এমপি বিড়লার সম্পত্তির রাশ প্রশাসকদের হাতেই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
আপাতত লোঢাদের হাতে নিয়ন্ত্রণ আর থাকছে না। এমপি বিড়লা গ্রুপের স্থাবর ও অস্থাবর সমস্ত সম্পত্তি পরিচালনা করার জন্য প্রশাসক নিযুক্ত করল কলকাতা হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জয়নারায়ণ পটেল এবং বিচারপতি সৌমিত্র পালের ডিভিশন বেঞ্চ ওই সম্পত্তি পরিচালনার জন্য সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি সি কে ঠক্করের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটি নিয়োগ করেছে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন মহেন্দ্র শর্মা এবং অমলকুমার চট্টোপাধ্যায়। প্রিয়ংবদা বিড়লার মৃত্যুর পর থেকে ওই সম্পত্তির পরিচালনার নিয়ন্ত্রণ প্রথমে ছিল আর এস লোঢার হাতে। পরে তাঁর ছোট ছেলে হর্ষবর্ধন লোঢা সেই দায়িত্ব নেন।
প্রিয়ংবদা বিড়লার মৃত্যুর পরে তাঁর সমস্ত সম্পত্তির প্রোবেট চেয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন আর এস লোঢা। তিনি একটি দলিল জমা দিয়ে বলেন, “প্রিয়ংবদা বিড়লার সমস্ত সম্পত্তির উত্তরাধিকারী আমিই।” আর এস লোঢা এই আবেদন জানানোর পরেই বিড়লা বনাম লোঢা আইনি যুদ্ধ শুরু হয়। আইনি যুদ্ধের মাঝপথে, মূল প্রোবেট মামলা শুরু হওয়ার আগেই বিদেশে মৃত্যু হয় আর এস লোঢার। তখন হর্ষবর্ধন লোঢা ওই সম্পত্তির পরিচালনার দায়িত্ব নেন। বিড়লা গোষ্ঠী তখন হাইকোর্টের কাছে বলে, যিনি প্রোবেট মামলা করেছিলেন, তিনি মৃত। তাঁর ছেলে সম্পত্তি পরিচালনার ভার গ্রহণ করতে পারেন না। প্রশাসক নিয়োগের জন্য আদালতে আবেদন জানান বিড়লারা। বিচারপতি কল্যাণজ্যোতি সেনগুপ্ত তিন জন প্রশাসক নিয়োগ করেন। হর্ষবর্ধন লোঢা সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করেন।
এই আপিল মামলা চলার সময় বিড়লা ও লোঢা দু’পক্ষই প্রশাসক নিয়োগে তাদের কোনও আপত্তি নেই বলে জানিয়ে দেয়। এর পরে প্রশাসক নিয়োগ নিয়ে কোনও বিরোধিতার জায়গা না-থাকলেও প্রশাসক কতটা ক্ষমতার অধিকারী হবেন, তা নিয়ে বিরোধ বাধে। দীর্ঘ শুনানির পরে, বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি জে এন পটেল ও বিচারপতি সৌমিত্র পালের ডিভিশন বেঞ্চ প্রশাসকদের ক্ষমতা নির্ধারণ করে রায় দিয়েছে। রায়ে বলা হয়েছে, প্রিয়ংবদা বিড়লার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি, শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড ও অন্যান্য সম্পত্তি সব কিছুই নিয়ন্ত্রণ করবেন প্রশাসকেরা।
হর্ষবর্ধন লোঢার সলিসিটর ফার্মের পক্ষে আইনজীবী দেবাঞ্জন মণ্ডল দাবি করেন, “এই রায় অনুসারে বিড়লা কর্পোরেশন বা অন্যান্য কোম্পানি নিয়ন্ত্রণে আমার মক্কেলের ভূমিকাই বজায় থাকবে। শুধু প্রিয়ংবদা বিড়লার সম্পত্তির নিয়ন্ত্রণ পাবেন প্রশাসকেরা।” কিন্তু বিড়লা গোষ্ঠীর সলিসিটর ফার্ম খৈতান অ্যান্ড কোম্পানির পক্ষে আইনজীবী নন্দু খৈতান বলেন, “প্রিয়ংবদা বিড়লার সমস্ত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তিই পরিচালনা করবেন প্রশাসকেরা। এর অর্থ, হর্ষবর্ধন লোঢার ক্ষমতা খর্ব হল।” |