নিউটাউন অর্থতালুকে আসতে আগ্রহী ব্যাঙ্ক, শেয়ার বাজার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
মহারাষ্ট্রের বান্দ্রা কুরলার পরে পশ্চিমবঙ্গের রাজারহাট নিউটাউন। কলকাতার উপকণ্ঠে দেশের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক অর্থতালুক (ফিন্যান্সিয়াল হাব) গড়া নিয়ে আরও এক ধাপ এগোল কেন্দ্র।
রাজ্যের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে রাজারহাট নিউটাউনে যে আন্তর্জাতিক অর্থতালুক গড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেই পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করতে দিল্লিতে দেশের প্রথম সারির সরকারি-বেসরকারি ব্যাঙ্ক, বিমা, শেয়ার বাজার ও বাণিজ্যিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে আজ বৈঠকে বসেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও হিডকোর সিএমডি দেবাশিস সেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ১৯টি ব্যাঙ্ক-সহ বিভিন্ন আর্থিক সংস্থার মোট ৫৬ জন প্রতিনিধি।
বৈঠকের পরে ফিরহাদ হাকিম বলেন, “আজ ইলাহাবাদ, স্টেট ব্যাঙ্ক, ইউনাইটেড ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিরা ওই অর্থতালুকে জমি নেওয়ার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এঁরা ছাড়াও বেশ কিছু বেসরকারি ব্যাঙ্কও আশ্বাস দিয়েছে, তারা তাদের শীর্ষ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে অবিলম্বে বিষয়টি চূড়ান্ত করবে।” ওই এলাকায় নিজেদের দফতর সরিয়ে নিয়ে যেতে আগ্রহ দেখিয়েছেন স্টক এক্সচেঞ্জ বা শেয়ার বাজার কর্তৃপক্ষও।
প্রাথমিক পর্যায়ে ২৫ একর জমিতে ওই অর্থতালুক গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। পরে চাহিদা অনুযায়ী এর এলাকা বাড়িয়ে ৫০ থেকে ৭০ একর করার পরিকল্পনা রয়েছে। রাজ্য সরকার আশা করছে, আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে প্রথম পর্যায়ের কাজ শুরু করা সম্ভব হবে। ওই অর্থতালুকের বিপণনে মুম্বই পাড়ি দেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে ফিরহাদের। রাজ্য সরকার সূত্রে বলা হয়েছে, কেন্দ্রের ‘পুবে তাকাও’ নীতির পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতায় ওই আন্তর্জাতিক মানের অর্থতালুক গঠনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এর ফলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে সক্ষম হবে ভারত। রাজ্য মনে করছে, এতে কলকাতা-সহ গোটা পূর্ব ভারতের সামগ্রিক আর্থিক উন্নতি হবে। কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে। রাজস্ব খাতে রাজ্য সরকারের আয়ও বাড়বে।
রাজ্যের অর্থনীতি চাঙ্গা করা ছাড়াও এই হাব গঠনের অন্য একটি উদ্দেশ্যও রয়েছে। কলকাতা শহরের উপরে চাপ কমাতে চাইছে কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রক। তাই অর্থতালুক গঠনের ক্ষেত্রে তারা নিকাশি থেকে জল সরবরাহের মতো যাবতীয় বুনিয়াদী পরিকাঠামোয় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে। মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, এই বুনিয়াদী পরিকাঠামো জেএনএনইউআরএম প্রকল্পের মাধ্যমে গড়ে তোলা হবে।
প্রাথমিক ভাবে কলকাতা ছাড়াও ভারতের সাতটি শহরে এই ধরনের পরিবেশবান্ধব উপনগরী গড়ার জন্য ‘আরবান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ইন স্যাটেলাইট টাউনস’ নামে একটি প্রকল্প চালু করেছে মন্ত্রক। আজ বৈঠকে উপস্থিত নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী সৌগত রায় বলেন, “কলকাতার মতো দেশের বড় শহরগুলিকে চাপ মুক্ত করার পরিকল্পনা নিয়েছে নগরোন্নয়ন মন্ত্রক। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ীই পরিবেশবান্ধব নিউটাউনে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ও আর্থিক সংস্থার দফতরগুলিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য আজকের বৈঠকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।” |