|
|
|
|
সুবিচারের আশায় যতনের পরিবার |
পুলিশের গাড়ি চাপায় মৃত্যু, তদন্তে সিআইডি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
যতন-কাণ্ডের তদন্ত শুরু করল সিআইডি। বুধবার সিআইডি’র একটি দল চন্দ্রকোনা থানার কাশকুলিতে গিয়ে মৃত যতন মণ্ডলের পরিজনদের সঙ্গে কথা বলেন। ঠিক কী ভাবে ঘটনাটি ঘটেছিল, তা শোনেন। তদন্তকারী অফিসার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সবেমাত্র তদন্ত শুরু হয়েছে। তাই এখনই কিছু বলব না।” সিআইডি ঘটনার তদন্ত শুরু করায় সুবিচারের আশায় দিন গুনতে শুরু করেছে যতনের পরিবারও।
২০১০ সালের ৮ এপ্রিল দুর্ঘটনায় মারা যান বছর তিরিশেকের যতন মণ্ডল। বিকেলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাজার করতে ক্ষীরপাইয়ে গিয়েছিলেন তিনি। রাতে সাইকেলে ফেরার সময় একটি পুলিশ জিপ তাঁকে পিষে দেয় বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃতের পরিবারের বক্তব্য, তোলা আদায়ের জন্য একটি লরির পিছনে যাচ্ছিল পুলিশের জিপটি। উল্টো দিক থেকে আসছিলেন যতন। জিপের চাকার তলায় চাপা পড়েন। ঘটনাস্থলের থেকে হাসপাতাল খুব একটা দূরে নয়। তবু যতনকে হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে গাড়িতে তুলে নেন পুলিশকর্মীরা। ফের লরির পিছু ধাওয়া করা হয়। পরে যতনের দেহটি থানার পিছনের দিকে লুকিয়ে রাখা হয় বলে অভিযোগ।
সুবিচার পেতে মেদিনীপুর আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন যতনের স্ত্রী নমিতা। পরে যান কলকাতা হাইকোর্টে। হাইকোর্টই সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেয়। মাস তিনেক আগে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত জেলা পুলিশের হাত থেকে নিয়ে এই ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব সিআইডিকে দেন। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এসে পৌঁছনোর পর সপ্তাহ খানেক আগে ঘটনার তদন্ত শুরু করে সিআইডি। জেলা পুলিশের অবশ্য বক্তব্য, লরির ধাক্কায় ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
স্বামীকে হারিয়ে এক ছেলে পীযূষকে নিয়ে এখন দিন কাটছে নমিতার। পীযূষ তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। নমিতা বলেন,“ পুলিশই আমার স্বামীকে হত্যা করেছে। তাদের কাছ থেকে বিচার মেলা অসম্ভব। তাই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলাম।” এ দিন দুপুরে মণ্ডল পরিবারে আসে সিআইডি’র দল। নমিতাদেবী-সহ যতনের পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে কথা বলেন তদন্তকারী অফিসারেরা। মণ্ডল পরিবারের আশা, তদন্তে কোনও প্রভাব না থাকলে সত্য সামনে আসবে। দোষীরাও শাস্তি পাবে। মৃতের দাদা ক্ষুদিরাম মণ্ডল বলেন, “আমাদের পরিচিত দু’জন ওই দিন রাতে রাস্তা দিয়ে আসছিলেন। তাঁদের কাছ থেকেই আমরা দুর্ঘটনার খবর জানতে পারি। পরে থানায় গেলে আমাদের বলা হয়েছিল, জিপ এখনও থানায় ফেরেনি। দুর্ঘটনারও কোনও খবর নেই।” ক্ষুদিরামবাবুরা ৩ ভাই। যতন ছোট। মেজো ভাইয়ের নাম স্বপন। চাষবাস করেই এঁদের সংসার চলে। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা- মা’ও রয়েছেন।
সুবিচার পেতে এখন সিআইডি তদন্তের উপরই আস্থা রাখছে মণ্ডল পরিবার। |
|
|
|
|
|