|
|
|
|
আদালতের নির্দেশ |
২৬শে হাওড়ায় নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ প্রাথমিকে |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
হাইকোর্টের নির্দেশে আগামী ২৬ অগস্ট হাওড়া জেলার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা বন্ধ হয়ে গেল।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি প্রণব চট্টোপাধ্যায় ও বিচারপতি তরুণ দাসের ডিভিশন বেঞ্চ সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে বলে, “হাওড়া জেলায় আপাতত পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। তবে, মামলা চলবে। যে সমস্ত বেনিয়ম রয়েছে, তা সংশোধন করার পথ পাওয়া যায় কিনা, তা দেখতে হবে।” আগামী ৬ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে। আজ, শুক্রবার হাইকোর্টের ওই ডিভিশন বেঞ্চেই মালদহ জেলার নিয়োগ সংক্রান্ত প্যানেল বাতিল নিয়ে মামলার শুনানি হওয়ার কথা।
২০০৯ সালে বাম সরকার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। লিখিত পরীক্ষা ও সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে হাওড়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ ‘যোগ্য প্রার্থী’দের তালিকা তৈরি করে। কিন্তু, নিয়োগ-প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগেই সরকার বদল হয়। এ বছর ২১ জুন ‘বেনিয়ম’-এর অভিযোগ তুলে রাজ্য স্কুলশিক্ষা দফতর মালদহ, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা ও নদিয়া চার জেলার প্যানেল খারিজ করে ২৬ আগস্ট নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
এ দিন শুনানি চলাকালীন কয়েক জন আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্য সরকার প্যানেল খারিজ করার কিছু বেনিয়মের কথা উল্লেখ করেছে। কিন্তু, বেনিয়ম আর বেআইনি কাজ এক জিনিস নয়। যদি কোথাও কিছু বেনিয়ম থাকে, তা সংশোধন করে নেওয়া যায়। তা না করে হাজার হাজার চাকুরি প্রার্থীকে চাকরি পাওয়ার মুখে বিড়ম্বনায় ফেলার অর্থ হয় না।” আরও কয়েক জন আবেদনকারীর পক্ষে প্রাক্তন আইনমন্ত্রী তথা আইনজীবী রবিলাল মৈত্রের দাবি, “সরকার বেআইনি ভাবে এই প্যানেল খারিজ করেছে।”
প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের পক্ষে আইনজীবী শক্তিনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, “নতুন সরকার এই প্যানেল তৈরির ক্ষেত্রে অনেক বেনিয়ম দেখতে পায়। তাই যোগ্য প্রার্থীরাই যাতে শিক্ষক পদে নিযুক্ত হওয়ার সুযোগ পান, তা নিশ্চিত করতে ফের পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। আগের আবেদনকারীরা সকলেই এই পরীক্ষায় বসার সুযোগ পাবেন।” সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে বিচারপতি অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ শোনান।
২০০৯-এ তৎকালীন সরকার যে বিজ্ঞাপন দেয়, তাতে হাওড়ায় ২৯ হাজার প্রার্থী আবেদন করেছিলেন। ঝাড়াই-বাছাই করে ২০১০-এর জুনে প্রায় ১৫ হাজার প্রার্থীকে লিখিত পরীক্ষায় ডাকা হয়। পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে সাড়ে ৭ হাজার প্রার্থীকে ডাকা হয় সাক্ষাৎকারে। সাড়ে ৭ হাজার প্রার্থীর লিখিত পরীক্ষা হয়ে যাওয়ার পরেও ফের কয়েক জন প্রার্থী কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন। তাঁদের আর্জি ছিল, লিখিত পরীক্ষা যথেষ্ট ভাল হলেও তাঁদের কেন সাক্ষাৎকারে ডাকা হল না, তা খতিয়ে দেখা হোক। আদালত নির্দেশ দেয়, সব উত্তরপত্র ফের মূল্যায়ন করা হোক। সংসদ ফের লিখিত পরীক্ষার সব উত্তরপত্র মূল্যায়ন করে। তার ভিত্তিতে ৬৫ জনকে নতুন করে সাক্ষাৎকারে ডাকা হয়। কিন্তু চূড়ান্ত প্যানেল তৈরির আগে ২০১১-র বিধানসভা ভোটের দিন ঘোষণা করা হয়।
নতুন সরকার ক্ষমতায় এসে চার জেলার ক্ষেত্রেই নতুন পরীক্ষার দিন ঘোষণা করে। সেই মতোই ২৬ অগস্ট পরীক্ষার জন্য উত্তর ২৪ পরগনায় অ্যাডমিট কার্ড বিলির কাজ চলছে। পরীক্ষার আগে পর্যন্ত বারাসতে জেলা প্রাথমিক স্কুলশিক্ষা দফতর থেকে অ্যাডমিট পাওয়া যাবে বলে জানান প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান মীনা ঘোষ। হাওড়ার ক্ষেত্রে আদালতের রায়ের পরে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে অনিশ্চয়তা রয়েই গেল। |
|
|
|
|
|