শক্তি নেই। দরদরিয়ে ঘাম ঝরছে। চেনা-পরিচিত সাংবাদিকরা ততক্ষণে জড়িয়ে ধরছেন নায়ককে। তার মধ্যেই পূজারাকে জিজ্ঞেস করা হল, দ্রাবিড়ের পরিবর্ত হিসেবে তিনি নিজেকে ভাবছেন কি না? শোনা মাত্র রীতিমতো আঁতকে উঠলেন। “পাগল নাকি? ক্রিকেটের দু’টো ফর্ম্যাটেই রাহুলের দশ হাজারের উপর রান আছে। আমি সেখানে কোথায়? মনে হয় না, ওর মতো কিংবদন্তির জায়গা আমি কোনও দিন নিতে পারব বলে। ওর কাছাকাছিও পৌঁছতে পারব না। বরং আমার যেটা স্বাভাবিক খেলা, সেটাই খেলব,” এক নিঃশ্বাসে বলছিলেন পূজারা। তার পর একটু দম নিয়ে সংযোজন, “আজ চাপে আছি বলে কখনও মনে হয়নি। আসলে প্রস্তুতিটা ভাল ছিল। আমার স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। চেয়েছিলাম জীবনের প্রথম টেস্টেই সেঞ্চুরি করতে। সেটা অল্পের জন্য হয়নি। কিন্তু তার জন্য আর কোনও দুঃখ নেই। বরং কাল যখন নামব, ডাবল সেঞ্চুরি আমার টার্গেট থাকবে। চারশোও তুলতে হবে।”
যতটা সহজে পূজারা কথাগুলো বলছিলেন, ক্রিকেটজীবন তাঁর কাছে ততটা সহজও হয়নি। চোটের কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে থাকতে হয়েছে এক বছর। “জীবনে কিন্তু খারাপ সময়েরও প্রয়োজন আছে। তাতে মানসিক ভাবে আরও শক্তপোক্ত হওয়া যায়। সাফল্যের খিদেটাও তত বাড়ে। এক বার নয়, দু’বার আমাকে চোট ভুগিয়েছে। ক্রিকেটের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না এক বছরের উপর। ওই সময়টা খুব খারাপ কেটেছে আমার। আমার পরিবারের। কিন্তু মন বলত, আমি একদিন ঠিক কামব্যাক করব,” শুনলে মনে হবে চব্বিশের তরুণ কোথায়? এ তো জীবনের যাবতীয় ঘাত-প্রতিঘাত সামলানো পরিণত এক ক্রিকেটার।
জীবনের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি উৎসর্গ করছেন বাবাকে। বলছেন, “ছোট থেকেই দেখছি, উনি কী ভাবে দিনরাত খাটছেন আমার জন্য। বাবার হার্টে অস্ত্রোপোচার হয়েছে। কিন্তু উনি এখনও আমাকে কোচিং করান। বাবার সঙ্গে মা-কেও আমি সেঞ্চুরি উৎসর্গ করছি।” কিন্তু কোন পজিশন তাঁর পছন্দ? তিন না পাঁচ? সৌরাষ্ট্রের যুবকের সাফ কথা, কোনওটাতেই তাঁর আপত্তি নেই। “সৌরাষ্ট্রের হয়ে আমি তিনেই নামতাম। এমনকী ওপেনও করেছি। তাই ওয়ান ডাউন নামা আমার কাছে নতুন নয়।” |