নিজস্ব সংবাদদাতা • নলহাটি |
বিল ‘মেটানো’র পরেও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার নোটিস এসেছে গ্রাহকদের কাছে। নোটিস পেয়ে স্বভাবতই ক্ষুব্ধ নলহাটি থানার ভদ্রপুর ও আকালীপুর গ্রামের গ্রাহকেরা। কেন এমন হল তার জবাব চেয়ে বৃহস্পতিবার রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির
নলহাটি গ্রাহক পরিষেবাকেন্দ্রে বিক্ষোভ দেখালেন বেশ কিছু গ্রাহক। এ ব্যাপারে তাঁরা আর্থিক তছরুপের অভিযোগ এনেছেন রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির বিরুদ্ধে। এ দিন প্রায় শ’খানেক গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের ম্যানেজারের কাছে পাঠানো বিল নিয়ে দেখা করেন। তাঁরা দাবি জানান, দোষীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং নোটিস প্রত্যাহার ও বিল পরিশোধ করা নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে তার সুষ্ঠু সমাধান করতে হবে।
আকালীপুর গ্রামের নাদু ভট্টাচার্য, ভদ্রপুরের নিখিলকুমার পাল, অরূপ পাল, অরুণাভ চট্টোপাধ্যায়দের দাবি, “২০১১ সালের জানুয়ারি মাস থেকে দু’টি গ্রামের গ্রাহকেরা বিদ্যুৎ বিল মিটিয়ে আসছেন। |
গ্রাহক পরিষেবাকেন্দ্রে বিক্ষোভ। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম। |
কিন্তু ১৭ অগস্ট নলহাটি গ্রাহক পরিষেবাকেন্দ্র থেকে প্রায় দেড়শো গ্রাহকের কাছে বকেয়া বিল না মেটানো হলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার নোটিস পাঠানো হয়। পরের দিন বিদ্যুৎ দফতরের লোকজন তিন-চার জনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিতে আসেন। বাসিন্দাদের বাধায় তাঁরা পারেননি।” এরই প্রতিবাদে সরব হয়েছেন গ্রাহকেরা। পরিষেবা কেন্দ্রের ম্যানেজার সুপ্রিয় দে বলেন, “তিন মাস হল এসেছি। দেখেছি ভদ্রপুর ও আকালীপুরের গ্রাহকদের বিল ‘পরিশোধে’র ক্ষেত্রে নিযুক্ত এজেন্সি কোনও রিপোর্ট জমা দেননি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে এনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হবে।” তাঁর দাবি, “গ্রাহকেরা যে বিল জমা দিয়েছেন তার ‘রিসিভ’ কপি নেই। তাই গ্রাহকেরা যেমন ভুল করেছেন তেমনি কেন এতদিন গ্রাহকদের কাছে বিল পরিশোধের নোটিস পৌঁছয়নি সেটাও দেখা হবে।”
সুপ্রিয়বাবু জানান, সম্প্রতি এজেন্সি পরিবর্তন করে দেওয়ার পরে বিল না মেটানোর জন্য ওই দুই গ্রামে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পরে বিষয়টি নজরে আসে। তাঁর আশ্বাস, “আগের এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গ্রাহকদের দাবি মেনে সাময়িক বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার অভিযান বন্ধ রাখা হবে। তবে বকেয়ার ক্ষেত্রে গ্রাহকদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।” এ প্রসঙ্গে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির বীরভূমের ম্যানেজার মানিক পাল বলেন, “টাকা সংগ্রহের জন্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির তরফ থেকে কোনও এজেন্সিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। গ্রাহকেরা ভুল করে থাকলে বকেয়া বিল তাঁদের ‘পরিশোধ’ করতে হবে। তবুও ঠিক কী হয়েছে খোঁজ নিয়ে দেখব।”
এই অবস্থায় সমস্যায় পড়েছেন গ্রাহকেরা। তাঁদের প্রশ্ন, এই আর্থিক তছরুপের দায় তাঁরা নেবেন কেন? |