দক্ষিণ ২৪ পরগনার মালঞ্চ থেকে কলকাতার রাজাবাজার আসার পথে সিটিসি-র একটি বাস খালে পড়ে যাওয়ায় ন’বছরের একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আহত হন অন্তত ৪৫ জন যাত্রী। বুধবার সন্ধ্যায় তিলজলা থানা এলাকায় বাসন্তী রোডের ধারে চৌবাগা মোড়ের কাছে ওই দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, আহতদের মধ্যে কয়েকটি শিশু এবং পাঁচ জন মহিলাও আছেন। আহতদের ইএম বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে এবং ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়েছে। ওই বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রের খবর, শিশুটিকে মৃত অবস্থাতেই সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। বাসটির চালক ও কন্ডাক্টরের খোঁজ মেলেনি। দুর্ঘটনার জেরে রাত পর্যন্ত বাসন্তী রোডে তীব্র যানজট হয়। বেশ কিছু ক্ষণ রাস্তার দু’দিকেই যান চলাচল বন্ধ ছিল। |
স্থানীয় সূত্রের খবর, সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ বাসটি চৌবাগা মোড়ের কাছে আসে। ঝিরঝির করে বৃষ্টি পড়ছিল। রাস্তার বাঁ দিক ধরে যেতে যেতে হঠাৎই বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারায় এবং রাস্তার ডান দিকে সরে গিয়ে ঘুষিঘাটা খালে মুখ থুবড়ে পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দারাই প্রথমে উদ্ধারকাজে হাত লাগান। বাসের জানলার কাচ ভেঙে যাত্রীদের টেনে বার করতে থাকেন। আহতদের প্রথমে রাস্তার ধারে একটি মাঠে শুইয়ে রাখা হয়। স্থানীয় এক চিকিৎসক তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। তিলজলা থানার পুলিশ এবং দমকলকর্মীরাও দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান।
প্রসাদ বৈদ্য নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী যুবক বলেন, “বাসটি বেশ জোরেই যাচ্ছিল। হঠাৎ বিকট আওয়াজ। দেখি, বাস খালে নেমে যাচ্ছে। তার পরেই যাত্রীদের আর্তনাদ শুনতে পাই।” দমকল ও পুলিশের অনুমান, বাসের কোনও যন্ত্রাংশ ভেঙে যাওয়ায় চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। বাসটি বেশ লজ্ঝড়ে।
সন্ধ্যায় দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, পুলিশ ও দমকল জেনারেটরের সাহায্যে বড় আলো জ্বালিয়ে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। উদ্ধারকাজের তদারক করছেন এলাকার বিধায়ক ও দমকলমন্ত্রী জাভেদ খান। তিনি বলেন, “বাসে কম যাত্রী থাকায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেনি। বাসের কোনও ত্রুটির কারণে যদি ওই দুর্ঘটনা ঘটে থাকে, বিধি মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” রাতেই দুর্ঘটনাস্থলে যান পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র। তিনি বলেন, “কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল, সিটিসি-র ম্যানেজিং ডিরেক্টরকে তদন্ত করে দেখতে বলা হয়েছে। শুক্রবারের মধ্যে তাঁর রিপোর্ট দেওয়ার কথা।” দমকলের তিনটি ক্রেন রাতেই খাল থেকে বাসটিকে তুলে আনে।
|
