|
|
|
|
খড়্গপুরে বোর্ড মিটিং ২৭শে |
‘ম্যাজিক ফিগার’ জোগাড়ে ব্যস্ততা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
অনাস্থা প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে আগামী ২৭ অগস্ট বোর্ড মিটিং ডাকা হল খড়্গপুর পুরসভায়। ওই দিন অনাস্থা প্রস্তাবের উপর ভোটাভুটির সম্ভাবনা রয়েছে। এই মিটিং ঘিরে ইতিমধ্যেই পারদ চড়তে শুরু করেছে স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে। অনাস্থা ভোটে কংগ্রেস জিতলে বোর্ড হাতছাড়া হতে পারে ‘শাসক’ তৃণমূলের।
কংগ্রেসের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে কবে মিটিং ডাকা হবে, তা নিয়ে জল্পনা চলছিল খড়্গপুরে। দ্রুত কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারছিল না তৃণমূলও। বুধবার রাতে তৃণমূলের শহর কার্যালয়ে এক বৈঠক হয়। বৈঠকে দলের ১৫ জন কাউন্সিলরই উপস্থিত ছিলেন। শুরুতে কাউন্সিলরদের ‘ক্ষোভ- অসন্তোষ’ নিয়ে আলোচনা হলেও পরে সিদ্ধান্ত হয়, ২৭ অগস্ট বোর্ড মিটিং হবে। খড়্গপুরের পুরপ্রধান জহরলাল পাল বলেন, “আমরা সকলে একসঙ্গেই আছি।” পুরপ্রধানের এই দাবি ঘিরে অবশ্য জল্পনা উস্কে দিয়েছেন প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা কংগ্রেস কাউন্সিলর রবিশঙ্কর পাণ্ডে। তাঁর মন্তব্য, “ওরা (তৃণমূল) একসঙ্গে আছে কি না, তা ওই দিনই দেখা যাবে। আমাদের তো হারানোর কিছু নেই!”
তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে গত ১৪ অগস্ট অনাস্থা আনে কংগ্রেস। এর ফলে বোর্ডের ভবিষ্যৎ নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইতিমধ্যে দলীয় কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক করেছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। গত রবিবার ওই বৈঠক হয়। উপ-পুরপ্রধান তুষার চৌধুরীর বাড়িতে ওই বৈঠকে দলের ১৫ জন কাউন্সিলরের মধ্যে পুরপ্রধান, উপ-পুরপ্রধান সহ ১৩ জন বৈঠকে ছিলেন। ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুরেশ যাদব ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এম শিবশঙ্কর রাও সেখানে আসতে পারেননি। পারিবারিক ও ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত ছিলেন।
বৈঠকে ঠিক হয়েছিল, মঙ্গলবার রাতে শহর তৃণমূল কার্যালয়ে ফের দলীয় কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক হবে। তবে ওই দিন পুরসভারই এক কাজে পুরপ্রধান কলকাতায় গিয়েছিলেন। সন্ধ্যের মধ্যে ফিরতে পারেননি। ফলে বৈঠক করা সম্ভব হয়নি। বুধবার রাতে বৈঠকটি হয়। ছিলেন শহর তৃণমূল সভাপতি দেবাশিস চৌধুরী। দলীয় সূত্রে খবর, বৈঠকের শুরুতে শহর তৃণমূল নেতৃত্ব জানান, “ঘরের ঝগড়া ঘরেই মিটিয়ে নিতে হবে। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়াই করতে হবে।” এই ‘ঐক্যবদ্ধ’ চেহারা তৃণমূল তুলে ধরতে পারে কি না, সেটাই দেখার। খড়্গপুরে ৩৫ জন কাউন্সিলর রয়েছেন। অনাস্থা ভোটে জিততে গেলে কমপক্ষে ১৮ জন কাউন্সিলরের সমর্থন প্রয়োজন। ৩৫ জন কাউন্সিলরের মধ্যে তৃণমূলের ১৫ জন। কংগ্রেসের ১৪ জন। বামফ্রন্টের ৪ জন। বাকি ১ জন নির্দল ও ১ জন বিজেপি’র কাউন্সিলর রয়েছেন। নির্দল কাউন্সিলর সত্যদেও শর্মা কংগ্রেসের পাশে রয়েছেন। অনাস্থা প্রস্তাবে সইও করেছেন। ফ্রন্টের নেতৃত্ব প্রাথমিক ভাবে ভোটাভুটি যোগ না- দেওয়ারই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদি শেষ পর্যন্ত তাদের এই অবস্থান থাকে তাহলে অনাস্থা ভোটে জিততে গেলে কমপক্ষে ১৬ জন কাউন্সিলরের সমর্থন প্রয়োজন।
কংগ্রেস-তৃণমূল, দু’দলের কারও কাছেই এই ‘ম্যাজিক ফিগার’ নেই। কী ভাবে সমর্থন জোগাড় করা হবে, তা নিয়েই এখন আলোচনা ও অঙ্ক কষা চলছে যুযুধান দুই শিবিরে। আপাতত, সকলেরই নজর ২৭ অগস্ট, সোমবারের দিকে। |
|
|
|
|
|