জায়গাটা এক। শুধু চার দিনের ব্যবধানে বদলে গিয়েছে চরিত্রেরা।
রাস্তা উজিয়ে হুড়মুড়িয়ে পারাপারের সময়ে মঙ্গলবার ট্রাকের ধাক্কায় মারা গিয়েছিল একটি বাঁদর। সঙ্গীর থেঁতলে যাওয়া দেহটা ঘিরে প্রায় ঘণ্টা দেড়েক রাস্তায় বসেছিল তারা। বেপরোয়া ট্রাক চালকেরা একটু সংযত হোন না, মৌনী বাঁদরকুল সে দিন যেন এটাই বলতে চেয়েছিল। ব্যস্ত জাতীয় সড়কে থমকে গিয়েছিল যান চলাচল। শেষতক বনকর্মীরা পটকা ফাটিয়ে তাদের পুরনো ঠিকানা, জঙ্গলে পাঠালে সচল হয় সে রাস্তা।
৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে সেই তাসাটি চা -বাগানের কাছেই বৃহস্পতিবার অবরোধে বসলেন বাগান শ্রমিকেরা। |
ফালাকাটায় জাতীয় সড়কে অবরোধ। বৃহস্পতিবার। ছবি : রাজকুমার মোদক |
তাঁদের ক্ষোভ, বড়ই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে হস্তিকুল। আশপাশের জঙ্গল থেকে ক্রমান্বয়ে হাতির হানায় চা বাগানের কুলি লাইন তছনছ হয়ে যাচ্ছে। অথচ নির্বিকার বন দফতর। প্রশাসনেরও কোনও হেলদোল নেই। প্রায় ৪ ঘণ্টা অবরোধে এ দিনও থমকে গিয়েছিল কয়েকশো বাস -ট্রাক। দুর্ভোগে যাত্রীরা। শেষ পর্যন্ত ফালাকাটার বিডিও সুশান্ত মণ্ডল চা শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসে আশ্বাস দেন, “ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে খুব তাড়াতাড়ি ত্রিপল দেওয়া হবে।” অবস্থান ওঠে অবশেষে। তবে, বন দফতর থেকে স্পষ্টই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বাগান শ্রমিকদের আলাদা করে ক্ষতি পূরণ দেওয়ার নিয়ম নেই। জলপাইগুড়ির ডিএফও বিদ্যুৎ সরকার বলেন, “হাতির হানায় চা বাগান শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নিয়ম নেই। তবে বাগানে হাতি ঠেকানোর চেষ্টা করছি। ইতিমধ্যেই নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।”
সপ্তাহখানেক ধরে দলগাঁ জঙ্গল থেকে একটি দাঁতাল -সহ গোটা আটেক হাতি প্রায়ই আশপাশের এলাকায় তাণ্ডব চালাচ্ছে। জঙ্গল থেকে বেরিয়ে কুলি লাইন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তারা। রাতে নিয়মিত হামলা করছে শ্রমিকদের ঘর -বাড়িতে। রীতিমতো লুঠ করছে চাল, নুন, হাড়িয়া। তাসাটি বাগানে ইতিমধ্যেই গোটা পঞ্চাশ ঘর ভেঙেছে তারা। সে ব্যাপারে হুঁশ নেই বাগান কিংবা বন দফতরের। তারই প্রতিবাদে এ দিন তাদের রাস্তা -রোকো। |